নফস তথা আত্মার স্বভাব
নসফ কি?
নফস হল রূহ তথা আত্মার স্বভাব। আবার নফস বলতে চিত্তের প্রবৃত্তিকেও ধরতে পারি। নফস আমার রূহের কাজগুলো সম্পাদন করে নিজ প্রবৃত্তির দ্বারা। নসফ যেহেতু রূহের স্বভাব সেহেতু পঞ্চরূহের পঞ্চ স্বভাব অর্থাৎ নফস পাঁচ প্রকার। হাইয়ুন সিফাত যে নফসের তাবেদারী করবে সেই নফস যে রূহের অধীন, সেই রূহ জাগ্রত হতে থাকবে। তবে নসফের তাবেদারী বলতে বুঝিয়েছি যে, নফসের আস্ফালনে কর্ম করা। আমরা সকল কর্মই কোনো না কোনো নফসের আস্ফালন থেকেই করি।
পাঁচ প্রকার নফস হল:
১.নফসে মোলহেমা।
২.নফসে লাওয়ামা।
৩.নফসে আম্মারা।
৪.নফসে মুৎমাইন্না।
৫.নফসে রহমানিয়া।
মানুষের মাঝে প্রধমাবস্থায় সাধারন প্রথম তিনটি নফসের প্রভাব থাকে। নফসে মোলহেমা হল শুদ্ধ স্বভাব। যা সব সময় মানুষকে ভাল কাজ করার প্রতি আস্ফালন বা তাগিদ দেয়। আর নফসে লাওয়ামা হল তিরস্কারকারী স্বভাব। এটা সর্বদা আমাদের মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে ও মন্দ কাজ করলে বিবেকরূপ ভৎর্সনা বা তিরস্কার করে আমাদের। আর নফসে আম্মারা হল কুপ্রবৃত্তি। যা সর্বদা আমাদেরকে মন্দ কাজ করার প্রতি উৎসাহিত করে। উল্লেখ্য যে নফসে মোলহেমা ও লাওয়ামা হতে নফসে আম্মারা অধিক শক্তিশালী। তাই আমরা নফসে আম্মারার সাথে পেরে উঠি না। তবে ভাল কাজ করার দরুন নফসে লাওয়ামা ও মোলহেমার শক্তি বাড়ে এবং নসফে আম্মারা তখন হাইয়ুন সিফাত তথা মানুষের বশবর্তী হয়ে যায়। ঠিক তখনই নফসে মোৎমাইন্না তথা প্রশান্ত আত্মার স্বভাব জাগ্রত হয়। যা হল রূহে ইনসানীর স্বভাব। এই স্বভাব প্রাপ্ত হলেই আল্লাহর দরবারে বান্দার ইবাদত কবুল হয় এবং সাধনার বলে নফসে রাহমানীয়া তথা পরমাত্মার স্বভাব ধারন করে বাকা বিল্লাহ্ এর স্তরের ওলীয়তী প্রাপ্ত হয়ে পূর্ন মুক্তি লাভ করে।
নসফের ব্যপারে কুরআন ও হাদিসে দলীল রয়েছে, আমি এতোকিছুতে গেলাম না। সহজভাবে যতটুকু পেরেছি বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কারন আমার মনে হয় আধ্যাত্মিক জগতের লেখালেখিতে জটিল ভাষা ও দীর্ঘালাপেরর চেয়ে সহজ কথা ও সংক্ষিপ্ত লেখাই উত্তম।
লেখায় অনেকের মতভেদ দেখা দিতে পারে বিভিন্ন কারনে, যেমন নফস দ্বারা সবাই আত্মাকেই বুঝে, অনেকে আবার প্রাণকেই নসফ বলে। কিন্তু আমি তা না বলে রূহকে আত্মা বলেছি ও নসফকে রূহ বা আত্মার স্বভাব বলেছি এবং প্রাণকে বলেছি ‘হাইয়ুন সিফাত তথা জীবনি শক্তি’।
তত্ত্বে মতভেদ থাকা দোষের কিছুই না। চিন্তা ভাবনা করলে ভিতরের জ্ঞান বাড়ে। কে কি বলল তা না দেখে, নিজের ভাবুন, দেখুন আপনার ভিতর থেকে কি উদয় হয়। আর যা উদয় হবে, মূলত সেটাই সত্য। গৌতম বুদ্ধ বলেছেন “সবকিছুই সন্দেহাতীত, তুমি তোমার নিজের মধ্যকার আলো তথা জ্ঞানকে খোঁজো। ”
লেখাঃ DM Rahat