হোমপেজ মুয়াবিয়া প্রসঙ্গ মুয়াবিয়াকে সাহাবী মনেকরা কতটা যৌক্তিক?

মুয়াবিয়াকে সাহাবী মনেকরা কতটা যৌক্তিক?

মুয়াবিয়াকে সাহাবী মনেকরা কতটা যৌক্তিক?

দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) কে অবজ্ঞা করে আর কতকাল মোনাফেক মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলবেন?

রাসূল পাক (সঃ) বলেনঃ
“হে আলী, তোমার শান্তিই আমার শান্তি, তোমার যুদ্ধই আমার যুদ্ধ।”
(ইবনে আবিল, শরহ নাহজ আল-বালাগা, ১৮ খন্ড পৃঃ২৪)

“আমার প্রতি তিনটি ওহী অবতীর্ণ হয়েছে, নিশ্চয় আলী মুসলমানদের নেতা, মুত্তাকীদের ইমাম এবং নূরানী ও শুভ্র মুখমন্ডলের অধিকারীদের সর্দার।”
(কানযুল উম্মাল ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃঃ১৭৫ হাদিস নং-২৬২৮)

إِنَّ عَلِيّاً مِنِّي، وَ أََنَا مِنْهُ، وَ هُوَ وَلِيُّ كُلِّ مُؤمِنٍ بَعْدِي.
“নিশ্চয় আলী আমা থেকে আর আমি আলী থেকে। আর সে আমার পরে সকল মুমিনের নেতা।”
(খাসায়েসে নেসায়ী :২৩,মুসনাদে আহমাদ ৪:৪৩৮,আল মু’ জামুল কাবীর-তাবারানী ১৮: ১২৮/২৬৫,হিল্লীয়াতুল আউলিয়া ৬:২৯৬)

مَنْ آذَي عَلِيّاً فَقَدْ آذَانِي.
“যে ব্যক্তি আলীকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয়।”
(মুসনাদে আহমাদ ৩:৪৮৩,আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২২,দালায়িলুন নব্যুওয়াত ৫:৩৯৫,আল ইহ্সান- ইবনে হাববান ৯:৩৯/৬৮৮৪)

لَا يُحِبُّ عَلِيّاً مُنَافِقٌ، وَ لاَ يُبْغِضُهُ مُؤمِنٌ.
“মুনাফিকরা আলীকে ভালোবাসে না,আর মুমিন তাঁকে ঘৃণা করে না।”
(সুনানে তিরমিযী ৫:৬৩৫/৩৭১৭,আর রিয়াদুন নাদরাহ ৩:১৮৯)

عَلِيٌّ مَعَ الْقُرْآنِ وَ الْقُرْآنُ مَعَ عَلِيٍّ.
“আলী কুরআনের সাথে আর কুরআন আলীর সাথে।”
(আল মুস্তাদরাক-হাকেম ৩:১২৪,কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১২)।

عَلِيٌّ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ رَأسِي مِنْ بَدَني.
“আমার নিকটে আলী আমার শরীরে যুক্ত আমার মাথার ন্যায়।”
(তারীখে বাগদাদ ৭:১২,কানযুল উম্মাল ১১:৬০৩/৩২৯১৪)

মোনাফেক মোয়াবিয়া সামান্য একজন প্রাদেশিক গর্ভনর হয়ে মুসলিম জাহানের খলিফা মাওলা আলীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে সিফফিনের যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। অথচ ইসলামি রীতিনীতি অনুযায়ী খলিফার নিকট বায়াত হয়ে তাঁর আনুগত্য স্বীকার করা ফরজ। যুদ্ধ তো দুরের কথা বায়াত নিতে অস্বীকৃতি প্রদান করার সাথে সাথে কাফের হয়ে যাবে। সে আর মুসলমান থাকতে পারবে না। আর মোয়াবিয়া মুসলিম জাহানের খলিফা মাওলা আলীর বায়াত অস্বীকার করে সিফফিনের যুদ্ধে মাওলা আলীর পক্ষে হাজার হাজার বিখ্যাত সাহাবী হত্যা করে। তার মধ্যে হযরত আম্বার (রাঃ) এবং বিখ্যাত আশেকে রাসুল ওয়াজ করণি পাগলা অন্যতম। তাঁরাও মোনাফেক মোয়াবিয়ার নিকট নির্মমভাবে হত্যার স্বীকার হয়।

অথচ দয়াল রাসূল সুস্পষ্টভাবে বলছেন, আলীর সাথে যুদ্ধ করা মানেই আমার সাথে যুদ্ধ করা। এখন বলুন তো রাসূলের সাথে যুদ্ধ করে কিভাবে একজন জলিল কদর সাহাবী হওয়া যায়? তাহলে তো সকল কাফেররা সাহাবী দাবি করবে। কারণ তারাও দয়াল রাসূলের সাথে ২৭টি যুদ্ধ করছে। একমাত্র মস্তিষ্ক বিকৃতমনা মানুষ এবং মোয়াবিয়ার রুহানি সন্তানরাই মোয়াবিয়াকে জলিল সাহাবী বলবে। আবার দয়াল রাসূল (সাঃ) মাওলা আলীকে মুসলমানদের নেতা এবং মুত্তাকিনদের ইমাম বলে ঘোষণা করছেন। আচ্ছা তাহলে বলুন তো, কোন মুসলমান এবং মুত্তাকিন কি তাদের নেতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে? একমাত্র অমুসলিম এবং মোনাফেকদের পক্ষেই সম্ভব মাওলা আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। কোন বদ্ধ উন্মাদও বিশ্বাস করবে না, খাঁটি মুসলমান এবং মুত্তাকিন মাওলা আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। নচেৎ দয়াল রাসূলের হাদিস মিথ্যা প্রমাণিত হবে। আবার দয়াল রাসূল (সাঃ) বলছেন, আলী আমার থেকে এবং আমি আলী হতে এবং আলী মুমিনদের নেতা। এখানে দয়াল রাসূলের সাথে মাওলা আলীর নিভীর প্রেমময় সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে। বলতে পারেন দুজন মিলে একাকার হয়ে গেছে। তাহলে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে, মোয়াবিয়া মূলত মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ করেনি বরং স্বয়ং রাসূলের সাথে যুদ্ধ করছেন। আবার মাওলা আলী মুমিনদের নেতা, তাই কোন মুমিন ব্যক্তি কখনো মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ তো দুরের কথা বরং চুল পরিমান বিরোধিতা করতে সাহস পাবে না। একমাত্র মোয়াবিয়ার মতো বেইমান মোনাফেকরাই মাওলা আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে।

আবার দয়াল রাসূল (সাঃ) বলছেন, যে ব্যক্তি আলীকে কষ্ট দেয়, সে আমাকে কষ্ট দেয়। এখন আপনারা বলুন তো দাদা ভাই, মোনাফেক মোয়াবিয়া কি মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ করে কষ্ট দিয়েছিলো নাকি আনন্দ দিয়েছিলো? নিশ্চয়ই মোয়াবিয়া যুদ্ধ করে মাওলা আলীর মনে চরম কষ্ট দিয়েছিলো। আর মাওলা আলীর মনে কষ্ট দেওয়া মানে স্বয়ং রাসূলের মনে কষ্ট দেওয়া। আর দয়াল রাসূলের মনে কষ্ট দিয়ে মোয়াবিয়া কিভাবে সাহাবী হতে পারে? এটা কি আষাঢ় মাসের গল্প নয়? এমন মস্তিষ্ক বিকৃতিহীন মানুষদের কি দিয়ে বুঝাবো মোয়াবিয়া চরম মোনাফেক ছিলো। সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষ কখনো মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলতে পারবে না। অসুস্থ বিকৃতিমনা মানুষগুলো সবসময় তিলকে তাল বানায়। এদের অজ্ঞতার কাছে জ্ঞানীরা অসহায় এবং জ্ঞানপিপাসু মানুষরা নীরবে নিভৃতে কাঁদে। দয়াল রাসূল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, মোনাফেকরা কখনো আলীকে ভালোবাসবে না এবং মুমিন ব্যক্তি কখনো আলীর বিদ্বেষ পোষণ করবে না। আপনার বিবেককে একবার জিজ্ঞেস করুন তো দাদা, মোয়াবিয়া কি মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ করে শক্রুতা করেছিলো নাকি বন্ধুত্ব করেছিলো। নিশ্চয়ই চরম শক্র ছাড়া কেউ কারোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে না। মোয়াবিয়া মাওলা আলীকে ভালোবাসলে কি আর যুদ্ধ করতে পারতো।

সৃষ্টি জগতের ইতিহাসে এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না, কোন ব্যক্তি ভালোবাসার মানুষের সাথে যুদ্ধ করে। বরং যুদ্ধ হয়েছে ঘোরতর শত্রুর সাথে। এটা রাস্তার একজন বদ্ধ উন্মাদ পাগলও বুঝে, শুধু বুঝতে চায় না মোয়াবিয়ার রুহানি সন্তানরা। তাহলে দেখা গেল দয়াল রাসূলই স্বয়ং মোয়াবিয়াকে মোনাফেক বলছে, তাই আমাদের কিছু করার নাই। হক কথা আমাদের বলতেই হবে। মোয়াবিয়া মুমিন ছিলো না বিধায়, মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ করে চরম বিদ্বেষ পোষণ করেছিলো। কারণ মুমিন ব্যক্তি কখনো মাওলা আলীর সাথে বিদ্বেষ পোষণ করবে না। আর মুমিন ব্যক্তি ছাড়া কেউ কখনো দয়াল রাসূলের সাহাবী হতে পারবে না। তবে ইবলিশ শয়তানের সাহাবী হতে পারবে। এখন কি দয়াল রাসূলের হাদিসকে সরাসরি অস্বীকার করে মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলতে পারবেন? সেটা আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত অভিমত। কিন্তু কোন ঈমানদার ব্যক্তি দয়াল রাসূলকে অপমান করে মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলতে পারবে না।

আবার দয়াল রাসূল (সাঃ) বলছেন, আলী কোরআনের সাথে এবং কোরআন আলীর সাথে। তাহলে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, মোয়াবিয়া মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ করে সরাসরি পবিত্র কুরআনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আর পবিত্র কুরআন শরীফের সাথে যুদ্ধ করা মানে স্বয়ং আল্লাহর সাথে যুদ্ধ করা। তাই আল্লাহ এবং কোরআনের সাথে যুদ্ধ করে কখনো সাহাবী হওয়া যায় না। এই সহজ কথাটি আমরা কবে বুঝতে পারবো, তা অধমের জানা নেই। শুধু আফসোস হয় এদের অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ দেখে। তাছাড়া দয়াল রাসূল মাওলা আলীকে শরীরযুক্ত এবং মাথার ন্যায় বলছেন। আর মোয়াবিয়া সেই মাওলা আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বয়ং রাসূলের সাথেই যুদ্ধ করছেন। আর রাসূলের সাথে যুদ্ধ করে কখনো সাহাবী হওয়া যায় না। মুসলিম জাতি কবে এই মহাসত্য কথাগুলো বিশ্বাস করবে, তা জানি না।

মোয়াবিয়ার রুহানি সন্তানরা ভাঙা সারিন্দা বাজিয়ে চলছে, মোয়াবিয়া জলিল কদর সাহাবী। কথাগুলো শুনতে শুনতে শব্দ দূষণ হয়ে কান নষ্ট হবার উপক্রম হয়েছে। এভাবে আর কতকাল আল্লাহ, রাসূল, কোরআন এবং আহলে বায়াত অস্বীকার করে মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলবেন। বিবেকের দ্বার কি চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে? মনের কোনায় কি বিন্দুমাত্র ভয় জাগে না। অন্ধ মোহের ন্যায় আর কতকাল নেতার কথা শুনে মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলবেন? ঈমাণ বাঁচাইতে চাইলে এখনই মোয়াবিয়াপন্হী পীরকে তালাক দিয়ে আহলে বায়াতের পথে চলে আসুন এবং আল্লাহর মনোনীত অলী আল্লাহর হাতে নতুন করে বায়াত গ্রহণ করুন। জয় পাক পাঞ্জাতনের জয়। জয় মাওলা আলীর জয়।

নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।