৮০ দশকের কথা ঢাকা ইউনিভার্সিটির টিচার
অধ্যাপক “ডঃ সামাদ সাহেব” সবে মাত্র ৪/৫ বার বিশ্ব
জাকের মঞ্জিল পাক দরবার শরীফে এসেছেন। নিজ
পরিচয় গোপন রেখেই দরবার শরীফে আসা-যাওয়া
করছেন। প্রথম যেদিন এসেছিলেন হুজুরকেবলা সেদিন যে
অমায়িক ব্যবহার করেছিলেন তা ভুলবার নয়।
সেই থেকে এক আকর্ষণ পয়দা হয়েছে। মাঝে মাঝেই তাই দরবারে
আসেন হুজুরকে দেখার জন্য। তখনও তিনি মুরীদ হন নি।
এক বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকা থেকে দরবার শরীফে
আসলেন। সেদিন অনেক মুরীদান-আশেকান দরবারে
এসেছেন। অনেক ভীড়। আরও দেখলেন হুজরা শরীফের
বারান্দায় অনেক তরমুজ। কোন এলাকা থেকে নজরানা
এসেছে। অনেকের সাথে ডঃ সামাদ সাহেবও অপেক্ষায়।
হুজুর বের হলে দেখা করবেন। মনের অস্থিরতাও দূর হবে।
কিছুক্ষণ পর হুজরা শরীফের দরজা খুলে গেল।
কেবলাজান হুজুর বের হয়ে বারান্দায় অনেক তরমুজ
দেখে কারা এনেছে জিজ্ঞেস করে তরমুজগুলো পাক
শালায় নেওয়ার নিদেশ দিলেন। ডঃ সামাদ সাহেবও
১টি তরমুজ মাথায় তুলে রওয়ানা দিয়েছেন। এমন সময়
কেবলাজান হুজুর সামাদ সাহেবকে বল্লেন, ‘বাবা,
আপনি না।’ সামাদ সাহেব তরমুজ নীচে নামিয়ে হুজুর
কেবলাজানের পাশে দাঁড়ালেন। হুজুর কেবলা কুরসিতে
বসলেন। সাথে সাথে অনেক মুরীদান ও আগন্তক
হুজুর কেবলাজানকে ঘিরে দাঁড়িয়ে গেল।
হঠাৎ হুজুরকেবলা সামাদ সাবের দিকে অংগুলী ইশারা
করে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বল্লেন, “আপনারা কি
উনাকে চিনেন? উনি মাটির নীচে কি সম্পদ লুকিয়ে
আছে তা বলতে পারেন।” সামাদ সাহেবতো হতবাক।
তিনি অবাক বিস্ময়ে অভিভূত। কারণ তিনিতো হুজুরকে
বা দরবার শরীফের কাউকেই বলেননি যে তিনি একজন
ভু-তত্ত্ববিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা
করেন। তাহলে হুজুর কেবলা কি করে জানলেন?
বেশ কিছুকাল পরে অনেক ধর্মীয় কিতাব অধ্যয়ন করে
সামাদ সহেব বুঝতে পেরেছিলেন যে, অন্তরযামী
আল্লাহতায়ালা তার বন্ধুদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তাকে
অপরাপর মানুষের ভিতর ও বাহিরের খবরাখবরও
জানিয়ে দেন।
– ডঃ সামাদ সাহেব (টিচার অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি)।