বন্য পশুদেরকে বাঘের প্রদত্ত উত্তর এবং নিজের চেষ্টার উপকারিতা বর্ণনা করা
গোফ্ ত আরেগার ওফা বীনাম না মকর,
মক্রেহা বছ দীদাম আজ জীদো ও বকর
মান্ হালাকে ফেলো ও মকরে মর দমাম্
মান গোজিদাহ্ জখ্মে মারো ও কাজ দমাম্।
নফ্ছে হরদম আজ দরুনাম দর কামীন।
আজ হামা মরদাম তবরে দর মক্রো ও কীন।
গোশে মান্ লা ইউল দাগুল মোমেনে শানীদ,
কউলে পয়গম্বর বজানো ও দেল গোজীদ।
অর্থ: বাঘ উত্তর করিল যে, তোমাদের প্রস্তাব মানিয়া নিতে কোনো ক্ষতি নাই। কিন্তু আমাকে দেখিয়া নিতে হইবে, তোমরা তোমাদের প্রতিজ্ঞা পূর্ণ কর কি না? অথবা ইহার মধ্যে তোমাদের ধোকাবাজী আছে কি না? কেননা, আমার এই বয়সে আমি বহুত লোকের ধোকাবাজী দেখিয়াছি এবং অনেক প্রকার লোকের ধোকায় ও ফেরেববাজীতে পড়িয়া অনেক মার খাইয়াছি। অনেক ক্ষতিকারক বস্তুর আঘাতপ্রাপ্ত হইয়াছি। এইজন্য এখন আর আমার বিশ্বাস হয় না। মাওলানা এই প্রসঙ্গে বলিতেছেন, এই রকমভাবে প্রত্যেকের অন্তরে নফস্ ওত পাতিয়া বসিয়া রহিয়াছে। সুযোগ বুঝিয়া প্রত্যেককে ধোকা দিতে ও হিংসা করিতে প্রেরণা যোগায়। তাহার পর বাঘের কথা উল্লেখ করিয়া বলিতেছেন, বাঘ বলিল, আমার কর্ণে ঐ কথা শুনিয়াছি যে মোমেন ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বিপদে পদক্ষেপ করেন না। অর্থাৎ, যে কাজে একবার বিপদ ঘটিয়াছে, সেই কাজ মোমেন ব্যক্তি দ্বিতীয়বার করেন না। অতএব, আমি যখন লোকের বিশ্বাসঘাতকতা দেখিয়াছি, তখন উহার উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ভুল হইবে। আমি পয়গম্বর (দ:)-এর কথা জান ও দেল দিয়া গ্রহণ করিয়া লইয়াছি। এখন আর কাহারো কথায় কর্ণপাত করি না।
[বাংলা এই ভাবানুবাদ বরিশাল থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে প্রকাশিত। এই দুর্লভ সংস্করণটি সরবরাহ করেছেন সুহৃদ (ব্যাংকার) নাঈমুল আহসান সাহেব। সম্পাদক – কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন]
মূল: মসনবী শরীফ ২য় খন্ড – মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রহ:)।
ভাষান্তর: এ, বি, এম, আবদুল মান্নান।
মুমতাজুল মোহদ্দেসীন, কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা।