উলঙ্গ সত্যের উপর বারবার পর্দা পড়িয়ে দেয় যারা।
মানুষ যখন থেকে তাকওয়ার পোশাক ফেলে দেয়, ঠিক তখন থেকেই সে কাপড়ের পোশাক পড়া খুব জরুরি মনে করে। সুফি দর্শন বরাবরই উলঙ্গ বিষয়। কারন, সত্য তো এমনই একটা বিষয় যার গায়ে কোন পোশাক থাকে না। কিন্তু আমরা যারা ক্ষীণ দৃষ্টি সম্পন্ন, যাদের চক্ষু সত্যের তেজস্বী আলোর বিকিরণ বরদাস্ত করতে সামর্থ্য রাখি না; আমরাই আমাদের এই দুর্বলতা ঢাকতে চোখের উপর হয় কাঠের চশমা লাগাই, নয়তো শরিয়তের দোহাই দিয়ে টুপি-বোরকা পড়িয়ে দেই।
বিশ্ব বিখ্যাত বহু সুফি সাধক মহান অলি-এ কামেল রয়েছেন যাঁদের লিখিত কিতাবের বক্তব্য গুলো এতোটাই উলঙ্গ যে, বঙ্গদেশীয় জামেয়ার সুন্নী জামায়াতের মৌলভী সাহেব ভাইয়েরা না পারে ওগুলো গিলতে, না ধৃষ্টতা দেখাতে পারে সেগুলো ফেলতে। তবে শেষ পর্যন্ত ভেবে চিন্তে তারা একটা সূক্ষ্ম কুট কৌশল তথা ফতোয়া ঠিকই আবিষ্কার করে ফেলেছে। যখনই কারো লিখা, বক্তব্য বা গবেষণায় সুফি দর্শনের রহস্যময় উলঙ্গ কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়, ঠিক তখনই তারা তাদের দূর্বলতাটুকু বেরিয়ে যাবার ভয়ে মুখ শুকিয়ে বলতে থাকে, ‘এগুলো তো গোপন বিষয়; এগুলো নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলা মোটেও উচিত নয়।’
তাদের মহাপণ্ডিৎ সুলভ এমন কথাবার্তার ঢং দেখলে মনে হবে, না জানি কতবড় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের সাগর তারা! কিন্তু বাস্তবতা তো এটাই, তারা বিশ্ব বিখ্যাত সুফি সাধকদের নাম ভাঙিয়ে আপন উদর পূর্তির পাঁয়তারা কারী বাণিজ্যিক সম্প্রদায় মাত্র।
তাদের মনগড়া ফতোয়াবাজি, মনগড়া কোরআন হাদিসের ব্যাখ্যা বয়ান এবং তাদের প্রচারিত তথাকথিত সুফি দর্শনের সংজ্ঞা আমলে নিয়ে আধ্যাত্মবাদে বিশ্বাসী সহজ সরল মনা ব্যক্তিরা মনের অজান্তেই অমৃতের বদলে বিষ খেয়ে চলছে। আমার চেতনার মধ্যে গত তিন বছর আগে এই বিষয়টি বিরাট দাগ কাটলো যখন দেখতে পেলাম, চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার বেলতলীতে অবস্থানরত বাংলার আবদুহু বাবা সুলায়মান শাহ্ লেংটার মাজারের উপর একটা জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
যে মহান অলি জিন্দেগীতে এক টুকরো কাপড়ও কোমরের নিচে পড়ে নাই, সেই মাজ্জুব লেংটা অলির পবিত্র মাজারের উপর আনুষ্ঠানিক মসজিদ! সারা বাংলাদেশে খুঁজলে হয়তো এমন আরো বহু নজির দেখতে পাবেন আশা করি। আকাল মান্দ’কে লিয়ে ইশারা হি কাফি হ্যায়!
লেখকঃ বি এম তোফায়েল আজম।