মাওলা আলীর শান-মান শুনলে যে কারনে অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠে!
মাওলা আলীর শানমান শুনলে অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠে। আর কাঁদতে ইচ্ছে করে অঝোর নয়নে।
মক্কা বিজয়ের দিন ক্বাবাঘরের ভিতরে ৩৬০টি মূর্তি ভাঙা হয়। একে একে ৩৫৯ টি মূর্তি ভাঙা হলো, তখন বাকী থাকে কেবলমাত্র হোবল মূর্তিটি। তখন রাসূল পাক (সাঃ) মাওলা আলীকে ডেকে বলল, আলী তুমি বসো আমি মূর্তিটি ভাঙব। তখন মাওলা আলী বসে পড়লে রাসূল পাক (সাঃ) মাওলা আলীর কাঁধের উপর পা রাখেন। তারপর মাওলা আলী একটু নড়েচড়ে বসে, তখন রাসূল পাক (সাঃ) বলেন, আলী তোমার কি রিসালাতের ওজন বইতে কষ্ট হচ্ছে? আচ্ছা আলী! তুমি আমার কাঁধের উপর চড়ে মূর্তিটি নামাও।
তারপর মাওলা আলী রাসূল পাক (সাঃ) এর কথা অনুযায়ী তাঁর কাঁধে পা রেখে মূর্তিটি নামায়। অথচ সেই মূর্তিটি নামাইতে রাসূল পাক (সাঃ) পাথরের উপর দাঁড়িয়ে নামাইতে পারতো। আবার অন্য সাহাবীকে এই কাজটির দায়িত্ব দিতে পারতো। কারণ তখন হাজার হাজার সাহাবী রাসূল পাক (সাঃ) এর সামনে উপস্থিত ছিল। তাছাড়া এই হোবল মূর্তি নামানো তেমন অসাধ্য কোনো ব্যাপার ছিলো না। মূলত এই কাহিনির ভিতরে গভীর একটি প্রেম ও রহস্য লুকানো ছিলো।
রাসূল পাক (সাঃ) ছিলেন সমস্ত সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত। যাকেঁ সৃষ্টি করা না হলে কোনো কিছুই সৃষ্টি করা হতো না। আল্লাহ নিজে যার প্রেমে সর্বসময় এশকে দেওয়ানা থাকে এবং সমস্ত সৃষ্টি জগতের কান্ডারী ও মুক্তির দিশারী। সেই রাসূল পাক (সাঃ) এর কাঁধে পা রেখে মাওলা আলী মূর্তি নামায়। অথচ সমস্ত কূল কায়েনাত রাসূল পাক (সাঃ) এর কদমের নিকট আশ্রয় ভিক্ষা চায়।
কিন্তু আমরা দেখতে পাই দুজন দুজনের কাঁধে পা রাখছে। রাসূল পাক (সাঃ) এবং মাওলা আলী যদি দুটি ভিন্ন স্বত্বা হতো, তাহলে কখনো মাওলা আলী রাসূল পাক (সাঃ) এর কাঁধে পা রাখতে পারত না। এটা হতো চরম ধৃষ্টতা এবং বেয়াদবি।
মূলত রাসূল পাক (সাঃ) এবং মাওলা আলী ছিলেন একই স্বত্বার অধিকারী। একজন আরেকজনের কাছ থেকে বিন্দুমাত্র আলাদা নন। তাই তো রাসূল পাক (সাঃ) গাদীরে খুমে যথার্থ বলছেন, “আমি যার মাওলা আলী তার মাওলা”। (জ্ঞানী লোকেরা ইশারায় সবকিছু বুঝে নেয়)।
রাসূল পাক (সাঃ) ক্বাবাঘর থেকে ৩৬০টি মূর্তি অপসারণ করার পর আশেকে রাসূল হযরত বিল্লাল (রাঃ) কে আজান দেওয়ার জন্য ক্বাবাঘরের মিনারায় উঠতে বলেন। মিনারায় উঠার পর বিল্লাল (রাঃ) রাসূল পাক (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, আমি এখন কোনদিকে ঘুড়ে আজান দিবো? কারণ এতোদিন ক্বাবার দিকে কেবলামুখী হয়ে আজান দিতাম, কিন্তু আজ আমি ক্বাবার উপরে দাঁড়িয়ে কোন মুখী কেবলা করে আজান দিব?
হযরত বিল্লাল (রাঃ) এর মুখে এই কথা শুনে সকল সাহাবীরা নীরব ও স্তব্দ হয়ে গেলেন। সকল সাহাবীরা তাঁকিয়ে আছে রাসূল পাক (সাঃ) এর দিকে এবং জটিল প্রশ্নের উত্তর শুনার জন্য। যা ইতিপূর্বে সাহাবীরা কখনো এমন ঘটনার সম্মুখীন হননি।
তখন রাসূল পাক (সাঃ) সকল নীরবতা ভেঙে মাওলা আলীর কাঁধে হাত রেখে বলে, হে বিল্লাল তুমি আমার আলীর দিকে তাঁকিয়ে আজান দাও। হে সকল সাহাবীরা তোমরা জেনে রাখো, আমার আলী ক্বাবারও ক্বাবা এবং তাঁর দিকে তাকানোও ইবাদত। আমার আলীর স্মরণও মুমিনদের জন্য ইবাদত। কোন মোনাফেক ব্যাক্তি আলীকে ভালোবাসতে পারবে না এবং মুমিন ব্যক্তি কখনো আলীর বিদ্বেষ পোষণ করবে না।
তখন সকল সাহাবীরা সমস্বরে বলে উঠল,
মারহাবা ইয়া রাসূল আল্লাহ,
মারহাবা ইয়া হাবীব আল্লাহ,
মারহাবা ইয়া আলী কারামুল্লাহ ওয়াজহু।
ধন্য ধন্য হে তালিবের পুত্র তুমি ধন্য।
নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।