বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী এবং এক চোরের ঘটনা।
এক রাত্রিতে গাউসুল আজম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) ছাহেবের গৃহে এক চোর চুরি করিবার জন্য গিয়াছিল। কিন্তু গাউসুল আজম (রাঃ) ছাহেবের গৃহে প্রবেশ করিয়াই সেই চোর তাহার দৃষ্টি হারাইয়া ফেলে ও অন্ধ হইয়া যায়। সে আর চোখে দেখিতে পাইল না। তাই সে আর বাহিরে বাহির হইবার পথ খুঁজিয়া পাইল না।
এমতাবস্থায় সেই চোর এক কোনে বসিয়া ভয়ে বিহবল হইয়া কাঁদিতে লাগিল ও আল্লাহতায়ালার জেকেরে নিমগ্ন হইল। সারা রাত ধরিয়া সেই চোর আল্লাহর নিকট ক্রন্দন করিতে লাগিল। নিশীর শেষভাগে আল্লাহপাক গাউসুল আজম (রাঃ) ছাহেবকে জানাইলেন, “হে গাউসুল আজম! আজ রাত্রিতে এই বাগদাদ শহরে যে ব্যক্তি ঘুমায় নাই ও সারা রাত্রি ধরিয়া আল্লাহ্তায়ালার জেকেরে কাটাইয়াছে; তাহাকে তাওয়াজ্জুহ দ্বারা আপনি ওলীর দরজায় পৌঁছাইয়া দিন।”
হযরত গাউসুল আজম (রাঃ) ছাহেব তদীয় অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা দেখিলেন, সমগ্র বাগদাদ শহরে সকল ব্যক্তিই ঘুমন্ত ও আল্লাহর জেকের হইতে গাফিল। একমাত্র ব্যতিক্রম ঐ আগন্তক। তখন হযরত গাউসুল আজম (রাঃ) ছাহেব এক খাদেমকে বলিলেন, “আমার ঘরে একটা চোর চুরি করার জন্য ঢুকিয়া অন্ধ হইয়া গিয়াছে। সেই চোর এখন আল্লাহর জেকেরে মত্ত। তাহাকে তুমি ধরিয়া নিয়া আস।” সেই ব্যক্তিকে যখন হযরত গাউসুল আজমের নিকট আনা হইল; সে ক্ষমা চাইয়া বলিল, আমি ভুল করিয়াছি, আমি না বুঝিয়া আপনার গৃহে চুরি করিতে আসিয়াছিলাম। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। আমি জীবনে আর চুরি করিব না।
হযরত গাউসুল আজম (রাঃ) ছাহেব বলিলেন, “আপনি অজু করিয়া আসেন।” তিনি অজু করিয়া আসিলে হযরত গাউসুল আজম (রাঃ) ছাহেব তাওয়াজ্জুহ এত্তেহাদী দ্বারা তাহার দেলকে জিন্দা করিয়া আল্লাহ্পাকের দিকে ঘুরাইয়া দিলেন। সেই দেল আল্লাহ্পাকের প্রেমে পাগল হইল।
তাই একজন আশেক কবি গাহিয়াছেনঃ-
“যাহার কৃপায় চোর সাধু হয়
তুমিতো মহাজ্ঞানী,
হস্তে দুরাচার, পাইল নিস্তার
ব’লেগো সত্য বাণী,
গাউসুল আজম,
পীরে মাজম মহীউদ্দিন জিলানী।”
তথ্যসূত্রঃ [শাহসূফী বিশ্বওলি ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নসিহত-সকল খন্ড একত্রে, নসিহত নং ২৩, পৃষ্টা নং ২২৫-২২৬]