কবরে তিনটি প্রশ্ন যেভাবে করা হবে। (সূফিতত্ব)
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তোমরা কি মনে করছো আমি পরীক্ষা না করেই তোমাদেরকে ছেড়ে দিব।”
হযরত রাসুল পাক (সাঃ) ফরমানঃ “প্রত্যেক মানুষকে কবরে ৩টি প্রশ্ন করা হবে, যে এই ৩টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে, তাকে নিয়ে যাওয়া হবে জান্নাতে আর যে এই ৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না তাকে নেওয়া হবে জাহান্নামে।”
প্রশ্ন তিনটি হলো:
১/ তোমার রব কে?
২/ তোমার দ্বীন বা ধর্ম কি?
৩/ তোমার রাসূল কে?
কোরআন ও হাদিসের ভাষায়, এখানে কোন এবাদতের কথা উল্লেখ্য নাই, বলা হবে না তুমি কত রাকাত নামাজ পড়েছ, বা কত ছোয়াব নিয়ে এসেছ, প্রশ্ন জাগে তাহলে মানুষ এত এবাদত করে কেন?
উল্লেখ্য, আল্লাহ মানুষকে দুনিয়াতে পাঠিয়ে বলে দিলেন, যাও তোমাকে আবার আমার কাছেই ফিরিয়ে আনবো, দুনিয়াতে তুমি রিজিকের অন্মেষন কর, আমার সালাত কায়েম কর, জাকাত আদায় কর। নিশ্চয়ই আমার কাছে ফিরে আসার আগে আমি তোমার পরীক্ষা নিব। এই পরীক্ষাই হলো ৩টি প্রশ্নের উত্তর।
হাদিস শরিফে হযরত রাসুল সাঃ ফরমানঃ “শরিয়ত আমার বাক্য, তরিকত আমার কাজ, হকিকত আমার অবস্হা এবং মারেফাত আমার নিগূঢ় রহস্য।”
যে এই চারটির একটি বাদ দিবে, সে আমার উম্মতের মধ্যে গণ্য নয়। মারেফাতের এই নিগঢ় রহস্য বলতে গিয়ে আল্লাহর মহান বন্ধু সুফিসম্রাট সৈয়দ হযরত দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলা বলেন, কবর বলতে মানুষের দেহকে বুঝানো হয়েছে, মানুষের দেহের ভিতর রুহু থাকতেই, মৃত্যের আগেই তাকে ৩টি প্রশ্ন করা হবে।
কোরআনে আল্লাহ বলেন আমি নিজ সুরুতে আদমকে সৃস্টি করেছি, আদম সুরুতই আমার সুরুত। বান্ধার মৃত্যের সময় আদম সুরুতেই অসংখ্য আদমের মাঝেই আল্লাহ বিরাজমান হইয়ে, বান্ধাকে প্রশ্ন করা হবে তোমার প্রভু কে? বান্ধা যদি দুনিয়াতে এবাদত বন্দিগী সাধনা করে প্রভুর পরিচয় লাভ করতে পারলে তখন অনায়াসেই সামনে দেখেই বলে দিবে উনি আমার রব। আর তখন যদি সামনে দেখেও রবকে চিনতে না পারে, বান্দা বলবে- লাআদরী লাআদরী (আমি চিনিনা আমি চিনিনা)।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, তোমার ধর্ম কি?
চরিত্রই মানুষের মূল ধর্ম। যার চরিত্র নাই তার কোন ধর্ম নাই। সে যদি ধার্মিক হয় তাহলে দুনিয়াতে তার চরিত্রই বলে দিবে, সে কেমন ধার্মিক ছিলো। সেদিন তার চরিত্র তার সামনে তুলে ধরা হবে যা দেখে সে নিজেই তার ফয়সালা করবে।
তৃত্বীয় প্রশ্ন তোমার নবী কে?
একলক্ষ চব্বিশ হাজার নবীরাসূলকে সামনে রেখে তাকে প্রশ্ন করা হবে, এখানে তোমার নবী কে? দুনিয়াতে যদি সে হযরত রাসুল সাঃ কে দেখে থাকেন, অথবা তার পরিচয় লাভ করে থাকেন, তাহলে একলক্ষ চব্বিশ হাজার নবীরাসূলের মাঝে হযরত রাসুল সাঃ কে দেখে চিনতে পারবে এবং বলবেন উনিই আমার নবী। তারপরই আজরাইল তার জান কবজ করবে। প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে তার আত্নাকে নেওয়া হয় ইল্লিনে বা শান্তিময় স্থানে, সেখানে তার জন্য রয়েছে সুখ আর শান্তি।আর উত্তর না দিতে পারলে তার আত্নাকে নেওয়া হবে সিজ্জিনে অর্থাৎ অশান্তিময় জায়গায়।
নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।