হাকিকতে কোরানের পরিচয়।
কোরান কি:
কোরানিক দর্শনে কোরান শব্দের অর্থ হল দেহবিজ্ঞান, আপন দেহ খুটিয়ে খুটিয়ে বিশ্লেষণ করা, জীবন প্রদীপ, চেতনাদায়ী শক্তি, আপন মন পাঠ করা, বিশুদ্ধকরণ প্রসাধন, গুরুর চরিত্র পাঠ,মিথ্যার অবসায়ন, সৎস্বভাব অর্জনের নির্দেশিকা, ঐশী প্রত্যাদেশ, সত্যের দ্রুতি, নবায়ণ, বিকাশ বিজ্ঞান, জীবনের সমক্য পরিচয়, স্বরূপের সন্ধান, রূহের জাগরণ, নফসের কর্তা, সিদ্ধপুরুষ ইত্যাদি।
কোরানের সংজ্ঞা:
যাহা পাঠ করিলে প্রকৃতির প্রকাশ ও বিকাশের সমক্য পরিচয় লাভ করা যায় অথবা আপন দেহের অভ্যন্তরে পরিভ্রমণ করে স্বীয়সত্তার পরিচয় আবিষ্কার বিজ্ঞানকে কোরান বলে। অথবা মহাপুরুষের চরিত্র বিচার ও বিশ্লেষণ করার প্রক্রিয়াই হল কোরানিক চরিত্র। একজন জাগ্রত রুহের অধিকারীই হলেন কোরানের জীবন্ত দর্শন।
কোরানের পরিচয় কখন প্রকাশ হয়:
কোরান আল্লাহর আমানত, সেই আমানতের জিম্মাদার মানুষ। যার মধ্যে সর্বপ্রথম কোরানের আলো ফুটে উঠে তিনি হলেন আদম। কোরান আল্লাহর পরিচয়, যে মানুষটি নিজের মধ্যে আপন রবরূপে পরিচয় লাভ করেন তিনিই সাহেবে কোরান তথা আদম (ইনসান নহে)। যিনি সৃষ্টি এবং স্রষ্টার পরিচয় সমক্যরূপে জানেন তিনিই জীবন্ত কোরান।
আদম হতে শুরু করে সকল মহাপুরুষগণই আল্লাহর পরিচয় তথা আল্লাহর কেতাব, মহানবী হলেন শুরু এবং শেষ কোরান। সকল মহাপুরুষই আলে কোরান, তথা কোরানের ধারক ও বাহক। আরবি কোরানের আনুষ্ঠানিক সংকলন হয় হযরত উসমান হতে। তাই তাকে জামিউল কোরান বলা হয়, হযরত উসমান প্রতীকী কোরানকে কাগজের পাতায় প্রথম সংকলন করেন।
আসলেই কোরান নূর। নূর কাগজের পাতায় থাকে না, নূর থাকে মানুষের কলবে। নবী এবং রাসূলগণ হলেন আল্লাহর নূর। আল্লাহর নূরের অপর নাম হল আল কোরান। এই কোরানকে অপবিত্র অবস্থায় তথা খান্নাস মুক্ত না হয়ে স্পর্শ করা যায় না, প্রভাতের কোরানকে স্পর্শ করতে হলে অবশ্যই ধ্যানসালাত করতে হবে।
এই ধ্যানসালাতের মাধ্যমেই প্রভাতের কোরানকে ফুটিয়ে তোলার সর্বজনীন প্রক্রিয়া। তাই জান শরীফ শাহ বলেছেন- “কিসের নামাজ কিসের রোজা। কিসের কোরান নূরে হক বিনা সকলই বেজান।।
– আর.এফ রাসেল আহমেদ।