গুরু নানক এর অমিয় বাণী
ঈশ্বর এক।
ঈশ্বর এক কিন্তু তাঁর রূপ বিভিন্ন।
সে সবারই নির্মাণ করেন এবং
নিজেও মানুষ রূপে জন্মগ্রহণ করেন।
যদি কারোর অর্থের বা কোনো অন্যকিছু সাহায্যের প্রয়োজন হয়,
তাহলে কখনই পিছপা হওয়া উচিত নয়।
আমি গুরুদেবের চরণে সবসময় প্রার্থনা করি ও বলি,
হে গুরুদেব! তুমি আমাকে সৎপথের রাস্তা এবং আলোর দিশা দেখাও।
না আমি পুরুষ, না আমি নারী, না আমি নপুংসক।
আমি কেবল একজন শান্তির বাহক যার মধ্যে অপার আত্মবিশ্বাস,
সাহস এবং অনন্ত জ্যোতি বিরাজমান।
স্বাবলম্বী হও।
নারী-পুরুষ সমান সমান।
মাংস খাওয়া উচিত নাকি সবজি,
এসব নিয়ে মূর্খেরা তর্ক করে!
কোনটি মাংস এবং কোনটি সবজি,
সেটি কে ঠিক করে দিয়েছে?
আর কোনটি খেলে পাপ হবে,
সেটাই বা আসলে কে জানে!
গরিবদের কখনও ভুলবে না।
স্ত্রী জাতিকে সমাদর করা উচিত।
কখনই কারো অধিকার কেড়ে নেওয়া উচিত নয়।
যে সব মানুষকে একই মনে করে, সে-ই প্রকৃত ঈশ্বরবিশ্বাসী।
জীবনের ৫ শত্রু- অভিমান, রাগ, লোভ, সংযুক্তি ও আকাঙ্খা।
শুধুমাত্র সেটাই বলুন, যেই শব্দগুলি আপনাকে সম্মানিত করে।
আমার জন্মই হয়নি, তাহলে
আমার জন্ম কিংবা মৃত্যু কিভাবে হবে।
আপনাকে যদি কেউ সত্যি ভালবাসে,
জানবেন আপনি ঈশ্বরের সন্ধান পেয়ে গিয়েছেন।
সংসারকে জয় করার আগে,
নিজের বিচারগুলির উপর বিজয়প্রাপ্ত হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
সর্বদা ঈশ্বরের উপাসনা করো।
যদি মৃত্যুর প্রকৃত অর্থ সত্যিই কেউ জানতে পারে,
তা হলে সে আর মৃত্যুকে ভয় পাবে না।
উদার হও।
ভ্রমণ করো।
ঈশ্বর তোমাকে যে ধনসম্পত্তি দিয়েছেন,
তা যদি তুমি শুধু নিজের বলেই আগলে রাখো,
তা হলে তা একটি মৃতের চেয়েও পূতিগন্ধময়।
কিন্তু যদি তা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নাও,
তা হলে তা পবিত্র প্রসাদের চেয়েও বেশি পুণ্য বলে ধরা হবে।
তোমার কথা শুনে অন্যরা যেন তোমাকে সম্মান করতে পারে,
এমন কথাই সব সময় বোলো।
ঈশ্বরের জন্য খুশির গান গাও,
প্রভুর নামের সেবা করো
এবং তাঁর সেবকের সেবক হয়ে যাও।
পৃথিবী আসলে একটি নাট্যমঞ্চ
আর আমরা সকলে স্বপ্নের মধ্যে
এখানে অভিনয় করে চলেছি।
যুক্তি দিয়ে ঈশ্বরকে ব্যাখ্যা করা যায় না,
সারা জীবন ধরে চেষ্টা করলেও কেউ তা পেরে উঠবে না।
সমগ্র বিশ্ব কঠিনতার মধ্যে আছে,
যার নিজের প্রতি আস্থা আছে
সেই একমাত্র বিজয়ী হতে পারবে।
নিজের বাহুবলের মাধ্যমে পরিশ্রম করে,
লোভকে ত্যাগ করে সঠিকভাবে অর্থ উপার্জন করা উচিত।
ঈশ্বর সর্বত্র বিদ্যমান আছেন,
সকলের পিতা একমাত্র তিনিই।
এজন্য সবার সাথে প্রেমপূর্বক থাকা উচিত।
তোমার হাজারো চোখ আছে তবুও একটি চোখও নেই,
তোমার হাজারও রূপ আছে তবুও একটি রূপও নেই।
বন্ধুরা আমরা কখনই মৃত্যুকে খারাপ বলতাম না
যদি আমরা জানতাম যে, বাস্তবে মরে কিভাবে যাওয়া যায়।
কেউ তাঁকে (ঈশ্বর) তর্কের মাধ্যমে কখনই বুঝতে পারবেন না,
এমনকি সে যদি যুগ যুগ ধরেও তর্ক করতে থাকে।
যেইসব মানুষ; যাদের মধ্যে ভালোবাসা আছে,
তারা সেইসব মানুষদের মধ্যে একজন
যারা ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়েছেন।
সারল্যই সৌন্দর্য।
ধন-সমৃদ্ধি সম্পন্ন বড় বড় রাজ্যের রাজা
মহারাজার তুলোনা ছোট পিপড়ের সাথে করা যায়না,
যার মধ্যে ঈশ্বরের প্রেম ভরে আছে।
যার নিজের উপর বিশ্বাস নেই,
সে কখনই ইশ্বরের উপর বিশ্বাস করবে না।
শান্তিতে নিজের ঘরে নিজের বিচার করুন,
তাহলে মৃত্যুর দূতও ছুঁতে পারবে না।
অহংকার মানুষকে মানুষের মত থাকতে দেয় না,
তাই অহংকার কখনই করা উচিত নয়।
বিনম্রভাবে, সেবা করার ভাবনার দ্বারা জীবন অতিবাহিত করা উচিত।
দুনিয়ায় কোনো ব্যক্তিরই ভ্রান্তভাবে থাকা উচিত নয়,
গুরুর সাহায্য ছাড়া কেউই অপর প্রান্তে পৌঁছাতে পারবে না।
পার্থিব ভালবাসাকে পোড়ান,
নিজের ছাইকে ঘষুন এবং সেটার কালি বানান,
নিজের হৃদয়কে কলম তৈরি করুন,
নিজের বুদ্ধিকে লেখক বানান
এবং সেটিই লিখুন যার কোনোও শেষ নেই
আর যার কোনো সীমা নেই।
দুই গুণ দিলে চার গুণ পাওয়া যায়।
চিন্তামুক্ত থেকে কর্ম করা উচিত।
নিজের উপার্জনের দশ ভাগের একভাগ,
পরের উপকারের জন্য এবং নিজের সময়ের
দশ ভাগের একভাগ,
প্রভুর কীর্তন অথবা ঈশ্বর ভক্তিতে দেওয়া দরকার।
ধনকে পকেটেই স্থান দেওয়া দরকার,
নিজের হৃদয়ে নয়।
যে কোনো ধরনের বীজ বপন করা হোক না কেনো
সেটিকে সঠিক আবহাওয়ার মধ্যেই প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
যদি ধ্যানপূর্বক সেটির অবস্থানকে লক্ষ্য করা যায়
তাহলে জানা যাবে না যে বীজের গুণই সেটিকে উপরে নিয়ে আসে।
ঈশ্বর একজনই, আর তাঁর নাম সত্য।
তিনিই জগতের সৃষ্টিকর্তা।
তিনি কাউকে ভয় পান না,
কাউকে ঘৃণা করেন না।
তিনি জাগতিক জন্ম-মৃত্যুর ঊর্দ্ধে।
তিনি স্বীয় দীপ্তিতে আলোকিত হন।
একমাত্র প্রকৃত গুরুই তোমাকে তাঁর সন্ধান দিতে পারবেন।
এই ঈশ্বর সৃষ্টির শুরুতেও প্রাসঙ্গিক ছিলেন,
আজও সমান প্রাসঙ্গিক
এবং আগামী দিনেও তাঁর প্রাসঙ্গিকতা একটুও কমবে না।