পূর্বকালীন ওলী-আল্লাহগণের ভবিষ্যদ্বাণীঃ
রওজাতুল কাইউমিয়া’ নামক পুস্তকে প্রকাশ, হযরত আব্দুল কাদের জেলানী (রঃ) ছাহেব একদা গভীর মোরাকাবায় নিমগ্ন। হঠাৎ তিনি কাশফে দেখিতে পান যে আসমান থেকে একটি নূর প্রকাশ পাইয়া সমস্ত বিশ্ব আলোকিত করিল। এই সময় এলহাম যোগে তাহাকে জানানো হয় যে, আজ থেকে পাঁচশত বছর পরে যখন পৃথিবী শেরেক ও বেদয়াতের ঘন অন্ধকারে আছন্ন হইবে, তখন উম্মতে মুহাম্মদীর মধ্যে এক অসাধারণ ব্যক্তি জন্ম গ্রহণ করিবেন; তিনি দুনিয়া হইতে শেরেক ও বেদয়াতের মূল উচ্ছেদ করিবেন। তাহার ছহব্বত স্পর্শমণি তুল্য হইবে।
তাহার পুত্রগণ ও খলিফাগণ দীনী খেদমত উত্তমরূপে সম্পাদন করিবেন। অতঃপর কামালাতের নিদর্শনস্বরূপ আপন খাছ খেরকাকে স্বীয় পুত্র সৈয়দ তাজুদ্দীন আব্দুর রাজ্জাক (রঃ) কে সোপর্দ পূর্বক আদেশ করেন যে, যখন ঐ বুজুর্গ প্রকাশ লাভ করিবেন, তখন যেন ইহা তাহাকে প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে সেই পবিত্র খেরকা মোবারক পর্যায়ক্রমে হস্তান্তরিত হইয়া হযরত মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবের হাত মোবারক পর্যন্ত পৌঁছাইয়াছিল।
হিজরী পঞ্চম শতকের মাঝামাঝি হযরত শায়খ আহমদ জাম (রঃ) ছাহেব ভবিষ্যৎবাণী করেন যে, তাঁহার চার শত বৎসর পর ইসলাম জাহানে আহমদ নামে একজন বুজুর্গ ব্যক্তি জন্ম লাভ করিবেন, যিনি মৃতপ্রায় ইসলামকে পুনরজ্জীবিত করিবেন।
পিতা হযরত আব্দুল আহাদ (রঃ) ছাহেবের কাশফে পুত্রের আগমনের ইশারাঃ
মাওলানা হাসান কাশ্মিরী (রঃ) ছাহেবও রওজাতুল কাইউমিয়া” গ্রন্থে উল্লেখ করিয়াছেন, ইমামে রাব্বানী হযরত মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবের জন্মের কিছু দিন পূর্বে তাহার পিতা শায়খ হযরত আব্দুল আহাদ (রঃ) ছাহেব মোরাকাবায় নিমগ্ন অবস্থার কাশফি দৃষ্টিতে অবলোকন করেন যে, সমস্ত পৃথিবী নিবিড় অন্ধকারে আছন্ন।
আর সেই অন্ধকারের মধ্যে বাঘ, ভালুক, শুকর, বানর প্রভৃতি হিংস্র জন্তু মানব বংশকে আক্রমণ করিয়া ক্ষত বিক্ষত করিতেছে। এমন সময় হঠাৎ তাহার বক্ষদেশ হইতে একটি অতি উজ্জল নূর বাহির হইল। সেই নূরের আলোয় আলোকিত হইল সারা বিশ্ব এবং উক্ত নূর হইতে একটি বিদ্যুত চমকিয়া সমস্ত বাঘ, ভালুক, শুকর ইত্যাদিকে জ্বালাইয়া ফেলিল।
তিনি সেই নূরের মধ্যে দেখেন একটি সিংহাসন, যাহাতে একজন জ্যোতির্ময় পুরূষ নূরানী তাকিয়ায় হেলান দিয়া উপবিষ্ট এবং হাজার হাজার নূরানী লোক ও আসমানের ফেরেশতা তাহার সামনে আদবের সাথে দন্ডায়মান।
তিনি আরও দেখেন, পৃথিবীর সমস্ত অত্যাচারী, পাপাচারী, ধর্মভ্রষ্ট, বিধর্মী ও নাস্তিককে তাহার সামনে আনিয়া ভেড়া-বকরীর ন্যায় জবাই করা হইতেছে এবং এক ব্যক্তি ঘোষণা করিতেছে-ওয়া কুল জা-আল হাককু, ওয়া যাহাকাল বাতিলু, ইন্নাল বাতিলা কানা জাহুকা”-অর্থাৎ সত্য আসিয়াছে; মিথ্যা ধ্বংস হইতে চলিয়াছে। বস্তুত মিথ্যার ধ্বংস অবধারিত।
মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবের পিতা হযরত শায়খ মখদুম আব্দুল আহাদ এই বিষয়টি সেই জামানার শ্রেষ্ঠ বুজুর্গ হযরত শাহ কামাল কায়থেলী (রঃ) ছাহেবের নিকট বর্ণনা করিয়া ব্যাখ্যা চাহিলে তিনি হযরত আব্দুল আহাদ (রঃ) ছাহেবকে বলেন যে, অচিরেই আল্লাহতায়ালা আপনাকে এমন একটি পুত্র সন্তান দান করিবেন; যে এই দেশ হইতে সমস্ত বেদয়াত ও নাস্তিকতার মূল উচ্ছেদ করিয়া সুন্নতে মুহাম্মদীকে জারী করিবেন।
খোদাপ্রাপ্তি জ্ঞানের আলোকে শাহ্সূফী হযরত ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নসিহত-৮ এর “মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ) ও খাজা বাকীবিল্লাহ (রঃ)” কিতাব পৃষ্ঠা: ১৫ ও ১৬ হতে তুলে ধরা হয়েছে।
→ নসিহত: মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ) ও খাজা বাকীবিল্লাহ (রঃ) এর সব গুলো অধ্যায়
আরো পড়ুন:
→ পীরের প্রতি মুরিদের আদব সর্ম্পকে মোজাদ্দেদ আলফেছানী রা: এর উপদেশ
→ আদাবুল মুরিদের সবগুলা নসিহত একসাথে
→ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পরিচালনা-পদ্ধতির সব গুলো অধ্যায়