নিজ পীরের প্রতি আদব সম্পর্কে শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরীর ৩০টি বানী।
“হে জাকেরান! তোমরা পীরের খেদমত কর এবং প্রদও তালিম অনুযায়ী চর্চা কর, সাধনা কর।”
“পীরের অসন্তুষ্টি মুরিদের জন্য দুর্ভাগ্যের কারন।”
“পীরতো তিনিই, যিনি মুরীদের বাতেনী অপবিত্রতা পরিস্কারকারী।”
“পীরের হাতে মুরিদকে এমন ভাবে থাকিতে হয় যেমন ধৌতকারীর হাতে মুর্দা থাকে।”
“পীরের দিলে দিল মিশাইলে ক্বালব হবে রৌশনি গো দেহ হবে নূরানী।”
“পীরের তাওয়াজ্জুহ এওেহাদীর প্রয়োগে মুরিদের রুহ তদীয় দৈহিক খাঁচা হইতে বাহির হইয়া ঊর্ধ্বদিকে গমন করে।”
“পীরই একমাত্র ব্যক্তি, যাহার অসিলায় মানুষ মহিমান্বিত আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছায়, যাহা দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট।”
“পীরের অসন্তুুষ্টিই মুরিদের দুর্ভাগ্যের কারন।”
“পীরের প্রতি প্রেম, ভক্তি বা মহব্বত জাতি পর্যায়ে উন্নীত করিতে না পারিলে পীরের সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব নয়।”
“পীর ও মুরিদের খেলা অত্যান্ত কঠিন। মুরিদকে বিপদ সমুদ্রে নিক্ষেপ করিয়া পীর সাগরপারে বসিয়া থাকেন।”
“পীরকে ভক্তি শ্রদ্ধা সবচেয়ে বেশি করিতে হয়। কারন দুনিয়ার সমস্ত ঋন পরিশোধ করা গেলেও পীরের ঋনকে পরিশোধ করা যায়না।”
“তোমরা যদি খোদা তায়ালাকে পাইতে চাও, তবে পীরের কদমে জান-মাল বিসর্জন দাও।”
“মনে রাখিও, পীরের দরবারের ধুলাবালি আশেকানদের চোখের সুরমা।”
“পীরের সুরাতে মেছালীকে যে মুরিদ ধরিতে পারে, সে না চাইতেই পীরকে সর্বদাই নিকটে পায়।”
“পীরের দয়াতেই মুরিদ চিরস্থায়ী জীবনের সন্ধান পায়, অদৃশ্য জগত অবলোকন করে। মুরীদ জর জগৎ, নূরের জগৎ ও সিফাতের জগৎ পার হইয়া খোদাতায়ালার সান্নিধ্যে অর্জন করে।”
“আদবের সাথে সাথে পীরকে ভালবাস, মহব্বত কর। পীরের ইশারা বুঝিবার চেষ্টা কর। পীরের যে কোন হুকুম পালনের জন্য অদম্য সাহস রাখ।”
“নিজ পীরের প্রতি এমন বিশ্বাস রাখিবে যে, ‘পীর ভিন্ন অন্য কেহই আমাকে খোদাতায়ালা পর্যন্ত পৌঁছাইয়া দিতে পারিবে না।'”
“যে মুরীদ নিজ জীবনাপেক্ষা পীরকে বেশি ভালোবাসিতে না পারিবে, সে কস্মিনকালেও খোদাতায়ালা পর্যন্ত পৌঁছাইতে পারিবে না। খোদাপ্রাপ্তির পথে ইহা এক অন্যতম প্রধান শর্ত।”
“পীরের আহবান শোনা মাত্রই হাতের কাজ ফেলিয়া পীরের সমীপে উপস্থিত হইবে। কোন মুরীদ যদি খাইতে বসে এবং তাহার খাবারের লোকমাপূর্ণ হাত যদি তাহার মুখ ও থালার মধ্যখানে থাকে- এমন সময়ও যদি পীরের ডাক পড়ে, তবে তৎক্ষনাৎ খাবার পরিত্যাগ পূর্বক পীরের নিকট উপস্থিত হইবে।”
“দরবারের দায়েরার মধ্যে নগ্ন পায়ে চলিও। পীরের দরবারে মুরীদ সবসময়ই গােলাম। গােলামকে গােলাম হিসাবেই থাকা কর্তব্য।”
“ওলি-আল্লাহসকল যেমন তাঁহাদের জীবদ্দশায় সকলের জন্য খোদা প্রাপ্তির অসিলা, তেমনি দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় কল্যাণ প্রাপ্তির মাধ্যম।”
“তোমরা জানিয়া রাখ, খোদা প্রাপ্তির পথে পীর-কামেল এক অমূল্য দান, যিনার তাওয়াজ্জুহ বলেতে মুর্দা দেল জিন্দা হয় এবং দেলে আল্লাহর জেকের পয়দা হয়।”
“আল্লাহকে ভয় কর এবং তাহাকে পাইবার জন্য ওসিলা অন্বেষনে কর। সেই ওসিলাই যামানার কামেল ওলীসকল, যেহেতু তাঁহাদের পাক আত্মার যোগাযোগে বিশ্ব আত্মার সান্নিধ্য লাভ হয়।”
“খোদাতালাশী ব্যক্তিবর্গ পীরে কামেলের খেদমতের মাধ্যমেই খোদাতায়ালার জাত ও সিফাতের জ্ঞান অর্জন করেন।”
“হে জাকেরান ও আশেকান সকল! তোমরা যদি খোদাতায়ালাকে পাইতে চাও, ফানা-ফিস-শেখ, ফানা-ফির রাসূল, ফানা-ফিল্লা ও বাকা-বিল্লাহ এর জ্ঞান অর্জন করিতে চাও, তাহা হইলে আদব, বুদ্ধি, মহব্বত ও সাহসের সাথে পীরের খেদমত করো”
“কামেল পীরের তাওয়াজ্জুহ-এর বলে মুরীদের মুর্দা দিল জিন্দা হইয়া প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করিতে পারে। মুর্দা দিল জিন্দা হইলে ঐ দিলে আল্লাহ ও রাসূলের (দঃ) খাস মহব্বতের ফয়েয ওয়ারেদ হইতে থাকে৷ তখন মানুষ হুজুরী দিলে নামাজ আদায় করিতে সক্ষম হয়।”
“যেইমাত্র তোমার ময়লা দিলকে পীরে কামেলের পাক দিলের সহিত মিশাইতে পারিব, সেই মুহুর্তে তোমার অন্ধকার দিল আলোকিত হইবে এবং আল্লাহর জিকিরে নাচিয় উঠিবে।”
“পীরের ভালোবাসার বাহনে চড়িয়া আল্লাহ-রাসূলের প্রেম সমুদ্রে সন্তরণের যোগ্যতা অর্জন কর। আশা করা যায় তোমরাও এই ধন, এই অমূল্য সম্পদ লাভে ধন্য হইবে।”
“পীরের মহব্বতের চাদর দিয়া নিজেকে ঢাক। তাহা হইলেই নিজেকে সকল প্রকার গোনাহ ও গোমরাহী হইতে বাঁচাইতে পারিবে। আল্লাহর প্রেমে দেল ভরিয়া উঠিবে।”
“যদি এক মুহূর্ত আপন পীরের পাক দেলের সাথে তোমার নাপাক দেল মিশাইতে পার, তবে তোমার দেলে গওহর পয়দা হইবে, গোলাপ ফুলের মত ফুটিয়া, মুর্দা দেল জেন্দা হইবে। দেল ১৪ই রাত্রির পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জল হইবে। দেলে আল্লাহ আল্লাহ জেকের জারী হইবে। কখনও আর এই জেকের বন্ধ হইবে না।”
সূত্র: শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নসিহত শরীফের বিভিন্ন অংশ হতে।