বাঁশি কেন কাঁদে! (মাওলানা রুমি রহঃ) – পর্ব-২
(৩)
“ছিনাছ খাহাম শরাহ শরাহ আজ ফেরাক, তা বুগইয়াম শরেহ দরদে ইশতিয়াক।”
অর্থঃ বাঁশি বলিতেছে, আমার বিচ্ছেদর ব্যথ্যা অনুভব করার জন্য ভুক্তভোগী অন্তরের আবশ্যক। পাষাণ অন্তকরন আমার (বিচ্ছেদের) যাতনা অনুভব করিতে পারিবে না। তাই, যে অন্তকরণ বিচ্ছেদের ব্যথায় টুকরো টুকরো হইয়া গিয়েছে, সেই অন্তকরণ পাইলেই আমার ব্যথ্যা ব্যক্ত করিবো। অন্যথায় আমার রোদন বৃথা যাইবে।
(৪)
“হরকাছে কো দূরে মানাদ আজ আছলে খেশ, বাজে জুইয়াদ রোজে গারে ওয়াছলে খেশ।”
অর্থঃ যে ব্যাক্তি আপনজন হইতে দূরে সরিয়া পড়ে, নিশ্চয়ই সে আপনজনের সাথে মিলিত হওয়ার আকাঙ্খা রাখে। সে মানব রুহ ও আলমে আরওয়াহের (রুহের জগতের) স্থায়ী শান্তি হইতে বহু দূরে সরিয়া পড়িয়াছে, পুনঃ সেই স্থান পাইবার জন্য ব্যাকুল রহিয়াছে।
(৫)
“মান বাহর জামিয়াতে নাঁলামে শোদাম, জুফতে খোঁশ হালানো বদ হালানে শোদাম।”
অর্থঃ বাঁশি বলিতেছে, আমার দুঃখ ও ক্রন্দনের অবস্থা কাহারো নিকট অপ্রকাশ্য নাই। ভালো-মন্দ সকলের নিকটই আমার অবস্থা প্রকাশ হইয়া রহিয়াছে।
(৬)
“হরকাছে আজ জন্নে খোদ শোদ ইয়ারে মান, ওয়াজ দরুনে মান না জুস্ত আছরারে মান।
অর্থঃ প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থা অনুসারে আমার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াছে। আমার জন্য দুঃখ প্রকাশ করিয়াছে। কিন্তু আমার অভ্যান্তরিণ প্রকৃত ব্যথা কেহই বুঝিতে পারে নাই, আর কেহ ব্যথার কারণ ও অন্বেষণ করে নাই।
ভাবঃ যে ব্যাক্তির রুহ আলমে আরওয়া (রুহের জগতের) কথা স্মরণ করে কাঁদিতেছে, সেই ব্যক্তিই বাঁশির সুরের মর্ম অনুধাবন করিয়া মর্মাহত হইবে। আর অন্যকেহ সুরের মর্ম বুঝিতে পারিবে না।
লেখাঃ Fackrul Islam Joy