ইমাম হোসাইন প্রেমিক হৃদয়ে একটি স্পন্দনের নাম।

ইমাম হোসাইন প্রেমিক হৃদয়ে একটি স্পন্দনের নাম।

মহররম মাস মুমিনদের জন্য একটি শোকাবহ বেদনাদায়ক মাস। কারণ ১০ই মহররম দিনে মাওলা ইমাম হোসাইন মানব জাতির মুক্তির জন্য অকাতরে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে তৎকালীন ৭০০০হাজার কোরআনের হাফেজ ৩০০০ হাজার মুফতি এবং অসংখ্য সাহাবী ও তাবেইন ইয়াজিদের সৈন্যরা ১০ই মহররমের তারিখে মাওলা ইমাম হোসাইনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। যা মুসলিম জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটি কলংকিত অধ্যায়।

তাই এইদিনে মাওলা ইমাম হোসাইনের প্রেমিকরা হায় হোসাইন হায় হোসাইন হায় হোসাইন বলে বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করে। এই শোক মুমিন হৃদয়ে উদ্ভাসিত প্রেমময় কান্না। কেয়ামত পর্যন্ত মুমিন মুসলমানগণ এইদিনে অবধারিত কান্নাকাটি করবেই। এই শোক ভাষার তুলিতে থরে থরে বলা সম্ভব নয়। যেখানে মহান আল্লাহর অনুগত সমস্ত সৃষ্টি জগত মাওলা ইমাম হোসাইনের শোকে কান্নাকাটি করে, সেখানে আমরা কিভাবে কাঁদবো না ভাই।

এইদিনে আমরা যখন হায় হোসাইন বলে কান্নাকাটি করি, তখনই একদল ইয়াজিদের উত্তরসূরী আলেমগণ আমাদেরকে কাফের, শিয়া, ভন্ড, নাস্তিক ফতোয়া চাপিয়ে দেয়। তারা বলে হায় হোসাইন বলে কান্নাকাটি করা বিদআত এবং কুফরি গুণাহ। এরা মঙ্গলগ্রহ থেকে আজব ফতোয়া আমদানি করেছে তিনদিনের বেশি শোক পালন করা যাবে না। এদেরকে কিছু বলার ভাষা মোজাম্মেল পাগলা হারিয়ে ফেলেছে। শুধু আফসোস হয় এদের অজ্ঞতা এবং হীনমন্যতা দেখে। হে মাওলা! তুমি কি এদেরকে কখনো মানুষ করবে না, এরা কি চিরকালই আহলে বাইতের দুশমনি করে যাবে? এটাই কি তোমার সৃষ্টির বিধান। বুঝি না তোমার রঙ্গলীলা আর বুঝতেও চাই না তোমার লীলাখেলা। শুধু অধমের দেহমন বি*দ্রো*হী হয়ে ওঠে এদের কার্যকলাপ দেখে। এটা কি অধমের দোষ? এটা যদি দোষ হয়ে থাকে, তবে চিরকালই এমন দোষে দোষী সাব্যস্ত হতে চাই।

ইমাম হোসাইন
বাণী— খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহঃ)।

হযরত ইয়াকুব নবী (আঃ) পুত্র হযরত ইউসুফ নবীকে হারিয়ে বছরের পর বছর ধরে বুক চাপড়িয়ে কেঁদেছিলেন। সেই কান্নার বিলাপ আকাশ-পাতাল ভূকম্পিত হতো। কাঁদতে কাঁদতে দুই চোখের জ্যোতি হারিয়ে ফেলেছিলেন। অবশেষে হযরত ইউসুফ নবীকে পেয়ে মহা আনন্দ উপভোগ করেছিলেন হযরত ইয়াকুব নবী। বিচ্ছেদ যাতনা সবসময় যন্ত্রণাময়ই হয়ে থাকে। উহুদের ময়দানে দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) এর দুটি দন্ত(দাঁত) মোবারক শহীদ হলে, হযরত ওয়াজ করণী পাগলা পাথর দিয়ে নিজের সবগুলো দাঁত মোবারক ফেলে দেয়। মৌলভী সাহেব, আপনি এখন এই মহা প্রেমকে কোন শরিয়তের আলোকে বিচার করবেন।

দয়া করে অধমকে জানিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ হবো। হযরত মা সালমা (রাঃ) বলেন, ১০ই মহররমের দিনে দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) মাওলা ইমাম হোসাইনের শোকে রুহানিভাবে কারবালার ময়দানে গড়াগড়ি করে হায় হোসাইন বলে চিৎকার করেছিলেন। এখন কোন ফতোয়া দিবেন দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) কে। মৌলভী সাহেব মোহাম্মদী ইসলামকে আর কতকাল ফতোয়ার জালে জর্জরিত করবেন। আপনাদের ফতোয়ার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে মুসলিম জাতির নাভিশ্বাস হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) বলেন, “হোসাইন আমা হতে আর আমি হোসাইন হতে”। মাওলা ইমাম হোসাইন এমনই এক স্বত্ত্বা, দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) থেকে বিন্দু পরিমাণ আলাদা নয়। বরং এক এবং অভিন্ন স্বত্ত্বা। মাওলা ইমাম হোসাইন শেরে খোদা হযরত মাওলা আলী এবং জগত জননী মা ফাতেমার কলিজার টুকরো, আদরের দুলাল এবং নয়নের মনি। মাওলা ইমাম হাসান (আঃ) এর সহোদর আদরের ভাই। মাওলা ইমাম হোসাইন নিজেই জান্নাত এবং জান্নাতের সর্দার। যাঁর কদমতলে পাপী-তাপীর মুক্তির দিশা। একদল জ্ঞানপাপী বলে থাকে, মাওলা ইমাম হোসাইনের মা ফাতেমার অভিশাপের জন্য কাবালারর ময়দানে জীবন দিয়েছেন। নাউজুবিল্লাহ। এরা মূলত ইয়াজিদকে বাঁচানোর জন্য এমন আষাঢ় মাসের গল্প ভীনগ্রহ থেকে আমদানি করছে।

ইমাম হোসাইন প্রেমিক
বাণী— খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী (রহঃ)।

এইসব জ্ঞানপাপীদের কিছু বলার নাই। শুধু বলবো, মাওলা ইমাম হোসাইন মুসলিম জাতির মুক্তির জন্য শহীদ হয়েছেন। নচেৎ সৃষ্টি জগতে মানব জাতির মুক্তির কোন বিধানই থাকতো না। যে মহামনব আমাদের জন্য জীবন উৎসর্গ করলেন, এখন কি আমরা হায় হোসাইন বলে একবার কাঁদতেও পারবো না ভাই। এটা কোন ফতোয়া এবং কোন সংবিধান তা অধমের জানা নেই। শুধু এমন ফতোয়ার মু*খে শ*তবার ধি*ক জানাই। ওরে মোজাম্মেল পাগলা , তুই কি আজো কাঁদবি না মাওলা ইমাম হোসাইনের জন্য। আজ যে তর হায় হোসাইন বলে কাঁদার শ্রেষ্ঠ সময়। আর পা*ষাণ হৃদয় নিয়ে হেলায় হেলায় সময় অতিবাহিত করিস না।

১০ই মহররম তকে মুক্তি হাত বাড়িয়ে ডাকছে, আর অবচেতন মনে ঘুমিয়ে থাকিস না। মৌলভী সাহেব প্রেমের কোন দলিল হয় না। প্রেম তো আসে হৃদয়ের আয়না মহল থেকে। যাকে ধরা যায় না, ছোঁয়া যায় না। শুধু অনুভব করা যায়। প্রেমের কারণেই কুল কায়েনাত সৃষ্টি হয়েছে। প্রেম এমন এক মহাশক্তি, যা ফতোয়ার জালে ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। প্রেমিক হৃদয় চিৎকার করে বলে ওঠে, ইয়া মাওলা ইমাম হোসাইন আমি তোমার চরণের দাস। দয়া করে তোমার গোলামকে চিরতরে তোমার রাঙা চরণে ঠাঁই দাও। আর পথভোলা মানুষকে হেদায়েতের দিশা দাও। তুমি তো পরম দয়াময়, সৃষ্টি জগতকে নিরাশ করিও না।

নিবেদকঃ আশেকে রাসুল মোজাম্মেল হোসাইন

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel