হোমপেজ আহলে বায়াত (পাকপাঞ্জাতন) রহস্যময় সৃষ্টি (খোদা ও নূরতত্ত্ব)

রহস্যময় সৃষ্টি (খোদা ও নূরতত্ত্ব)

981

রহস্যময় সৃষ্টি (খোদা ও নূরতত্ত্ব)

রহস্যময় সৃষ্টি নামক কিতাবে বর্ণিত আছে: যে এমন এক সময় ছিল যখন এই বিশ্ব ছিল, অন্ধকার-ধন্ধাকার-নিরাকার-কুয়াকার। তখন দয়াময় আল্লাহপাক শক্তি রুপে গঞ্জেমুখফী নাম ধারণ করে স্বীয় মহিমায় অবস্থান করলেন। বহু বৎসর তিনি এভাবে অতিবাহিত করলেন। একদিন মহাণ প্রভু তার স্বইচ্ছায় “হু-হা-হে তিনটি শব্দ করলেন। এই তিন শব্দে প্রভু তার রুপ পরিবর্তন করে নিলেন। এই অবস্থায় ৪০ বৎসর কাটিয়ে ছিলেন। ৪০ বৎসর পর পূণরায় সৃষ্টির এরদা করলেন। তারপর স্বীয় জাত নূরের এক অংশে আল্লাহর নিজ রুপ মিশিয়ে নূরে মোহাম্মদীকে সৃষ্টি করলেন।

বাহ্যিক দৃষ্টিতে আমরা জানি নূর মানে আলো-আলোর কোন আকার বা আকৃতি থাকে না-কিন্তু আল্লাহর নূর এমন যা চর্ম চক্ষুর দৃষ্টিতে বিশ্লেষণ করা যাবেনা-এর বাহিরে কিছু বলতে চাইনা, কারণ ইহা গভীর স্তরের কথা। তবে এই টুকু বলতে পারি যদি কোন কিছুর আকার বা আকৃতি না থাকে তাহলে অনুরপ কোন কিছু নতুন করে তৈয়ার বা আকৃতি দেওয়াও সম্ভব নয়। যেহেতু আল্লাহর ইচ্ছা নিজেকে প্রকাশ করা। এরপর নূর মোহাম্মদী নূরকে ময়ুর রুপ আকৃতিতে রাখলেন। এইময়ুর রুপী নূরে মোহাম্মদীর মাথার তাজ হলেন আলী, গলার হার মা খাতুনে জান্নাত, কানের দুল হলেন ইমাম হাসান ও হোসাইন আ:। অবশ্য অনেক লেখক নূরে মোহাম্মদীকে কখন ময়ুর রুপে আবার কেউ ময়ুর ছাড়াও শুধু নূর হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

তবে যেহেতু বলেছি নূরের কোন আকার বা আকৃতি নাই সেহেতু ময়ুর রুপে নবীর আকৃতির কথা গ্রহণ যোগ্য হবে। তবে অধিকাংশ আউলিয়াগণ নবীর রুপকে ময়ুর রুপে স্বীকার করেছেন-তাছাড়া দাকায়েকুল আখবার নামক কিতাবের ৫ পৃ: সৃষ্টি তত্বে ইমাম গাজ্জালী (রহ:) ময়ুর আকৃতির কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তখন নূর মোহাম্মদের নূরকে তখা ময়ুরকে জিজ্ঞাসা করলেন “আল আস্তবে রাব্বিকূম” অর্থাৎ আমি কি তোমার রব নই। ময়ুর থেকে উত্তর আসল “আনতানা” অর্থাৎ আমি তোমাকে চিনিনা। এক হাজার বছর এভাবে কেটে গেল। তারপর তাকে পূণরায় জীজ্ঞাস করা হল: “আল আস্তবে রাব্বিকূম” অর্থাৎ আমি কি তোমার রব নই? পূণরায় ঐ একই জবাব এলো” আনতানা “অর্থাৎ আমি তোমাকে চিনিনা।

আল্লাহপাক তখন চিন্তা করে দেখলেন আমার সৃষ্টি আমাকে কেন চিনেনা? তখন আল্লাহপাক চিন্তা করে দেখলেন, রুহানী খাদ্য তথা কুদরতী বাতাস তথা হাওয়া যদি বন্ধ করে দেই তাহলে দেখা যাক কি উত্তর আসে? আল্লাহপাক তাই করলেন এবং সাথে সাথে জীজ্ঞাসা করলেন “আল আস্তবে রাব্বিকূম” অর্থাৎ আমি কি তোমার রব নই। আল্লাহর কূদরতী বাতাস বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে ময়ুর নড়া চড়া দিয়ে উঠল। এবং সাথে সাথে ময়ুর জবাব দিলেন “কালুবালা” অর্থাৎ তুমিই আমার প্রভুও সৃষ্টি কর্তা। আল্লাহপাক খুশি হয়ে ময়ুরের দিকে তাকিয়ে রইলেন। ময়ুর সত্তর হাজার বছর আল্লাহপাকের তসবীহ পাঠ করিতে থাকে। তারপর হায়া সরম নামে এক কূদরতী আয়না ময়ুরের সামনে রাখা হল। ময়ুর নিজের চেহারা আয়নাতে দেখে নাচতে শুরু করল। খুশিতে সে পাঁচটি সেজদা করেছিল। এই ৫টি সেজদা ইহল ৫ ওয়াক্ত সালাতের মূল গোড়া।

তথ্যসূত্র: রহস্যময় সৃষ্টি পৃ:৫-৬, দাকায়েকুল আখবার পৃ-৫-৬। এবং বেহুশের চৈতন্যদান পৃ:১৩৬।