রমজানের তাৎপর্য ও ফজিলতঃ

“শাহানশাহে তরিকত বিশ্বওলী হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী নক্ শ্ বন্দী মোজাদ্দেদী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব”-এর খোদাপ্রাপ্তি জ্ঞানের আলোকে মাহে রমজান সম্পর্কিত মহামূল্যবান নসিহত”।

নসিহত খন্ডঃ- ২০, মাহে রমজান, নসিহত নং- ১২৩।

১/ রমজানের তাৎপর্য ও ফজিলত।
২/ রোজা খোদার নিকট অধিক প্রিয় হওয়ায় অন্তর্নিহিত কারণ।
৩/ রোজা হইল দেহের যাকাত।
৪/ রমজান ফজিলতের মাস।

রমজানের তাৎপর্য ও ফজিলতঃ

হিজরী বর্ষ পঞ্জিকার নবম মাসের নাম রমজান। এই মাস অত্যন্ত বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ। এই মোবারক মাসেই শ্রেষ্ঠতম আসমানী গ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হয়। এই মাসেই “শবে কদর“ নিহিত। চন্দ্র বৎসরের বারো (১২) মাসের মধ্যে একমাত্র রমজান মাসের কথাই কুরআন মজীদে উল্লিখিত আছে। আল্লাহপাক বলেন, অর্থাৎ – “রমজান সেই মাস, যাহাতে কুরআনকে অবতীর্ণ করা হইয়াছে।” (সূরা বাকারাহঃ আয়াত নং- ১৮৫)

ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত । যথাঃ ঈমান, নামাজ, রোজা, যাকাত ও হজ্জ্ব। অন্যতম রোকন বা ভিত্তি “রোজা“র জন্য রমজান মাসকে নির্ধারণ করা হইয়াছে। রোজা কি? রোজা ফার্সী শব্দ। ইহার আভিধানিক অর্থ উপবাস। আরবী ভাষায় রোজার প্রতিশব্দ “ছাওমুন”। ইহার মূলে আছে ছাওম। ছাওমুনের বহুবচন ছিয়াম। যাহার অর্থ বিরত থাকা। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে ছুবহে ছাদেকের প্রারম্ভ হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার ও স্ত্রী সহবাস হইতে বিরত থাকাই রোজা।

হিজরী দ্বিতীয় বর্ষে রোজাকে ফরজ বলিয়া ঘোষণা দেওয়া হয়। আল্লাহপাক বলেন, অর্থাৎ – “হে মোমিনগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হইয়াছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হইয়াছিল, যেন তোমরা পরহেযগারীর গুনে গুণান্বিত হইতে পার। অল্প কয়েকদিনের জন্য মাত্র। তোমাদের মধ্যে কেহ অসুস্থ থাকিলে অথবা ছফরে থাকিলে অন্য সময় হিসাব গণনা করিয়া রোজা রাখিবে।” (সূরা বাকারাঃ আয়াত নং- ১৮৩-১৮৪)

রোজা পালন করা প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীর জন্য ফরজ। রোজার ফরজিয়াতের উপর ঈমান রাখা অপরিহার্য। ইহা অস্বীকারকারী কাফের। হযরত আদম (আঃ) হইতে হযরত ঈসা (আঃ) পর্যন্ত সকল পয়গম্বরগণের সময়ে রোজা ফরজ ছিল। তবে কাহার আমলে কতদিন সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু শরীয়তে পাওয়া যায় না। ইসলামে নির্ধারিত সকল ইবাদতের মধ্যে রোজা মহান খোদাতায়ালার নিকট অধিক প্রিয়। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছেঃ রাসূলে পাক (সাঃ) বলিয়াছেন, মানব সন্তানের নেক আমল বাড়ানো হইয়া থাকে, প্রত্যেক নেক আমল দশ হইতে সাত শত গুন পর্যন্ত।

আল্লাহ বলেন, রোজা ব্যতীত। কেননা, রোজা আমারই জন্য এবং আমিই ইহার প্রতিফল দান করিব। সে আমারই জন্য আপন প্রবৃত্তি ও পানাহার ত্যাগ করে। (মেশকাত শরীফ)

গ্রন্থসূত্রঃ নসিহত- সকল খন্ড একত্রে, পৃষ্ঠা নং- ১০১৯ ।

রোজা খোদার নিকট অধিক প্রিয় হওয়ায় অন্তর্নিহিত কারণঃ

আল্লাহতায়ালা রোজাকে একান্ত আপনার বলিয়া ঘোষণা দিলেন- কেন? কি রহস্য আছে ইহাতে?
এক্ষেত্রে রমজান শব্দের ব্যাখ্যা প্রয়োজন। রমজান আরবী শব্দ। ইহার শাব্দিক অর্থ তাপাধিক্য বা তাপের উচ্চমাত্রা । ইহা “রমজ” ধাতু হইতে উৎপন্ন। “রমজ“- এর ব্যুৎপত্তিগত অর্থ পোড়ান, জ্বালান বা দহন করা।
রমজানের রোজা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় হওয়ার অন্তর্নিহিত রহস্য উক্ত রমজ (দহন) শব্দের মধ্যে নিহিত। ইহা সকলেরই জানা যে, খনিলব্ধ স্বর্ণ খাদ মিশ্রিত থাকে। খাদ মিশ্রিত স্বর্ণ ব্যবহার উপযোগী নহে। স্বর্ণকে ব্যবহার উপযোগী করিতে হইলে অর্থাৎ স্বর্ণকে খাদ মুক্ত করিতে হইলে ইহাকে দহন করিতে হয় তথা নাইট্রিক এসিডে পোড়াইতে হয়। এসিডে দগ্ধিভূত হইয়া সোনা খাদমুক্ত হয়। ইহার উজ্জ্বলতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায় ও ব্যবহার উপযোগী হয়।

মানবদেহে চারটি জড় উপাদান তথা আগুন, পানি, মাটি ও বাতাসের সমন্বয়ে গঠিত। চতুর্বিধ জড় উপাদানে গঠিত মানব শরীরে আরও এক জড় সত্ত্বা বর্তমান-যাহাকে “নাফস“ বলে। নাফসের উৎস জড় উপাদান হওয়াতে সংগত কারণেই ইহার বৈশিষ্ট বা স্বভাব অন্ধকারময়। যাবতীয় কুচিন্তা ও কু-স্বভাব নাফস হইতেই উৎপন্ন হয় । কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য, হিংসা, কিনা, রিয়া, কামনা-বাসনা ইত্যাদি অসৎ রিপুসমূহ নাফস হইতেই সৃষ্ট। সর্বদা খোদাদ্রোহিতায় লিপ্ত থাকা নাফসের জাত–স্বভাব। উল্লিখিত জড় বৈশিষ্ট্যসমূহকে নাফসের খাদ হিসাবে উল্লেখ করা যায়। যতক্ষণ পর্যন্ত নাফস খাদযুক্ত থাকে অর্থাৎ নাফসে উল্লিখিত তমদোষসমূহ থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত নাফস আল্লাহর শত্রু বলিয়া বিবেচিত।

আল্লাহপাক বান্দাকে স্ব স্ব নাফসকে খাদমুক্ত করিতে আদেশ দিয়াছেন। কিন্তু ইহা কিভাবে সম্ভব? স্বর্ণকে খাদমুক্ত করিতে যেমন নাইট্টিক এসিডে ফেলিয়া ইহার খাদসমূহকে জ্বালাইয়া ফেলিতে হয়, তবেই স্বর্ণ খাদমুক্ত হয়, তেমনি নাফসকে খাদমুক্ত করিতে হইলে তথা নাফসের অন্ধকার দোষসমূহ ঝাড়িয়া ফেলিতে হইলে নাফসকেও দাহন করা প্রয়োজন। কিন্তু জাগতিক আগুন দ্বারা কিংবা নাইট্রিক এসিড দ্বারা নাফসকে জ্বালানো যায় না। নাফসকে দাহনের জন্য যে অগ্নির প্রয়োজন হয় তাহা দেহে উৎপন্ন হয় কেবলমাত্র আনাহারের দ্বারা। একমাত্র অনাহারের অগ্নি নাফসকে জ্বালাইয়া ইহাকে খাদমুক্ত করিতে পারে, তথা ক্ষুধার আগুনে নাফস দগ্ধিভূত হইলে কেবল তখনই ইহা স্বীয় অনিষ্টকর দোষসমূহ পরিত্যাগ করিতে পারে, নাপাকি পরিত্যাগ করিয়া পবিত্রতার মাকামে পৌছাইতে পারে।

রোজার অর্থই হইল ছুবেহ ছাদেক হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনাহারে থাকা ও প্রবৃত্তিকে সংযত রাখা। রোজার অনাহারে দেহে উৎপন্ন আগুন আল্লাহর শত্রু নাফসে আম্মারাকে পোড়াইয়া তাহার অনিষ্টকর দোষসমূহ ত্যাগ করিতে বাধ্য করে। এই জন্য রোজা সর্ববিধ নেক আমলের মধ্যে আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়।

আল্লাহর শত্রু নাফসের সাথে যুদ্ধকে দয়াল নবী রাসূলে পাক (সাঃ) ‘‘জেহাদে আকবর” বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। যে কোন যুদ্ধেই বিজয়ের জন্য যুদ্ধাস্ত্রের প্রয়োজন। নাফসের সাথে যুদ্ধে রোজার অনাহার প্রতিরক্ষামূলক দায়িত্ব পালন করে। কাম, ক্রোধ, লোভ-মোহ, মদ-মাৎসর্য, হিংসা-কিনা, রিয়া, কামনা-বাসনা ইত্যাদির প্রভাবকে রোজায় সৃষ্ট আগুন দুর্বল করিয়া দেয় । তাই রাসূলে পাক (সাঃ) রোজাকে “ঢাল” বলিয়া আখ্যায়িত করিয়াছেন।

গ্রন্থসূত্রঃ নসিহত- সকল খন্ড একত্রে, পৃষ্ঠা নং- ১০২০ ।

রোজা হইল দেহের যাকাতঃ

ইসলামের পঞ্চ রোকনের এক রোকন যাকাত। ধনসম্পদের পবিত্রতার জন্য যাকাত দেওয়া ধনবানদের জন্য অপরিহার্য দায়িত্ব। যাকাত ধনসম্পদের পবিত্রতা আনয়ন করে। মানবদেহে এক টুকরা মাংশপিন্ড আছে- যাহার নাম কালব। কালব পবিত্র হইলে সমগ্র মানবসত্ত্বাই পবিত্র হয়। কালব নাপাক থাকিলে মানবদেহ নাপাক থাকে। কালবের অপবিত্রতা বা অপরিচ্ছন্নতার মূল কারণ নাফসের অন্যায় ও পাপাচার। যতক্ষণ পর্যন্ত নাফস পবিত্র না হইবে ততক্ষণ কালবও পবিত্র হইবে না। নাফসের খোদাদ্রোহিতা বন্ধ হইলেই কেবল কালবের পাপের খোলস খসিয়া পড়ে। পূর্বেই বলিয়াছি, নাফসের খোদাদ্রোহিতা দূর করার জন্য প্রয়োজন ক্ষুধার অগ্নি। আর রমজানের রোজায় দেহে সেই অগ্নি কিছুটা হইলেও উৎপন্ন হয়। সৃষ্ট অগ্নিতের নাফস দুর্বল হয়। ফলে কালব পবিত্রতার দিকে অগ্রসর হয়। আর কালবের পবিত্রতার উপর নির্ভর করে গোটা দেহের পবিত্রতা। ধনসম্পদের পবিত্রতার জন্য যেমন যাকাতের প্রয়োজন, তেমনি দেহের পবিত্রতার জন্যও যাকাতের পয়োজন। দেহের পবিত্রতার জন্য যে যাকাত নির্ধারিত, তাহাই হইল সিয়াম সাধন।

রাসূলে পাক (সাঃ) বলিয়াছেন – “নিশ্চয়ই প্রত্যেক জিনিসের জন্য যাকাত আছে । দেহের যাকাত রোজা।” (ইবনে মাজাহ)

গ্রন্থসূত্রঃ নসিহত- সকল খন্ড একত্রে, পৃষ্ঠা নং- ১০২০ ।

রমজান ফজিলতের মাসঃ

রমজান অতীব ফজিলতের মাস। এই মাসে বেহেশতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়, দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ রাখা হয় এবং শয়তান ও ইহার সহযোগীদের তথা দুষ্ট জ্বীনদের শৃংখলিত করা হয়।

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছেঃ- যখন রমজানের প্রথম রাত উপস্থিত হয় তখন সব জান্নাতের দরজা খুলিয়া দেওয়া হয় এবং পূর্ণ মাস ব্যাপী একটি দরজাও বন্ধ করা হয় না।

আল্লাহতায়ালা একজন ঘোষককে হুকুম প্রদান করেন, সে এই মর্মে ঘোষণা দেয়- ‘‘হে পূণ্যের আশাবাদী! অগ্রসর হও, হে অমংগলাকাংখী! পিছে হট। আরও ঘোষণা দেয়- আছে কোন ক্ষমাপ্রার্থী? তাহাকে ক্ষমা করা হইবে। আছে কোন প্রার্থনাকারী? তাহার প্রার্থনা কবুল করা হইবে। আছে কোন তওবাকারী? তাহার তওবা কবুল করা হইবে। সকাল পর্যন্ত এই আহবান অব্যাহত থাকে। ইফতারের সময় প্রতি রাত্রে আল্লাহতায়ালা দশ লক্ষ পাপাচারী ব্যক্তিকে মুক্তি দান করেন, যাহাদের জন্য জাহান্নাম অপরিহার্য হইয়া গিয়াছিল।”

হযরত ছালমান ফারছী (রাঃ) ছাহেব বলেনঃ- একদা রাসূলে পাক (সাঃ) আমাদিগকে শাবান মাসের শেষ তারিখে ভাষণ দান করিলেন এবং বলিলেনঃ- “হে মানবমন্ডলী! তোমাদের প্রতি ছায়া বিস্তার করিয়াছে একটি মহান মাস-মোবারক মাস, এমন মাস যাহাতে একটি রাত রহিয়াছে যাহা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। আল্লাহ উহার রোজাসমূহ করিয়াছেন (তোমাদের উপর) ফরজ এবং উহার রাত্রিতে নামাজ পড়াকে তোমাদের জন্য করিয়াছেন নফল।

যে ব্যক্তি সেই মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করিল সে ঐ ব্যক্তির সমান হইল যে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করিল, আর যে ব্যক্তি সে মাসে একটি ফরজ আদায় করিল সে ঐ ব্যক্তির সমান হইল যে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করিল। উহা ছবরের মাস, আর ছবরের ছওয়াব হইল বেহেশত। উহা সহানুভূতির মাস। ইহা সেই মাস যাহাতে মোমিনের রেজেক বাড়াইয়া দেওয়া হয়।”

হাদীস শরীফে আরও বর্ণিত আছেঃ- রাসূলে পাক (সাঃ) ইরশাদ করেনঃ রমজান মাসে পাঁচটি বিষয় আমার উম্মতকে এমন দেওয়া হইয়াছে যাহা পূর্ববর্তী কোন উম্মতকে দেওয়া হয় নাই।

  • ১/ রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশ্কের সুগন্ধি হইতেও বেশী সুগন্ধময়।
  • ২/ ফেরেশতাগণ ইফতার পর্যন্ত রোজাদারের গুনাহ মাফির জন্য দু’আ করিতে থাকে।
  • ৩/ দুর্বৃত্ত শয়তানদেরকের এই মাসে শৃংখলিত করা হয়।
  • ৪/ প্রতিদিন আল্লাহতায়ালা জান্নাতকে সুসজ্জিত করেন এবং বলেন, “ আমার নেক বান্দারা দুনিয়ার দুঃখ ক্লেশ ত্যাগ পূর্বক শীঘ্রই (বেহেশতে) আসিতেছে।”
  • ৫/ রমজানের শেষ রাত্রে রোজাদারেদের গুনাহ মাফ করিয়া দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসা করা হইলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাঃ)! এই ক্ষমা কি শবে কদরে হইয়া থাকে? রাসূলে পাক (সাঃ) বলিলেন, না , বরং নিয়ম হইলো-মজদুর কাজ শেষ করার পরেই মুজুরী পাইয়া থাকে।

রমজানে মাসব্যাপী আল্লাহর করুনাবৃষ্টি অবিরাম ধারায় বর্ষিত হইতে থাকে। এই মোবারক মাসকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হইয়াছে। যথাঃ প্রথম দশ দিন আল্লাহর রহমত নাযিলের, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফেরাতের অর্থাৎ ক্ষমা ও গুনাহ মাফের এবং শেষ দশ দিন নাজাতের তথা দোযখ হইতে মুক্তি পাইবার সৌভাগ্যকাল। রোজাদারের জন্য দুইটি আনন্দ আল্লাহপাক নির্ধারিত করিয়া দিয়াছেন।

প্রথমতঃ রোজাদার যে আনন্দ ইফতারে সময় লাভ করিয়া থাকে।

দ্বিতীয়তঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহপাকের সহিত সাক্ষাতের সময় যাহা রোজাদার অনুভব করিবে। সারা রমজান মাসই ইবাদতের মাস। দিনে রোজা, রাত্রে নামাজ। সিয়ামুন নাহারে ওয়া কিয়ামুল লাইল। দিবারাত্র ব্যাপী এমন ইবাদতের মাস আর দ্বিতীয়টি নাই। তাই রমজান কল্যাণময় মাস। রমজান শ্রেষ্ঠমত মাস।

হে জাকেরান! তোমরা রোজার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফযিলত সম্পর্কে কিছু বুঝিতে পারিলে। তোমরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে রোজা পালন কর। রমজান মাসে শুধু পূণ্য আর পূণ্য। এই মাস পূণ্য অর্জনের প্রতিযোগিতার মাস। তোমরা রোজা রাখিবে, যাহারা পার তাহারা কুরআন তেলাওয়াত করিবে, অধিক নফল ইবাদত করিবে, তরিকতের কাজ সমূহ যথাযথ আদায় করিবে। মনে রাখিও, এই মাসের ইবাদত-বন্দেগীতে আল্লাহপাক এত অধিক খুশী হন, যাহার তুলনা নাই। একটি নফল এই মাসে একটি ফরজের সমপর্যায়ে হয়। একটি ফরজ ৭০টি ফরজের সমান হয়। কাজেই মহব্বতের সাথে রমজানের রোজা ও অন্যান্য বন্দেগী পালন কর।  আল্লাহপাক তোমাদিগকে দয়া করুন। আমীন !

গ্রন্থসূত্রঃ নসিহত- সকল খন্ড একত্রে, পৃষ্ঠা নং- ১০২১ ও ১০২২ ।

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel