হোমপেজ ইলমে মারেফত সিদরাতুল মুনতাহা রহস্য ভেদ।

সিদরাতুল মুনতাহা রহস্য ভেদ।

Advertisement:
IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

সিদরাতুল মুনতাহা রহস্য ভেদ।

সিদরাতুল মুনতাহা আরবী শব্দ। সিদরুন অর্থ বরই বা কূল গাছ, আর মুনতাহা অর্থ শেষ প্রান্ত, শেষ সীমায় উপনীত ইত্যাদি।

প্রচলিত অর্থে – মেরাজের সময়ে হযরত জিবরাইল আঃ যেখানে হযরত রাসূল পাক সঃ কে পৌঁছিয়ে দিয়ে উপরে গমন থেকে বিরত হয়েছিলেন, তাকে সিদরাতুল মুনতাহা বা ক্বালবের প্রথম স্তর সুদুরের মোকাম বলা হয়।

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ বলেন,

“নিশ্চয় তিনি (মোহাম্মদ সঃ) তাকে আরেকবার দেখেছিলেন সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে।” (সূরা আন নাজম, আয়াত নং ১৩ ও ১৪)।

IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

রাসূল পাক সঃ বলেন,

“আমি আমার প্রতিপালককে উত্তম আকৃতিতে দেখেছি।” (তাফসীরে তাবারীর ২৭ খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৪৮)।

“অতঃপর আমি সিদরাতুল মুনতাহার নিকট উপনীত হলাম। উহার এক একটা কুল ‘হজর’ অঞ্চলে তৈরি মটকার ন্যায়, উহার পাতা হাতীর কানের ন্যায়। জিবরাইল আমাকে বললেন, ইহা সিদরাতুল মুনতাহা। তথায় ৪টি প্রবাহমান নদী দেখতে পেলাম। ২টি ভিতরের দিকে এবং ২টি বাহিরের দিকে। নদীগুলি সম্পর্কে আমি জিবরাইলকে জিজ্ঞেস করায় তিনি বললেন, ভিতরের দিকে বেহেশতে প্রবাহমান ২টি নদী এবং বাহিরের দিকে প্রবাহমান ২টি হলো – নীল নদ ও ফোরাত নদী।” (বোখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফের সূত্রে মেশকাত শরিফ, পৃষ্ঠা নং ৫২৭)।

পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বর্ণনার পাশাপাশি তাসাউফের সাধনা করে সিদরাতুল মুনতাহার সাথে মানব জীবনেও অপূর্ব মিল খুঁজে পাই। সিদরাতুল মুনতাহা বলতে মানুষের ক্বালবের বাহিরের আবরণকে বুঝানো হয়েছে। এখানে বরই এবং পাতা রুপক অর্থে ব্যবহার হয়েছে। বরই যেমন কাঁটাযুক্ত গাছের ফল অর্থাৎ কাঁটার আঘাত অতিক্রম করে এই ফল লাভ করতে হয়। তেমনি ক্বালবের প্রথম স্তর সুদুরের মাকামে অবস্থানরত শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত হতে না পারলে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করা যায় না। আল্লাহর নৈকট্য লাভ জাগতিক যে কোন ফল লাভ অপেক্ষা কঠিন। এ কথা বুঝানোর জন্য হাদীসে বর্ণিত বরই বিরাট আকার বিশিষ্ট বলা হয়েছে।

সিদরাতুল মুনতাহার একটা কুল বলতে মানুষের ক্বালব বা হৃদপিন্ডকে বুঝায়। আর পাতা বলতে মানুষের হৃদপিন্ড সংশ্লিষ্ট কলিজা ও ফুসফুসকে বুঝায়। এছাড়া সেখানকার ৪টি প্রবাহমান নদী বলতে ক্বালব বা হৃদপিন্ডের ৪টি শিরাকে বুঝায়। ক্বালবের বা হৃদপিন্ডের দুটি শিরা অন্তর্মুখী এবং দুটি শিরা বহির্মুখী। অন্তর্মুখী দুটি শিরা আল্লাহর বাসস্থান নফসীর মাকামের সাথে সম্পৃক্ত বিধায় আল্লাহর প্রেম লাভ করে ক্বালবের ভিতরে পরম স্বর্গীয় প্রশান্তি অনুভব করে। আর বহির্মুখী দুটি শিরা মস্তিষ্কের সাথে সংযুক্ত থেকে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালিত করে মানবদেহ সজীব ও সতেজ রাখে।

মানুষের ক্বালবের প্রথম স্তর ছুদুরের মাকাম। এর উর্ধ্বে কোন ফেরেশতার যাওয়ার অধিকার নাই। সেখান থেকে প্রেমের মাধ্যমে আশেক-মাশুক অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর নৈকট্য লাভকারী বান্দার মিলনের দ্বার উন্মোচিত হয়। অর্থাৎ সিদরাতুল মুনতাহা আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথে একটি বিশেষ স্তর। ফেরেশতার স্বভাব তথা আল্লাহর নির্দেশ পালনের মাধ্যমে ঐ স্তর পর্যন্ত পৌঁছা যায়। আল্লাহর সাথে মহামিলন কামনাকারী সাধক কেবল প্রেমের আকর্ষনে ঐ স্তর এমনকি মধ্যবর্তী আরো ৫টি স্তর যথা – নশর, শামছি, নূরী, কুরব ও মাকিম অতিক্রম করে নফসীর মাকামে আল্লাহর দীদার লাভ করে তাঁর সাথে ফানা বা বিলীন হয়ে থাকেন।

পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরীফের উপরোক্ত আলোচনা থেকে পরিশেষে বলা যায় যে, জিবরাইল আঃ মেরাজের রজনীতে হযরত রাসূল পাক সঃ কে উর্ধ্বলোকের যে স্হানে নিয়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন, উহাই সিদরাতুল মুনতাহা। আর জিবরাইল আঃ যেহেতু নফস থেকে মুক্ত, সেহেতু তিনি সিদরাতুল মুনতাহা অতিক্রম করে আল্লাহতে পৌঁছাতে পারেননি। এছাড়াও কোন ফেরেশতা ক্বালবের প্রথম স্তর ছুদুরের মোকাম অতিক্রম করতে পারে না।

গ্রন্থসূত্র: আল্লাহ কোন পথে।
নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।

রাসূল (সাঃ) বোরাকে আরোহন করার রহস্য ভেদ।