১৫ই রমজান ইমাম হাসান (আঃ)-এর শুভ আগমন
খাতুনে জান্নাত, সাইয়্যেদাতুননেছা হযরত ফাতেমা (আঃ) এর প্রথম সন্তান হলো হযরত ইমাম হাসান
(আঃ)। পিতা খলিফাতুর রাসুল, আমীরুল মুমিনীন, হযরত আলী (আঃ)। ইমাম হাসান (আঃ) এর দাদা খাজা আবু তালিব এবং দাদী ফাতেমা বিনতে আসাদ (রাঃ)। নানা হলেন হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এবং নানী হলেন হযরত খাদিজা বিনতে খোয়াইলীদ (রাঃ)।
তাঁর জন্ম হয় ৩য় হিজরীর ১৫ই রমজান মাসের মদীনা শরীফে। হযরত ইমাম হাসান (আঃ) এর জন্মের শুভ সংবাদ শুনে হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রাণপ্রিয় মেয়ে হযরত ফাতেমা (আঃ) এর বাড়ীতে ছুটে গেলেন এবং খুশীতে আত্মহারা হয়ে নবজাতক শিশুকে কোলে তুলে নিলেন। হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজে শিশুর ডান কানে আযান এবং বাম কানে ইকামত উচ্চারণ করেন এবং তাঁর নাম রাখেন হাসান।
হযরত রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ “হাসান মিন্নি ওয়া আনা মিনাল হাসান” অর্থাৎ- হাসান আমার থেকে এবং আমি হাসান থেকে। হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এ বাণীটি খুবই তাৎপর্য এবং রহস্যময় জগতের ইশারা জ্ঞাপক বাণী ইহা। হযরত রাসুল (সাঃ) হতে হাসান (আঃ) এ কথাটি কিছুটা সহজবোধ্য হলেও হাসান (আঃ) হতে রাসুল (সাঃ) কিভাবে, তা এক গভীর ভাবনার বিষয়।
মূলতঃ হাকিকতের জগতে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, হাসান (আঃ) এর মোকাম হতে সৃষ্টির সৃজনের দিক নির্দেশিকা প্রকাশ পাচ্ছে সূক্ষ্ম সৃষ্টি রূপে, যেখানে জীবনের জীবাণু অনু-পরমাণু রূপে প্রকাশ যা আলমে মালকুত রূপে বিধৃত আছে।
মালামাতকারী নফস- নফসে লাওয়ামা দ্বারা ক্রিয়া সংঘঠিত হচ্ছে। এখানে কালব গঠন সম্পর্কীয় বিষয়টি তিন জামাতে (জামাদাত, নাবাদাত ও হায়ানাত) স্থূলরূপে বিকাশ ও প্রকাশ পাবার স্তর এখান থেকে। পাক পাঞ্জাতন নযুলে ধাবিত হবার চতুর্থ স্তরের বিকশিত অবস্থাটি হাসান রূপে সাব্যস্ত আছে।
আরেফগণ ইহা অবগত আছে যে, স্বয়ং আল্লাহ্পাক পাঞ্জাতন রূপে (‘নাহনু’- আমরা) বিকশিত আছেন সৃষ্টিতে এবং তাঁর বিকশিত হবার প্রথম স্তরের নাম ও রূপের বিবর্তন ধারায় এসে নযুলের চতুর্থ স্তরে প্রকাশ হাসান রূপে বিধায় হযরত রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “হাসান মিন্নি ওয়া আনা মিনাল হাসান।” মালাকুত জগতে হাসানের গুণ বৈশিষ্ট্য বাসারীয়াত বা জেসমানীয়াতে এসেও তাই প্রকাশ পেয়েছে অর্থাৎ ভিতর বাহিরে তিনি হাসান মানে সুন্দর অর্থাৎ তিনি আল্লাহর গুণে গুণান্বিত বা মোহাম্মদী গুণে গুণান্বিত আছেন এবং মোহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি পরিপূর্ণ সমর্পিত অবস্থায় বর্তমান।
– সূত্রঃ- বেহুঁশের চৈতন্য দান, পৃষ্ঠা ৪১৯-৪২০, (কাজী বেনজীর হক চিশতী নিজামী)