জাত-সিফাত (পর্ব-০৩)
শিশু জন্ম নেওয়ার সাথে সাথে তার মধ্যে সপ্ত সেফাত জাগ্রত হতে থাকে। সে কথা বলতে চায়, সে দেখতে চায়, সে শুনতে পায়, শক্তি দিয়ে ধরার চেষ্টা করে, মাঝে মাঝে ভাবতে ভালবাসে আনমনে। সে মায়া মুহাব্বত রাগ অভিমান বুঝতে শুরু করে দেয় এই সাত সেফাতের কারনেই। সেফাত বান্দার অংশ, কর্ম্ফলের সাথে তাই এর সম্পর্ক গভীর। পাপ পূন্য কর্মের কারনে প্রাণীর এই সিফাতী শক্তির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
যেমন কেউ জন্মান্ধ হয়ে দৃষ্টি শক্তিহীন হয়ে জীবন যাপন করেন, কেউ আবার বধির হয়ে শ্রবনশক্তি হারায়, কেউবা হারায় বাক শক্তি, ও দৈহিক শক্তি। তাই সপ্ত সিফাত দেহের মাঝে গুপ্ত হয়ে থাকলেও তার সব প্রকাশ পায় না অনেক প্রাণীর মাঝেই। প্রাণী মৃত্যুর সাথে সাথেই তার এই সিফাতী শক্তি সাথে করেই নিয়ে যায় গুপ্ত ভাবে। জানের অংশ নিতে পারেনা। কারন মৃত্যুর পর দেহ পচে গলে যায়, বাতাস যায় বাতাসের সাথে মিশে, আগুন আগুনের সাথে, পানি পানির সাথে আর মাটি মাটির সাথে মিশে একাকার হয়ে যায়।
তবে একটা কথা এই যে, জাত ও সেফাতের আলোচনা দেহভান্ডে ও ভ্রহ্মান্ডে কিছুটা পার্থক্য হবে। যেমন দেহে জাতের পরিবর্তন হয়, সিফাতের কপতি বারতি হয় যা গুপ্ত হয়ে থেকে যায়, কিন্তু জাত স্পষ্ট পরিবর্তন হয়। যেমন বৃদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে মানুষের গায়ের চামড়া কুঁচকে যায়, কখনো রক্ত নষ্ট হয়ে যায়, গাঁয়ে পঁচনও ধরে। এগুলো সবই জাতের অংশ।
দেহে জাত পরিবর্তনশীল, আর বাইরের জগতে জাত অব্যয় অক্ষয় অপরিবর্তনশীল। তবে জাত মূলত অপরিবর্তনশীলই, কারন দেহ ধ্বংস হয়ে জাতের সাথেই একাকার হয়ে যায়, যার পরিবর্তন ঘটে না। জাত ও সিফাত কারোই ধ্বংস নেই, কারন দুইটাই পরমের অংশ। কারন সব কিছুই মহাশূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তাই সবই পরমের উপাদান।
» জাত-সিফাত (সবগুলো পর্ব পড়ুন)
লেখাঃ DM Rahat
YouTube: Sufism BD