রাসূল পাক (সাঃ)’কে ভালোবাসার নামই ঈমান।
হযরত রাসূল পাক (সাঃ) কে ভালোবাসার নামই ঈমান। মুমিন হওয়ার আসল রহস্য জানুন।
আসুন জেনে নিই কোরআন ও হাদিসের আলোকে।
“নবী মু’মেনদের নিকট তাদের জীবনের চেয়ে অধিক শ্রেষ্ঠ এবং তার বিবিগন মু’মেনদের মাতা। “(সূরা আহযাব, আয়াত নং ৬)।
“(হে হাবীব!) আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাসো, তাহলে আমাকে অনুসরন কর, তবে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন, তোমাদের পাপসমূহ মাফ করবেন।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৩১)।
রাসূল পাক (সাঃ) বলেনঃ
“আমি প্রত্যেক মু’মেন মুুসলমানদের জন্য গোটা সৃষ্টিকুলের চেয়ে অধিক স্নেহপরায়ন ও মমতাবান।”
“যে ব্যক্তি নিজের পিতা মাতা, সন্তান সন্ততি ও অন্যসকল মানুষ অপেক্ষা আমাকে বেশী ভাল না বাসবে, সে মু’মেন হতে পারবে না।” (বোখারি শরিফ ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৭, মুসলিম শরীফ, পৃষ্ঠা নং ৪৯)।
শায়ের বলেনঃ
“যিনি রাসূল (সাঃ) কে পেয়েছেন, তিনি ঈমান ও মাওলাকে পেয়েছেন।”
“রাসূলে খোদা (সাঃ) এর এশক বা মহব্বত যার হৃদয়ে নেই, সে হাজারও মু’মেন দাবি করলেও মু’মেন হবে না।”
“তার পবিত্র নামই অশান্ত হৃদয়ে শান্তি দিতে পারে।”
“আল্লাহ কাউকে কর্মের জন্য শাস্তি দিতে ইচ্ছে করলেও রাসূল পাক (সাঃ) সুপারিশ করে মুক্তি দেবেন, আর রাসূল (সাঃ) কারো প্রতি অসন্তুষ্ট হলে তাকে বাঁচাবার আর কেহ নেই।”
৩য় হিজরীতে কাফেরদের সাথে উহুদ প্রান্তরে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে কাফেরদের দ্বারা আঘাত পাপ্ত হলে, রাসূল পাক (সাঃ) জ্ঞান হারিয়ে ফেললে কাফেররা ঘোষনা করল, মোহাম্মদ নিহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে রাসূল (সাঃ) এর আশেক প্রেমিকগন ঘরে থাকতে পারলেন না। মদীনার মহিলারা পর্যন্ত রাসূল (সাঃ) এর মহব্বতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন।
আফিফা নামে এক মহিলা সাহাবা রাসূল পাক (সাঃ) এর শাহাদতের কথা শুনে সহ্য করতে না পেরে পাগলিনীর মত উহুদের দিকে দৌড়াচ্ছেন। পথে এক সাহাবীর সাথে দেখা তিনি বললেন, আফিফা কোথায় যাচ্ছ? এ যুদ্ধে তোমার স্বামী শাহাদৎ বরন করেছে, আফিফা বলেন, ইন্নালিল্লাহ। বল, দয়াল রাসূল (সাঃ) কেমন আছেন?
কিছু দূর গেলে অন্য এক সাহাবি বলেন, হে আফিফা পাগলের মত কোথায় যাচ্ছ? তোমার পিতা এ যুদ্ধে শাহাদৎ বরন করেছে। আফিফা বলেন, ইন্নালিল্লাহ। বল, দয়াল রাসূল (সাঃ) কেমন আছেন? আরও কিছু দূর অগ্রসর হলে এক সাহাবি বলল, হে আফিফা, পাগল হয়ে কোথায় যাচ্ছ? তুমি জাননা এ যুদ্ধে তোমার সন্তান ও ভাই শাহাদৎ বরন করেছে। আফিফা বলেন, ইন্নালিল্লাহ। বলো দয়াল রাসূল (সাঃ) কোথায় আছেন? কেমন আছেন? ঐ সাহাবী বললেন বোন! তোমাদের মত আশেকদের জন্যই আল্লাহ তার রাসূলকে বাঁচিয়ে রেখেছেন!
সাহাবীর কাছে সংবাদ পেয়ে আফিফা পাগলের মত দৌড়িয়ে পাহাড়ের চুড়ায় গিয়ে বলিতে ছিলেন, ইয়া রাসূল আল্লাহ এ যুদ্ধে আমার স্বামী, আমার পিতা, আমার সন্তান, আমার ভাই শহীদ হয়েছে, আমার মনে কোন দুঃখ নেই, আপনাকে দেখে আমার মনের সকল জ্বালা যন্ত্রনা দূর হয়ে গেছে। রাসূলে পাক (সাঃ) তখন আনন্দে চোখের অশ্রু ফেলে সাহাবিদের উদ্দেশ্য বলল, তোমরা আমার একজন আশেক এবং মুমেন বান্দা দেখে নাও। তখন সকল সাহাবীরা আনন্দে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল।
সুতরাং দেখা যায়, সকল সম্পর্কের চেয়ে আমার দয়াল রাসূলের সম্পর্ক যে কত বেশী, আফিফা (রাঃ) এর ঘটনায় তা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সূত্র: সত্যিই কি রাসূল (সাঃ) গরীব ছিলেন?
নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।