হোমপেজ ইসলামের ইতিহাস ইহুদিরা কোরআন গবেষণা করে হয় বিজ্ঞানী! আর আমরা হই ভিক্ষুক!

ইহুদিরা কোরআন গবেষণা করে হয় বিজ্ঞানী! আর আমরা হই ভিক্ষুক!

ইহুদিরা কোরআন গবেষণা করে হয় বিজ্ঞানী! আর আমরা হই ভিক্ষুক!

হযরত রাসূল পাক (সঃ) এর কাছে যখন ওহী নাজিল হত। তখন সেই পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত লিখে রাখার কোন আধুনিক কাগজ কলম ছিল না। আর এই পবিত্র কুরআন শরীফ দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে খন্ড খন্ড আকারে নাজিল হয়েছে। এটা কিন্তু একদিনে নাজিল হয়নি বরং ২৩ বছর ধরে নাজিল হয়েছে। তখন সাহাবীরা চামড়া, পাথরখন্ড এবং গাছের বাকলায় লিখে রাখতেন। যাতে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াতগুলো হারিয়ে না যায়।

তাই রাসূল পাক সঃ সাহাবীদেরকে হুকুম করলেন, যখন যে আয়াত নাজিল হবে তা মুখস্থ করে রাখার জন্য। এইভাবে সাহাবীরা পবিত্র কুরআন শরীফ সংরক্ষণের জন্য মুখস্থ করতে লাগলেন। যাতে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত হারিয়ে না যায়। কিন্তু আমাদের দেশে কি হচ্ছে, একবার ভেবে দেখুন তো। ছোট ছোট বাচ্চাকে জোর করে এবং অকথ্য নির্যাতন করে কোরআনের হাফেজ বানানো হচ্ছে। ধর্ম তো কখনো জোরের বিষয় নয়। ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে হয় প্রেমের মাধ্যমে। এই ঐশী জ্ঞান কখনো জোর করে মুখস্থ করার বিষয় নয়। এটি হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করার বিষয়।

একজন সাহাবীর একটি সূরা পড়তে লেগেছিল ১২ বছর। আর আমরা জোর করিয়ে হাফেজ বানিয়ে দিই ৫ বছরে। বাহ কি চমৎকার আপনাদের বিবেক বুদ্ধি। রাসূল পাক সঃ বাচ্চাদেরকে খুব স্নেহ করতেন এবং তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে বলছে। রাসূল পাক সঃ কি কাউকে জোর করে পিটিয়ে হাফেজ বানিয়েছেন ভাই। নাকি প্রেম ভালোবাসা দিয়ে ধর্ম শিখিয়ে গেছেন। তাহলে সমাজে কেনো উল্টোটা প্রচলন হচ্ছে? কারা এর মদদদাতা? কারা এই ধরনের রাসূল পাক সঃ বিরোধী শিক্ষার পিছনে কলকাঠি নাড়ছে?একবারও কি কখনো ভেবে দেখেছেন ভাই। আমাদের সমাজে লোভনীয় অফার দেওয়া হচ্ছে। হাফেজের পিতামাতা নুরের টুপি পড়ে হাশরের মাঠে উঠবে।

আর একটি অক্ষর পড়লে ১০ নেকি এবং হাফেজ হতে পারলে নিশ্চিত বেহেশত। ধর্মটাকে সোয়াব এবং বেহেশতের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলছে। আচ্ছা বলুন তো, কত কোটি সোয়াব দিয়ে বেহেশত পাওয়া যায়। এই প্রশ্নের উত্তর কি আপনার জানা আছে? আমরা কি কখনো রাসূল পাক সঃ এর চরিত্র হৃদয়ে ধারণ করার চিন্তা করেছি অথবা শিক্ষা দিচ্ছি? অথবা আল্লাহ এবং রাসূল পাক সঃ কে পাওয়ার চিন্তা করেছি। কিভাবে আমরা রাসূল পাক সঃ ও আল্লাহর সন্ধান পাব? এই শিক্ষা গুলো মাদ্রাসায় নেই কেনো আপনি জানেন?

ভারতীয় উপমহাদেশে ১৭৮২ সাল থেকে খ্রীষ্টানরা সরকারীভাবে প্রথম কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসা তৈরি করে। যার ১ থেকে ২৬ জন প্রিন্সিপাল এবং অন্যান্য শিক্ষক ছিল খ্রীষ্টান। আর তাদের মেয়াদ কাল ছিল ১০০ বছর। তারাই এই মাদ্রাসার সিলেবাস প্রণয়ন করে যায় এবং তা আজও পর্যন্ত সেই সিলেবাস অব্যাহত আছে। বাহ কি অবাক কান্ড। খ্রীষ্টানদের অর্থায়ন, সিলেবাস প্রণয়ণ এবং শিক্ষক ও প্রিন্সিপাল দ্বারা জনদরদী মাদ্রাসা তৈরি হয়ে গেল। মুসলমানদের জন্য খ্রীষ্টানদের কত দরদ। খ্রীষ্টানরা মুসলমানদেরকে ইসলাম শিক্ষা দিচ্ছে। আচ্ছা বলুন তো, কোন মুসলমান কি আজও পর্যন্ত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ও ইহুদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হয়েছে।

অথচ তারা আমাদের ইসলাম শিখিয়ে গেল। ইংরেজরা শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশের সম্পদ লুট করেননি বরং পাশাপাশি ইসলাম ধর্মকে চিরতরে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই জন্য আমরা পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ে রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করি এবং জঙ্গি তৈরি হয়েছি। আর মসজিদের অল্প টাকার বেতনে চাকরী করছি। আর ইহুদি ও খ্রীষ্টানরা পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ে বড় বড় বিজ্ঞানী হচ্ছে। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফ হলো মহাগ্রন্থ বিজ্ঞানময়। পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যা কিছু বিজ্ঞানের আবিষ্কার দেখছেন, তা পবিত্র কুরআন শরীফ থেকে গবেষণা করে পেয়েছে। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফ হলো মানব কল্যানময়।

যখনই ইহুদি ও খ্রীষ্টান বিজ্ঞানীরা ভালো কিছু আবিষ্কার করছে, তখনই আমাদের মোল্লারা জোর গলায় ওয়াজে বলে এটা পবিত্র কুরআন শরীফ থেকে আবিষ্কার করছে। আর আমরা বিবেকহীন জনগণ করতালি দিই। এই করতালির মাধ্যমেই আমরা আত্মতুষ্টিতে থাকি। একবারও কি আমরা প্রশ্ন করেছি মৌলভী সাহেব আপনি তো পবিত্র কুরআন শরীফ সম্পূর্ণ মুখস্থ করছেন। আপনি কেনো এটা আবিষ্কার করতে পারলেন না। অথচ সারাবিশ্বে লক্ষ লক্ষ কোরআনের হাফেজ রয়েছে। তারা কেনো একটিও আবিষ্কার করতে পারে না। এর অন্যতম কারণ হল, তারা শুধু সোয়াব ও বেহেশতের লোভে পবিত্র কুরআন শরীফ মুখস্থ করছে। কখনো তারা পবিত্র কুরআন শরীফ গবেষণা এবং এর গভীরতা বুঝার চেষ্টা করেনি। করবে কি করে শিক্ষাটা তো আমরা পেয়েছি খ্রীষ্টানদের কাছ থেকে।

অথচ বিজ্ঞানের প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইবনে সিনা, গণিতশাস্ত্রে আল বিরুনী, রসায়নশাস্ত্রে জাবির ইবনে হাইয়ান, দার্শনিকশাস্ত্রে ইবনে খালদুন এবং অর্থনীতিশাস্ত্রে আবু হানিফ আল নুমান অন্যতম অবদান রেখেছিল। কারণ তাঁরা সকলেই ছিল সুফিবাদের উঁচুমানের সাধক। তাঁরা কিন্তু এগুলো পবিত্র কুরআন শরীফ থেকেই আবিষ্কার করেছিল। কারণ তাঁরা পবিত্র কুরআন শরীফ হৃদয় দিয়ে বুঝে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে আবিষ্কার করেছিল। আমাদের মতো অন্ধের মতো কোরআন শরিফ মুখস্থ করে নয়। আরে ভাই পবিত্র কুরআন শরীফ তো মুখস্থ করার বিষয় নয়। বরং তা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে আল্লাহ ও রাসূলের সাথে যোগাযোগ করার বিষয়।

কিভাবে আমরা আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সাক্ষাৎ করব? আর আল্লাহ ও রাসূলের সাথে সাক্ষাৎ করার শিক্ষা দিয়ে থাকেন অলী আল্লাহগণ। আমরা এই শিক্ষা থেকে হারিয়ে পড়ে আছি সোয়াব ও বেহেশত নিয়ে। কারণ আমাদের শিক্ষার নাটেরগুরু হল খ্রীষ্টানরা। তারা আমাদের যা শিখিয়েছে, তাই আমরা শিখেছি। আসলে এটা আমাদের অজ্ঞতা এবং বিবেকহীনতার ফসল ভোগ করছি।

আমি কিন্তু মোটেও মাদ্রাসা ও পবিত্র কুরআন শরীফ মুখস্থ করার বিপক্ষে নই বরং জোরালো পক্ষে। কিন্তু আমি খ্রীষ্টানদের সিলেবাসের বিপক্ষে। মাদ্রাসায় যদি ইলমে তাসাউফ ও ইলমে মারেফাতের বিদ্যা শিখানো হত, তাহলে আমাদের সমাজে জঙ্গি ও ভিক্ষাবৃত্তি তৈরি হত না। বরং তৈরি হত বড় বড় বিজ্ঞানী এবং আলোকিত সমাজ ব্যবস্হা। অধমের লেখায় কারোর মনে আঘাত দিয়ে থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন।

নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।