হোমপেজ ইলমে মারেফত প্রভাতের কোরান

প্রভাতের কোরান

284
Advertisement:
IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

প্রভাতের কোরান

“ইননাহু লাকুরআনুল কারিম”
অর্থ: নিশ্চয়ই উহা অবশ্যই কারামতওয়ালা কোরান। (৫৬:৭৭ নং আয়াত)

“ফি কিতাবিন মাকনুনিন”
অর্থ: কেতাবের মধ্যে সুরক্ষিত। (৫৬:৭৮)

“লা ইয়ামাসসুহু ইলালল মুতাহহারুন”
অর্থ: পবিত্রগণ ছাড়া উহা (কেহই)স্পর্শ করিতে পারে না।

“তানজিলুন মিররাববিল আলামিন”
অর্থ: রাব্বুল আলামিন হইতে নাজিল করা হইয়াছে।

IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

ব্যাখ্যা:

মহানবীর মহা পবিত্র ঠৌট মোবারক হতে আল্লাহর কালাম নাজেল হচ্ছে। আর উহাকেই রাব্বুল আলামিন হইতে নাজেল হওয়া কথাটি বলা হয়েছে।এই বিষয়টি চিন্তাশীলেরা গবেষণা করেন। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-৮২৮ পৃষ্ঠা)

আল্লাহর পাঠানো এক একজন মহাপুরুষই হলেন জীবন্ত কেতাব এবং সেই মহাপুরুষদেরকে যথাযথ অনুসরণ করাটাই হলো কেতাব তেলাওয়াত করা।আল্লাহ প্রদত্ত মহাপুরুষকে তেওলায়াত করা অর্থ সেই মহাপুরুষের স্বভাবচরিত্র, আচার-ব্যবহার এবং চারিত্রিক গুনা বলি দেখেশুনে অনুসরণ করা। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-১৬৭ পৃষ্ঠা)

আসলে উলঙ্গ সত্য কতাটি বলতে গেলে বলতে হয় যে রুহুল আমিন হলেন মহানবীর আপন আধ্যাত্মিক প্রচ্ছবি। ইহা জগৎময় বক্তও হতে পারে আবার যে কোনোরূপ মূর্তি ধারণ করতেও পারে। ইহা স্থানকালের (টাইম অ্যান্ড স্পেস) সব রকম মানুষের আদি এবং আসল রূপ। এই রূপের মাঝে প্রত্যাবর্তন করাই মানবজীবনের পরম এবং চরম সার্থকতা। আল্লাহর নিকট মানুষের প্রত্যাবর্তন করার তথা ফিরে আসার অর্থটিও ইহাই। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-৬৩ পৃষ্টা)

রুহুল কুদ্দুস নাজেল করাটি অতীতকালের মধ্যে ধরে রাখা যায় না, বরং সর্বকালে সর্বযুগে যারা বিশ্বাসী এবং সঠিক পথপ্রাপ্ত আত্মসমর্পণকারী, তাদের জন্য রুহুল কুদ্দুস পরিপূর্ণরূপ ধারণ করে পরিচালিত করেন। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-৫৭ পৃষ্টা)

আল্লাহর পূর্ণ পরিচয়টি যে মানুষের পবিত্র নফসের মধ্যে উদ্ভাসিত হয়েছে সেই মানুষটিকে কোনো ধর্মের দলীয় সাইনবোর্ড দিয়ে পরিচয় করা যায় না, বরং সেই মানুষটি সার্বজনীন একজন মহাপুরুষ। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-১৮৮ পৃষ্টা)

কোরান নাজেল হওয়ার কথাটি সর্বকালীন এবং সার্বজনীন একটি রহস্যময় বিষয়।যিনি অতি উচ্চস্তরের ধ্যানসাধনার মাধ্যমে সাধক হয়েছেন, তাঁর নিজের ভেতরে পূর্ণাঙ্গ দর্শনটির যে পাঠ উহা হতে নাজেল হয় তথা বাহির হয় তাকেই বলা হয়েছে কোরান। সমস্ত অতি উচ্চস্তরের সাধকদের যিনি প্রধান তথা সরদার সেই মহানবী মুহাম্মদ সা: এর নিকট যে আরবি কোরানটি নাজেল হয়েছে উহাই সর্বশ্রেষ্ঠ। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-২৪০ পৃষ্ঠা)

আল্লাহর আপন জাত নুরের নুরে মুহাম্মদি নাম ধারণ করে সেই নুরের মাধ্যমে বিচিত্র সৃষ্টিরূপে আল্লাহর বিকাশ ও প্রকাশ বিজ্ঞানকে কিতাব বলা হয়। আল্লাহর এই বিকাশ বিজ্ঞানের সর্বশ্রেষ্ঠ রূপটি ধরা পড়ে মানবদেহে। মানবদেহকে আল কিতাব বলা হয়। আল কিতাবের সর্বশ্রেষ্ঠ জাহেরি রূপ হলো এই মানব দেহটি এবং বিকাশ বিজ্ঞানটি হল বাতেনী কর্মফল। নুরে মুহাম্মদি এই আল কিতাবের জাহেরী এবং বাতেনি প্রকশ ও বিকাশের মূল উৎস। নিজের দেহটিকে পাঠ করা তথা আপনদেহের মাঝে আপনার অনুশীলন করার অপর নামটি হলো আল কিতাব পাঠ করা। নিজের দেহটি হল সকল প্রকার জ্ঞানের মূল উৎসের ভান্ডার। সুতরাং যাহা আছে এই বিশ্বব্রহ্মান্ডে তাহা আছে একটি মানবদেহে। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-৯১ পৃষ্টা)

আল্লাহ বলেছেন, রসুলগণের মধ্যে তিনি কারো সঙ্গে কথা বলেছেন। এই কতাটির গভীর রহস্য অধম লিখকের পরিষ্কার জানা থাকলেও অপরিষ্কারের ভান করে বলতে হচ্ছে যে তিনি (আল্লাহ) রসুলদের মধ্যে অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছেন। (কোরানুল মজিদ: কালান্দার জাহাঙ্গীর-৩২৩ পৃষ্টা)

বেলায়তের রসুল, সুফি কবি সাধক শাহজাহান শাহ মস্তান সির্হু রাহনুমা তার সংযমের সংবিধান কিতাবে লিখেন: “সব কথা রাসুল কইয়া, কোরান -হাদিস গেছে দিয়া, সব কিছু কোরানে ভরা, দেখ কোরান রিচার্স করিয়া। “তিনি আরো বলেন “কোরান হল কর্মের সংবিধান, বলে গেছেন রাসুল ভাই” তিনি আরো বলেন-“আদম সুরতে কোরান মাননি?” কোরান আদমের সুরত নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রকাশিত। (ইনসান সুরত নয়)।

সুতরাং বলা যায় যে, কোরান দুই প্রকার যথা: একটি মেজাজি কোরান অপরটি নুরী কোরান। নুরী কোরানের প্রতিচ্ছবিই হল মেজাজি কোরান। যিনি জাগ্রত রুহের অধিকারী তিনিই নুরী কোরান। নুর কাগজে আর পাতা, চামড়া থাকে না। নুর থাকে কলবে। এই কলবের নুরকে জাগিয়ে তুলাকেই বলা হয়েছে প্রভাতের কোরান। এই প্রভতের কোরানকে ফুটিয়ে তোলার জন্য সালাতের প্রয়োজন যা সুরা বনীইসরাইলে ৭৮ নং আয়াতে বর্নিত হয়েছে। একজন মহাপুরূষ হল আল কিতাব। এই কিতাব হতে যা বের হয় তা হল আল কোরান। কারণ মহাপুরুষ আপন নফস হতে কিছু বলেন না যা বলেন তা হল অহি তথা কোরান। মেজাজি কোরানকে স্পর্শ করতে মেজাজি অযু করতে হয়, আর হাকিকি কোরানকে স্পর্শ করতে হলে হাকিকি অযু তথা খান্নাস মুক্ত হতে হয়।

– আর এফ রাসেল আহমেদ