জন্ম-মৃত্যু, সূচনা ও অবসান
জন্ম ও মৃত্যু, সূচনা ও অবসান, এই চিরন্তন ঘূর্ণায়মান চক্রের মাঝে কোথাও একটি রহস্য লুকিয়ে থাকে। পাঁকে পা মিশিয়ে পথিক চলেছে, চোখে বিভ্রম, মনে স্বপ্ন। প্রতিটি পদক্ষেপে অভ্যন্তরীণ সঙ্গের সঙ্গে মিলিত হতে থাকে, একে একে প্রত্যেকের পায়ের ছাপ মুছে যায়, ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় গতকালের পদচিহ্ন। কিন্তু যা কিছু হারায়, তা কি আসলেই হারায়? না কি, পেছনে ফেলে চলে যাওয়া প্রতিটি মুহূর্ত নতুন কিছু অর্থ নিয়ে ফিরে আসে, অদৃশ্যতার অন্তরালে?
কর্ম ও সঙ্গের বাঁধনে, প্রতিটি অনুভূতি রূপ নেয় নতুন কোনো বাস্তবতায়। আজকের পদক্ষেপ যেন আগামীর অন্তিম স্বপ্ন হয়ে ধরা দেয়। কাল যেটি ছিল, তা আজ আর নেই, কারণ সময়ের অক্ষরে, স্থান ও অভ্যন্তরের মেলবন্ধনে নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য সঞ্চিত হয় বীজ। কিন্তু সেই বীজ কি খুঁজে পায় তার প্রকৃত পরিচয়? না কি সে অজানা এক মহাকাব্যিক তালে নাচে, সময়ের হাত ধরে, যেখানে স্থান শুধু এক আত্মা, এক অভ্যন্তরের প্রতিধ্বনি?
প্রশ্ন ওঠে, যা কিছু ঘটে, তা কি সত্যিই পূর্ব নির্ধারিত? নাকি তা এক নির্দিষ্ট পথের ওপর সঞ্চালিত কর্মের ফলস্বরূপ? আমরা কি কেবল ছায়ার মতো আঁকড়ে ধরছি অনির্দিষ্ট এক বাস্তবতাকে, যেখানে সঙ্গের অভিঘাত আমাদের পথকে নির্দেশ করে, যেখানে প্রত্যেক অনুভূতি, প্রতিটি গতি নতুন জীবনের সূচনা? এক চিরস্থায়ী শূন্যতা থেকে উঠে আসে শাশ্বততার পূর্ণতা, এক সঙ্গেই মিলিত হয় প্রতিটি ক্রিয়ার মৌলিকতা।
সঙ্গে-সঙ্গে এক হতে থাকা, ভুলে যাওয়া এবং আবার মনে পড়া, এই চিরকালীন খেলাই কি আমরা? রোদ যখন জেগে ওঠে, তখন কি তুমিই তুমি আর আমি আমি নই, নাকি পুনরায় এক সত্তা হয়ে আমাদের সমস্ত সঙ্গের নির্মাণ শুরু হয়? তখন কি সবকিছু আগের মতো, নয়তো একটি নতুন জগতের আদান-প্রদান শুরু হয়ে যায়, যেখানে সূচনা ও অবসান শুধুমাত্র এক আধ্যাত্মিক রূপে প্রকাশ পায়?
এটি কি শুধু একটি ক্ষণস্থায়ী বস্তু, নাকি একটি গভীর অভ্যন্তরের স্পন্দন, যা আমাদিগকে আবার মনে করিয়ে দেয়: “এটাই তো আমাদের পথ, এটি হতেই হবে!”
-এভাবেই, এক আধ্যাত্মিক, দার্শনিক উপলব্ধি ও জীবনভাষ্যের মধ্যে গতি, সঙ্গ, এবং কর্মের সম্বন্ধ নিয়ে এক গভীর ধারা প্রবাহিত হতে থাকে, যেখানে প্রতিটি অঙ্গ, প্রতিটি পদক্ষেপ এক নতুন বিস্ময়ের জন্ম দেয়।
– ফরহাদ ইবনে রেহান
০২/০৩/২০২৫