হোমপেজ ধ্যান ও দমের সাধনা প্রাণায়াম (পর্ব-০৪)

প্রাণায়াম (পর্ব-০৪)

317

প্রাণায়াম (পর্ব-০৪)

পূর্বের পোস্টে শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ যাচ্ছি শারীরিক ব্যয়ামের দিকে।

ছবিতে যে ব্যয়ামগুলো দেখতেছেন তার সবই যোগব্যায়াম। এগুলো তৈরি করেছি অনেক বড় বড় যোগী মনি ঋষিরা মানুষের কল্যানের জন্য। এই ব্যয়াম গুলোর পৃথক পৃথক নাম আছে, পৃথক পৃথক উপকারীতা রয়েছে। বিনা ঔষধে রোগ থেকে আরোগ্য লাভ ও সুস্থ থাকার জন্য প্রাণায়াম ভা যোগ ব্যয়াম এর বিকল্প নেই। তাই নিয়মিত এগুলো চর্চা করা উচিত দেহ ভাল রাখার জন্য। দেহ ভাল থাকলেই মন ভাল থাকবে, আর মন ভাল থাকলেই সাধনায় মন বসবে।

এইগুলো মূলত দেহ ভাল রাখার জন্য। এখানে আত্মিক কোনো উন্নতি আছে বলে মনে হয় না।এভাবে ব্যয়াম করার সময় প্রভুর কথা মনে রাখাটা আসলেই দুস্কর। অনেকে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলে না বুঝে। এই যোগ সাধন গুলো আকাশ ভেঙ্গে পরে নাই, এগুলোর স্রষ্টা একেকজন যোগীরা। এগুলো মানুষের নিজের তৈরি, তবে অবশ্যই স্রষ্টা প্রদত্ত। কারন সাধু বা যোগীরা যা লাভ করে সাধনার মাধ্যমে তা প্রভু প্রদত্তই হয়। যারা প্রাণায়াম শিক্ষা দেয়, এরা নিজেরাও অনেক সময় এই ব্যয়াম তৈরি করে তাদের ছাত্রদের অবস্থা অনুযায়ী। তাই একজন শিক্ষা গুরুর দরকার হয়।

তবে এইসব প্রাণায়াম সবাই করতে পারে না। সকলের পক্ষে সম্ভবও নয়। তবে শ্বাস প্রশ্বাস বা দমের সাধনটা সবাই করতে পারবে সব সময়। তাই আমার পোস্ট করা ৩নং পর্বটাই সবার অনুসরণ করা উচিত যারা অন্যান্য প্রাণায়াম গুলো করতে পারবে না। মূলত দমের প্রাণায়ামটাই প্রধান। ঐটা দেহ+মন দুইটারই উন্নতি সাধন করে।

অনেকে টাকা দিয়ে এসব যোগ ব্যয়ামের কোর্স করে। অনেক টাকাও নেয় তারা। এগুলো শিক্ষার জন্য অবশ্য টাকা খরচ করাও উচিত। তবে আত্মিক উন্নতির বিষয়গুলো কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এর অধীনে করে আগানো সম্ভব না। কোয়ান্টাম এ গ্রাজুয়েশন করেও কোনো লাভ নাই, অনেকে আবার প্রো মাস্টার করে। তাদের ভাব সাবই আলাদা মনে হয় যেন কি যেন হয়ে গেছে তারা, কি যেন জেনে ফেলছে। টাকা দিয়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভও করা যায়না এবং উন্নতিও করা যায় না। কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েশন আর প্রো মাস্টার করতে গিয়ে অনেক টাকা খরচ করছে অনেকেই। করাও উচিত। জানাও উচিত। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আপনি আধ্যাত্মিক ভাবে অনেক বড় কিছু হয়ে গেছেন।

কোয়ান্টামের উপর গ্রাজুয়েশন করা ও প্রো মাস্টার কম্পলিট করা ভাইদেরও দেখেছি, শিখছে বটে অনেক কিছু। কিন্তু আধ্যাত্মিক উন্নতির যে মূল বিষয় গুলো, তা তারা জানতে পারেনি। কারন টাকা দিয়ে সেসব জানা যায়না। তাই একজন গুরু অবশ্যই লাগবে আধ্যাত্মিক পথে আগাতে হলে।

অনেকে এসব শিখার পর যদি দেখে তার শিক্ষার নিয়ম এর বাইরে কেউ শিক্ষা দিচ্ছে বা বলতেছে, তখন তারা রেগে যায়। অথচ তারা এটাই জানে না যে, একজন যোগীগুরু চাইলে এরকম আরো হাজার পদ্ধতির জন্ম দিতে পারে। আমার লিস্টেও সেরকম পাবলিকের অভাব নাই। তাদের উদ্দেশ্যে বলতেই হচ্ছে যে, ‘আপনি কিছু নিয়ম শিখেন, আর আমরা শিক্ষা দেই, প্রয়োজনে নতুন নতুন বানাইও বটে’।

আর একটা বিষয় দেখবেন লক্ষ করলেই, সেটা হল যারা এসব শিক্ষা দেয়, তারা কিন্তু এতো শত ব্যয়াম করে না, তারা দমের সাধনটাই করে স্থিরভাবে বসে থেকে। তাই বলছি, যারা সময় আর সুযোগ পাবেন, তারা শারিরিক যোগ ব্যয়াম গুলোও করবেন। আর যারা সুযোগ ও সময় পাবেন না, তারা শ্বাস প্রশ্বাসেরটাই করবেন সব সময়। আমি আপনাকে সেরাটা দেওয়াই চেষ্টাই করেছি। প্রাণায়ামের ৩নং পর্বটাই মনযোগ দিয়ে পড়েন ও পালন করেন, তাতে আপনারই লাভ হবে।আমরা খেটে খাওয়া বাঙ্গালী, এতো ব্যয়াম করার সময় আমাদের কোথায়!!!! তাই সেরাটাই করুন নিয়মিত।

আরেকটা কথা হলো এইসব ব্যায়াম গুলোর আধ্যাত্মিক দিক আছে বলে আমার মনে হয়নি কখনো। তাছাড়া সূফীবাদে এইসব নাই। ওলীদের জীবনীতে এরকম হাত পা মিলিয়ে ঊঠিয়ে নামিয়ে কোনো সাধনা আমি পাইনি। তবে দমের বিষয়টা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সূফীবাদে দম সাধনাকে ‘পাস আনফাস’ এর সাধনা বলা হয়।

প্রাণায়াম নিয়ে আর মাত্র একটা পোস্ট দিব, আমার উদ্দেশ্য ছিল আপনাদের বিষয়টা বুঝিয়ে দেওয়া। এখন আপনারা বই পড়লে বা ভিডিও দেখলেও এগুলো নিজে বুঝে বুঝে করতে পারবেন বলে আশা করি। আপনি বেছে বেছে সেগুলো করবেন, যেগুলো আপনার জন্য দরকার, সব করার দরকার নেই।

লেখকঃ DM Rahat

» প্রাণায়াম (সবগুলো পর্ব পড়ুন)