প্রাণায়াম (পর্ব-০৩)
পূর্বের পোস্ট ছিল মুদ্রা ও আসন নিয়ে। আজ যাচ্ছি সরাসরি শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে।
যোগীশাস্ত্রে অনেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসকেই প্রাণ বলে থাকেন। তাই তাদের মতে প্রাণের চঞ্চলতার জন্যেই মনের চঞ্চলতা বাড়ে। তাই শ্বাস প্রশ্বাসকে স্থির করতে হয় সেটা যেভাবেই হোক। তবুও যোগীরা কিছু পদ্ধতি বের করেছেন।
শ্বাস প্রশ্বাস ধীরে গ্রহন করা হল পূরক, ধীর বের করা হল রেচক, আর ভিতরে বা বাইরে আটকে রাখা হল কুম্ভুক। এটাই হল সহজ কথা ও সহজ পদ্ধতি। তবে এগুলোর নিয়ম রয়েছে, যা মূলত বই পড়ে নয় বরং একজন গুরুর কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হয়। বই পড়েও জানা যায়, তবে না বুঝার কারনে বেশিরভাগ সময়ইই কর্ম বিফলে যায়।
শ্বাস-প্রশ্বাস যতটা সম্ভব ধীরের গ্রহন করুন ও ধীরে ছাড়ুন। অর্থাৎ নিজের খেয়ালে রাখুন চলতে ফিরতে খাইতে উঠতে বসতে। যতটা সম্ভব প্রাণ বায়ুর খরচ কম করার চেষ্টা করুন। প্রথমা বস্থায় আপনি স্বাভাবিক ভাবে চারবার শ্বাশ ছাড়ুন আর গ্রহন করুন, পঞ্চম বার খুব ধীরে গ্রহন করুন, যতটা সময় পারে ভিতরে আটকিয়ে রাখুন, তারপর আরো ধীরে বের করুন। এভাবে এক সপ্তাহ ১ ঘন্টা করে নিয়মিত করুন। পরের সপ্তায় তিনবার স্বাভাবিক ভাবে নেওয়ার পর চতুর্থবার আগের মত ধীরের গ্রহন করুন ও আটকিয়ে রাখুন ও ধীরে ছাড়ুন। এটা করুন ১ সপ্তাহ যতটা সম্ভব।
তারপর দুইবার স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করুন, তারপর আবার আগের কত ধীরে ধীরে ধীরে গ্রহন করুন, ও আটকে রাখুন। এভাবে ১৫ দিন করুন কয়েক ঘন্টা করে। এভাবে কিছুদিন করলেই আপনি আপনার মাঝে অদ্ভুদ পরিবর্তন লক্ষ করবেন। তারপর থেকে দম যতধীরের পারেন আটকিয়ে রাখুন, যতটা পারুন ধারন করুন, ও যত ধীরে পারেন ত্যাগ করুন। দৈনিক কমপক্ষে একঘন্টা একাধারে এটা করার অভ্যাস করুন।
আরেকটা পদ্ধতি হল এক নাসিকা দিয়ে গ্রহন করুন, আর এক হাত দিয়ে তা আটকিয়ে রেখে অন্য নাসিকা দিয়ে দম ত্যাগ করুন।
এটা হচ্ছে একদম সহজ উপায় সবার জন্যেই। তারপর আপনারা বিভিন্ন বইতে যেগুলো পাবেন, সেগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
এর মাঝেও অনেক কিছু আছে, যা জানার ও বুঝার জন্যেই একজন কামেল গুরুর কাছে যেতে হয়। এইসব করে দেহের উন্নতি হলেও আত্মার উন্নতি সেরকমভাবে সম্ভব নয়। তবে যাদের গুরু নেই, তারা অন্যসব বইয়ের পদ্ধতি অনুসরন না করে আমার দেওয়া পদ্ধতিটা অনুসরন করতে পারেন। কিছুদিন করলেই আমি এর ফলাফল নিজে বুঝতে পারবেন।
এটা করলে আপনার আয়ু প্রাণবায়ু পাবে, মনের চঞ্চলতা কমে যাবে, রতি শক্তি বা যৌন শক্তি অনেক বৃদ্ধি পাবে, যাদের অনেক স্বপ্নদোষ হয় তাদের স্বপ্নদোষ হবে না একদমই (স্বাভাবিক নিয়মে হবেই মাঝে মাঝে), যৌবন স্থীর থাকবে অন্যদের চেয়ে বেশি যদি সারাজীবন এই পদ্ধতি অনুসরন করে যান।
বিশেষ করে নারীদের জন্যে অনেক উপকারী। এটা করার ফলে তাদের চেহারার পরিবর্তন আসবে, ত্বকের লাবন্যতা বাড়বে ও স্থীর হবে, মুখে গোটা হবে না, কিশোরী থাকাকালীন সময় থেকে নিয়মিত এটা করলে অনেক বয়স হলেও চেহাড়ায় তার প্রভাব পড়বে না।
লেখকঃ DM Rahat