হোমপেজ ওলীদের কারামত হযরত গাউছে সুলতান নূরনগরী (কঃ) এর কারামত

হযরত গাউছে সুলতান নূরনগরী (কঃ) এর কারামত

320

নিরক্ষর ব্যাক্তিকে সোনার মানুষ তথা সূফি সাধকে পরিনত করার করামত

রায়হান উদ্দিন একজন সম্পূর্ণ নিরক্ষর ব্যাক্তি ছিলেন। বাহ্যিক ভাবে নিরক্ষর হলেও নগরী কেবলা কাবার প্রেম সুধা পানে তিনি মহাজ্ঞানীতে পরিণত হয়। যার দিব্যি প্রমান তার রচিত “প্রেম পুষ্পহার বা গজলে রায়হান” -কালামের বইখানি।

রায়হান উদ্দিন প্রথমত জীবনে তরীকতের ঘোর বিরোধী ছিলেন। যেহেতু মাইজভান্ডার তরীকায় ডোল তবলা বাজান সহ ভিন্ন রীতি নিতি পালন করা হয়।সাধারন মৌলবী মাওলানা এটাকে বেদআত শিরক বলে মনে করে,রায়হান উদ্দিন একজন শক্তিশালী ও সুঠাম দেহের অধীকারী হওয়াতে কিছু কিছু মাওলানা মৌলবি তাকে ভুল বুঝিয়ে বললেন -লতিফ সিকদার গাউছে সুলতানের বাড়ীতে বেদআত শিরক হচ্ছে।

তাকে মেরে ফেলতে পারলে তোমার জন্য সওয়াব নিহিত। এভাবে রায়হান উদ্দিনের মন বিষিয়ে তুললো। আর রায়হান উদ্দিন ও নূরনগরীর কে খুজতে লাগলো।

যেহেতু বেলায়তের অধীকারী আওলিয়াগন সকলের মনের অবস্থা সম্পর্কে অবগত,তেমনি কিছু কিছু লোক এগুলোর কানা ঘুষা করছে। এমনি এক সন্ধিক্ষনে হযরত গাউছে সুলতান নূরনগরীর কেঃ আছরের সময় রায়হান শাহ এর বাড়ীতে জামুকরা গ্রামে অবস্থান করেন। যাহা চৌদ্দগ্রামের বর্তমান বাতিসা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত।

তখন রায়হান উদ্দিন বন থেকে কাঠ কেটে বাড়ি ফিরছিলেন। এমন সময় লোকে বলাবলি করতে লাগলো যে রায়হান ডোল তবলা লতিফ শিকদারের হুজুর তোমাদের গ্রামে অবস্থান করছে।

রায়হান উদ্দিন রাগে ফেটে ফেটে অবস্থা, তড়িৎ গতিতে এসে দয়াল নূরনগরীর কেঃ’র সামনে উপস্থিত হওয়া মাত্র গাউছে সুলতান নূরনগরী কেঃ তার ক্বালবকে দৃষ্টি দিলেন। তাৎক্ষনিক অঝোর ধারায় কান্না শুরু করে হযরত রায়হান উদ্দিন শাহ রহঃ গেয়ে উঠলেনঃ-

হীনের তালাশে কেন, এসেছ গহীন ও বনে,
তব পদ গুলির যোগ্য নহে এত দয়া কেন মনে।

হীনের গায়ে দিতে নাহি টাট্টি
কই পাবো তোমার যোগ্য খাঁটি।

ওরে বৈস বৈস দয়ার নাথ, বৈস হীনের হৃদ আসনে।
মধু মিশ্রি সার ব্যাঞ্জনে,না রুচছে যাহার ও মনে,
কি বা বক্ষ দিব গহীনে,,চীনের মস্তক বিনে।

তোমায় পেয়ে প্রানবালা,আমি পেয়েছি গো গাউছে মাওলা,
খন্ডিবে ভবের ও জ্বালা চন্দ্র মুখ দর্শনে।
চীনের তালাশে কেন, এসেছ গহীন ও বনে।

এই বাক্যগুলো বলে গাউছে সুলতান নূরনগরীর কেঃ এর নিকট নিজকে সোপর্দ করেন এবং দয়াল নগরীর পিছনে পিছনে নগর শরীফ দরবারে হাজির হন।এখান থেকে শুরু হয় রায়হান শাহ এর তরীকত পথের প্রথম যাত্রা।

হযরত গাউছে সুলতাম নূরনগরীর কেঃ’র সবতে এসে হযরত রায়হান শাহ সোনার মানুষে পরিগনিত হলো যাহা তার কালাম গুলোর মধ্যে জলন্ত উদাহরন।পরবর্তী তে রায়হান শাহ এর বহু করামত এর কথা ও লোক মুখে শুনা যায়।

এই মহীয়সী গরীয়সী অমর সূফি সাধক ১৩২৬ বাংলা সনের ২৯ শে অগ্রাহায়ণ রোজ সোমবার আনুমানিক বেলা তিন ঘটি কার সময় তার গুরুদেব সুলতানুল আউলিয়া গাউছে সুলতান নূরনগরীর হুজরা শরীফে হযরতের পবিত্র হস্তের পানি দ্বারা অনন্ত সুধা পান করে ইহধাম ত্যাগ করেন।

অবশ্য যখন আজরাইল এসে রায়হান শাহ এর রুহ মোবারক প্রভুর নিকট নিয়ে যাবে তখনি তিনি আজরাইলকে ইঙ্গিত করে নগরী কেঃ শানে কালাম করলেন-

যাবে সমন প্রিয়ার কাছে,আমি কি তায় বলতে পারি।
আমার বলতে যত কিছু সব নগরীর এখতেয়ারি,
দাস-দাসী যে নাম লেখাইছে,নগরীর কাছে বেচা গেছে।

চলতে নারে আপন খোলসে,সব মনি বের এখতেয়ারি।
আমার কাছে ফাকি নাকি খাটবে না তোর চালাকি।

দেখা সমন নুরি চরন, হয়নি কার্য্য সরাসরি।
আছি প্রিয়ার চরনতলে,চালায় প্রিয়া কল কৌশলে।

সে দিলে ছাড়ি,যাইতে পারি, নইলে দেও সমন গড়জাড়ি।
দেখলে চরন পদ্মফুলে,প্রান ভিমরা যায়গো ভুলে।

ফুলের লইতে রেনু ফুটলে মনু,রায়হান কয় লইছ কার্য্য সারি।।

This post collection From Nagar Sharif Darbar (FacebookPage).