হোমপেজ সকল দলিল আল্লাহর নির্দেশিত বায়াত গ্রহন কেন প্রয়োজন?

আল্লাহর নির্দেশিত বায়াত গ্রহন কেন প্রয়োজন?

870
Advertisement:
IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

আল্লাহর নির্দেশিত বায়াত গ্রহন কেন প্রয়োজন?

সমস্ত জগতের একমাত্র মালিক আল্লাহ। তাঁর প্রিয় হাবিব ও নবী রূপে সর্বশেষ প্রতিনিধি নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। নবীজী সাঃ এর ওফাতের পর আল্লাহর প্রতিনিধি রূপে খলিফা হলেন নবীজী সাঃ এর আহলে বাইয়েতগণ এবং বেলায়েতের যামানায় আল্লাহর ওলী তথা নায়েবে রাসূলগন।

পিতার পৃষ্ঠদেশ থেকে মা এর গর্ভে আসার সময় আল্লাহর কাছে দেওয়া অঙ্গীকার মোতাবেক প্রতিটি মানবের মূল মকসুদ যেহেতু আপন প্রভু আল্লাহর দাসত্ব করে তাঁর কাছেই ফিরে যাওয়া। তাই, বর্তমান যামানায় আল্লাহর খলিফা রূপী প্রতিনিধি ওলী, কামেল মুর্শিদের কাছে বায়াত গ্রহন করে সোহবত লাভ করা প্রতিটি মানুষের জন্যই সর্বপ্রথম ঈমানী দায়িত্ব।

নবীজী সাঃ এর কাছে বায়াত গ্রহন করে তাঁর সোহবতে থেকে, তাওয়াজ্জোহ ও ফায়েজ লাভের মাধ্যমে বর্বর আরব বাসীর অধিকাংশই যেমন নিজের চরিত্র সংশোধন দ্বারা আত্মশুদ্ধি লাভ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করেছিলেন।

বর্তমান যামানায় ঠিক তেমনই ভাবে আল্লাহর ওলী কামেল মুর্শিদের কাছে বায়াত গ্রহন করে তাঁর সোহবতে থেকে তাওয়াজ্জোহ ও ফায়েজ লাভের মাধ্যমে নিজের চরিত্র সংশোধন দ্বারা আত্মশুদ্ধি লাভ করে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করা প্রতিটি মানুষের জন্যই আদর্শ ফরজ।

IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

আর বায়াত গ্রহনের মাধ্যমে এই সহজ সোজা পথে থেকে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করে, মৃত্যুর সময় আপন মুর্শিদের উপস্থিতিতে ঈমান নিয়ে কবরে যাওয়া, হাশর-পুলসিরাত সহজ হয়ে যাওয়া আর পরবর্তী জীবন চিরন্তন সুখময় করে তোলার জন্য একজন মানুষ হিসেবে শুধু নিজ ইচ্ছাশক্তিটুকুই যথেষ্ট।

আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন কোরআনুল কারিমে সূরা মায়েদা ৩৫নং আয়াতে কারিমায় ইরশাদ করেন, “ইয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানুত্তা-কুল্লাহা ওয়াবতাগু ইলায়হিল ওয়াসিলাতা ওয়া জাহিদু ফী সাবিলিহী লায়াল্লাকুম তুফলিহুন।”

অর্থঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আল্লাহ পর্যন্ত পৌছার জন্য ওসীলা (মাধ্যম) সন্ধান কর এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের রাস্তায় সাধনা কর, তবেই তোমরা মুক্তি লাভে সফল হবে।”

উক্ত আয়াতে কারিমায় মুক্তি লাভের চারটি রাস্তা দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। যথাঃ ১) ঈমান গ্রহণ কর, ২) খোদা ভীতি অবলম্বন কর, ৩) অসীলা তালাস কর, এবং ৪) আল্লাহর পথে মাধ্যম পাওয়ার জন্য সাধনা কর।

এই প্রসংগে আরো বলেনঃ “হে মুমিনগণ! তোমরা অনুস্মরণ কর, আল্লাহ্ পাক এর, তাঁর রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর রয়েছে তাদের।” (সুরা: নিসা, আয়াত ৫৯)।

(উলিল আমর এর মানে হল ন্যায় বিচারক/ধর্মীয় নেতা/ওলি-আউলিয়া/পীর-মুর্শিদ ইত্যাদি)

অনুরুপভাবে, আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন সুরায় তওবা ১১৯নং আয়াতে কারিমায় ইরশাদ করেন: উচ্চারণঃ “ইয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানুত্তা-কুল্লাহা ওয়া কুনু মা’য়া সাদেক্বীন।”

অর্থঃ “হে ঈমানদার গণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের বা কামেল অলীগনের সঙ্গ লাভ কর।”

উক্ত আয়াতে কারীমায় ব্যাখ্যায় তাফসীরে রুহুল বয়ান ১৬পারা ৩৯০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে যে, “নেক আমলের দ্বারা শুধু আবেদ হওয়া যায়, কিস্তু আরিফে বিল্লাহ বা খোদা প্রাপ্তি ও খোদার প্রেমে অসংখ্য মঞ্জিল গুলো অর্জন করার জন্য কামেল মুর্শিদের প্রয়োজন। মুর্শিদে কামেল ব্যতীত মর্তবাগুলো অর্জন করা সম্ভব নয়। আর এই কারণেই লোকজন মাশায়েখে আউলিয়া ও আবরার তথা কামিল পীরের সহবতের জন্য অনেক দুর দূরান্তে সফর করে থাকেন।”

আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তাঁর নেক বান্দাদের অনুসরণ করা অপরিহার্যতা প্রসঙ্গে আরো ইরশাদ করেনঃ “ওয়াত্তাবি সাবীলা মান আনাবা ইলাইয়্যা।”

অর্থঃ যে ব্যক্তি আমার দিকে রুজু হয়েছেন, তাঁর পথকে অনুসরণ কর। (সুরা: লুকমান, আয়াত ১৫)

উসিলা বা মাধ্যম তথা মহান আল্লাহর নির্দেশিত বায়াত গ্রহন সম্পর্কে কোরআনুল কারিমের আরো ১০টি আয়াত নিম্নে উপস্থাপন করা হয়েছেঃ-

  • (১) হে মুমিনগণ! তোমরা অনুস্মরণ কর, আল্লাহ্ পাক এর, তাঁর রাসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর রয়েছে তাদের। [সূরা ৪ নিসা: ৫৯]।
  • (উলিল আমর এর মানে হল ন্যায় বিচারক/ধর্মীয় নেতা/ওলি-আউলিয়া/পীর-মুর্শিদ ইত্যাদি )
  • (২) স্মরণ কর! সেই দিনকে যেদিন আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়কে তাঁদের (ইমাম) ধর্মীয় নেতা সহ আহ্বান করব। [সূরা ১৭ বনী-ইসরাঈল: ৭১]
  • (৩) অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথ প্রাপ্ত। [সূরা ৩৬ ইয়া-সীন: ২১]।
  • (৪) যে বিশুদ্ধ চিত্তে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো। [সূরা ৩১ লুকমান: ১৫]।
  • (৫) অতএব তোমরা যদি না জান তবে যারা
    জানেন তাদের নিকট হতে জেনে নাও। [সূরা ২১ আম্বিয়া: ৭]।
  • (৬) হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং (ছাদেকিন) সত্যবাদীগণের সঙ্গী হয়ে যাও। [সূরা তাওবা: ১১৯]।
  • (৭) নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাকের রহমত (মুহসিনিন) আউলিয়া কিরামগনের নিকটবর্তী । [সূরা ৭ আরাফ: ৫৬]।
  • (৮) আল্লাহ্ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, সে সৎপথ প্রাপ্ত হয় এবং তিনি (আল্লাহ্) যাকে পথভ্রষ্ট করেন, আপনি কখনও তাঁর জন্য কোন ওলীয়ে মুর্শিদ অর্থাৎ পথপ্রদর্শনকারী ও সাহায্যকারী পাবেন না। [সূরা কা’হফ: ১৭]।
  • (৯) সাবধান! নিশ্চয় আল্লাহর অলিগণের কোন ভয় নেই এবং তারা কোন বিষয় এ চিন্তিতও নহেন। তাঁদের জন্য আছে সুসংবাদ দুনিয়া ও আখেরাতে, আল্লাহর কথার কোন পরিবর্তন বা হের-ফের হয় না, উহাই মহা সাফল্য। [সূরা ১০ ইউনুস: ৬২-৬৪]।
  • (১০) হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর এবং তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় বা ওয়াছিলা তালাশ কর। [সূরা ৫ মায়েদা: ৩৫]।

মহান আল্লাহ ও রাসুল পাক সাঃ এর নির্দেশ হেতু বায়াত গ্রহন না করলে আল্লাহ ও রাসুল সাঃ এর আদেশ লংঘন হয়, প্রকৃত মুসলমান হওয়া যায় না, নিজ আত্মার মুক্তি লাভ তথা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করা কস্মিনকালেও সম্ভব হয় না। সর্বোপরি সকল ইবাদতই ব্যর্থ হয়ে মানব জনম ব্যর্থ হয়ে যায়।

এ প্রসংগে রাসূলপাক (সাঃ) সুস্পষ্ট ভাবে ইরশাদ করেছেনঃ

“যে ব্যাক্তি বাইয়াতের বন্ধন ছাড়াই মারা গেল সে জাহিলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল।” (মুসলিম শরীফ, হাদিস নং-৩৪৪১)

“যে ব্যাক্তি জামানার (শরীয়ত ও তরীকতের) ইমাম না চিনে মারা গেল সে যেন জাহেলী যুগে মৃত্যু বরন করল। অতএব, বাইয়াত না হয়ে মারা যাওয়ার মানে বে ওয়ারিশ মরাদেহ। হাশরের দিন না নবী তার পাশে থাকবে, না কোন ওলি।”  -(নিরবাস শরহে আকায়েদ নসফীর -পৃঃ ৩১৫)

– সূফিবাদ২৪.কম