সদর উদ্দিন আহমদ চিশতীর অমিয় বাণী: পর্ব-১

সদর উদ্দিন আহমদ চিশতী: (১৯১৪-২০০৬)

সদর উদ্দিন চিশতীর বাণী: পর্ব-১

(১)
জ্ঞানের প্রবাহ লাভ করাই মানসিক সাফল্য।
যে স্বর্গীয় জ্ঞান মানুষ সাধনা দ্বারা অর্জন করে
ভাষায় তাহার বহি:প্রকাশকে জান্নাতের নহর বা ফোয়ারা বলে।

(২)
প্রেম অখণ্ড এবং অমর একটি বিষয়।
ইহা মোহের মত মৃত্যু দ্বারা খণ্ডিত হয় না।
সুতরাং যাহারা প্রেমের অধিকারী তাহারা মৃত্যুকে
জয় করিয়াছেন অর্থাৎ মরার আগে মরিয়া গিয়াছেন।

(৩)
মানুষের চিন্তা ও কর্মগুলিকেই তাহার ধর্ম বলে।

(৪)
যখন তুমি কাউকে কোন কাজের দায়িত্ব দিবে
তখন তাকে পরিষ্কার বুঝিয়ে বলে দিবে
তার থেকে তুমি কি সুফল আশা কর?
কিন্তু তিনি উক্ত কাজটা কিভাবে সুসম্পন্ন করছে
সেটা তুমি দেখতে যেওনা না।

(৫)
কামিয়াব হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যক্তির
নফস নিজেই তাহার জন্য বড় প্রতারক।

(৬)
আল্লাহর গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ এই সৃষ্টি।

(৭)
যে ব্যক্তি পাগলই হয় নি,
সেই তো আসলে পাগল।
আল্লাহর প্রেমে পাগলই সুস্থ।
অথচ যে পাগল হয় নাই,
সেই আসলে অসুস্থ।

(৮)
সামনে সুন্দর সময় আসছে।
মানুষ সত্য খুঁজবে,
সত্য গ্রহণ করবে।
পৃথিবীতে শান্তি আসবে।

(৯)
প্রাণের মায়া ত্যাগ করিয়া পরিপূর্ণ
আত্মসমর্পণের দ্বারাই কেবল
ঈমান অর্জ্জন করা যায়।

(১০)
যে ঘরেই মাওলা আলীর জন্ম হয়
তাহা সার্বজনীনভাবে ও সর্বযুগে তোয়াফযোগ্য।
আলী পর্যায়ের একজন ব্যক্তির তোয়াফ মানে মহানবীর তোয়াফ।

(১১)
মুসলমান শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণকারী।
তিনি যে কোন ধর্ম বর্ণ গোত্রের লোক হতে পারেন।
মুসলমান হওয়ার জন্য কাউকে ধর্ম ত্যাগ করে নাম পাল্টাতে হয় না।

(১২)
কোরান শুধু পড়ার পুস্তক নয়।
ইহাতে ব্যক্ত জীবন দর্শনের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া
জীবন গঠন করাই ইহার সার্থকতা।
এইদিক হইতে বিচার করিলে দেখা যায়
১৪শত বৎসরের মধ্যে পৃথিবীর কোন দেশই
কোরানের প্রতি সুবিচার করে নাই। কেন করে নাই?

(১৩)
অন্তরে ‘হাক্কুল একীন’ অর্থাৎ দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়
বা দৃঢ় বিশ্বাস না হওয়া পর্যন্ত মনের চঞ্চলতার অবসান ঘটে না।

(১৪)
সকল মহাপুরুষের শিক্ষার মূলমন্ত্র হইল
মনের মধ্যে ‘লা’ অবস্থা সৃষ্টি করা,
কিন্তু মানুষ তাহার দৈহিক বা জৈবিক চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়া
বিষয়মোহে আপ্লুত হইয়া থাকিতে ভালবাসে।
মন হইতে দুনিয়া মুছিয়া না যাওয়া পর্যন্ত
রব কাহারও মাঝে জাগ্রত হইয়া উঠে না।

(১৫)
সামনে সুন্দর সময় আসছে
মানুষ সত্য খুঁজবে,
সত্য গ্রহণ করবে,
পৃথিবীতে শান্তি আসবে।