হোমপেজ ওলীদের কারামত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতির বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অলৌকিক একটি ঘটনা।

খাজা মঈনুদ্দীন চিশতির বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অলৌকিক একটি ঘটনা।

1740

খাজা মঈনুদ্দীন চিশতির বাদ্যযন্ত্র নিয়ে অলৌকিক একটি ঘটনা।

আমি একটি গল্প শুনেছি খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীকে (রহঃ) নিয়ে। এটা ঘটেছিল ভারতের রাজস্থানে আজমির শরীফে। বর্তমানে যেখানে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীর (রহঃ) দরগা হয়েছে। খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রহঃ) অনেক বিখ্যাত সূফী সাধক ছিলেন। অনেকেই হয়ত জানেন না যে তিনি সঙ্গীত খুব ভালবাসতেন এবং ভারতীয় বাদ্যযন্ত্র বাজাতে জানতেন।

তাছাড়াও ইসলামে সঙ্গীত নিয়ে নানারকম মত আছে। সংগীতকে নিষিদ্ধও করা হয়েছে। প্রতিদিন “পাঁচবার” নামাজের সময়ে নামাজ না পড়ে তিনি বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন। বাদ্যযন্ত্র বাজানোই ছিলো তাঁর নামাজ আদায় করা। এটা সম্পূর্ণ ইসলাম ধর্ম বিরোধী ছিলো এবং খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীকে (রহঃ) কখনো কেউ কিছু বলেনি। অনেক লোকই তার দরগায় এসেছিলো নিষেধ করার জন্য কিন্তু খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রহঃ) এমন নিবিষ্ট মনে তার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান করতেন, যে অনেক বড় পন্ডিত, জ্ঞানী এবং মৌলভীরা নানা অনুযোগ নিয়ে এলেও সব ভুলে যেত।

দরগা থেকে বাড়িতে ফিরে গিয়েই তাদের মনে হতো যে কারনে দরগায় যাওয়া হয়েছিলো সেটাই বলা হয়নি। চিশতীর খ্যাতি সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লো। পৃথিবির নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীকে(রহঃ) দর্শনের জন্য আসতে লাগলেন। খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীর(রহঃ) খ্যাতির কথা শুনে বিখ্যাত সূফী সাধক আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)ও বাগদাদ থেকে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীকে (রহঃ) দেখার জন্য এসেছিলেন।

যখন খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী(রহঃ) জানতে পারলেন যে আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) তাকে দর্শনের জন্য আসছে খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীকে (রহঃ) কাছে মনে হলো তাঁর গান বাজনা দেখে হয়ত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) কষ্টও পেতে পারেন। কেননা ইসলামে গান বাজনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। তাই সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিলেন আর গান বাজনা করবেন না।

আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) আসার আগেই সব বাদ্যযন্ত্র দরগার ভিতরে লুকিয়ে রেখে তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। বিকেলের দিকে যখন আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) দরগায় এসে পৌঁছালো দুজনে দরগার এককোনে গিয়ে নীরবে আলাপ করছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই চিশতীর লুকিয়ে রাখা বাদ্যযন্ত্রের অনুরনন হতে লাগলো। পুরো দর্গা সুরের মূর্ছনায় ভরে গেল। চিশতীও অবাক হয়ে গেলেন এবং বিব্রত হলেন।

জিলানী হাসতে লাগলেন এবং বললেন, “বিধান শুধু আপনার জন্য নয় জাহাপনা, বিধান শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের জন্য। আমার আগমন উপলক্ষ্যে আপনাকে বাদ্যযন্ত্রগুলো লুকিয়ে রাখা ঠিক হয়নি। আপনি হয়ত হাত দিয়ে বাজাবেন না কিংবা গলায় গান ধরবেন না। কিন্তু আপনি কিভাবে আপনার হৃদয়কে আড়াল করবেন? আপনার পুরো সত্ত্বাই সংগীতময় হয়ে আছে। আপনার দরগা পুরোটাই সঙ্গীত দিয়ে এমনভাবে আবৃত হয়ে আছে যে বাদ্যযন্ত্র ছাড়া নিজেই বেজে চলছে।”

সঙ্গীত হল সকল প্রকার ভালবাসার মূল উপাদান; এটাকে অন্তরে তুলে নাও তাহলে মনের বিশাল রাজ্যের ধুলিকনা গুলা চমকাতে শুরু করবে। সুপ্ত প্রতিভা জেগে উঠবে। সঙ্গিত শুনো তাহলে মনে আনন্দ ও স্বর্গীয় প্রশান্তি লাভ করতে পারবে ।

আমার কথাগুলো এত প্রেম ও শান্তির সঙ্গে পড়েছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করছি, কেন না এই ধরনের কথাবার্তা প্রেম ও শান্তির সঙ্গে পড়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। এবং শেষে সকলের ভেতরে পরমআত্নাকে ভক্তি ও শ্রদ্ধা করছি, আমার ভক্তি ও শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন দয়া করে!

— ওশো

নিবেদকঃ JH Rasel Ahmed