বিশ্বওলি খাজাবাবা ফরিদপুরীর একটি কারামত
জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেবের জীবন থেকে..
আশির দশকে কুষ্টিয়া জেলা হইতে অসংখ্য মানুষ বিশ্বওলী শাহ সূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কূঃছেঃআঃ) ছাহেবের দরবার শরীফ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে গিয়েছে ও মুরিদ হয়েছিল। সেই সময়ে সকলের মত একজন সখের বসেই বলা যায় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফ,আটরশিতে গিয়ে ছিলেন যার নাম হলো জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী। কুষ্টিয়া শহরেই জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেবের বাসা। তিনি প্রথম বার দরবার শরীফে গেলেন সমস্ত দরবার ঘুরে ঘুরে দেখে আসলেন মহাওলী বিশ্বওলী কি প্রেমের বাগান সাজাইছেন ফরিদপুরের আটরশিতে।
কিন্তু তিনি লক্ষ করলেন যে সমস্ত জাকের ভাইদের সাথে কাফেলা করে দরবার শরীফে এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী পীর কেবলাজান হুজুরের নিকট নানাবিধ সমস্যা নিয়ে নালিশ দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি কোন নালিশ না দিয়েই শুধু মাত্র হযরত পীর কেবলাজান হুজুরের উপদেশ নিয়েয় চলে আসলেন বাড়িতে। জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেবের একটি সমস্যা ছিলো বা বড় রোগ ছিলো যা তিনি দরবার শরীফ থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর রোগটা অনেক বেশি বেড়েছে তা হলো এজমা বা হাঁপানী রোগ।
অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখায়েছেন কিন্তু তার রোগ কখনো সারে না। ঔষধ খেলে রোগ টি নিস্তেজ থাকে কিন্ত ঔষধ না খেলে রোগ টি বেরে যায়। এই ভাবে চলতে থাকলো কিছু দিন যাওয়ার পর। তার মনে হলো আপন পীর হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কূঃছেঃআঃ) ছাহেবের কথা। তিনি দেখেছেন অনেক মানুষ হযরত পীর কেবলাজান হুজুরের নিকট বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নালিশ দিয়ে উপকার পাইতে।
এই চিন্তা করার পরই তিনি নিয়ত করলেন আগামি কালই হযরত পীর কেবলাজান হুজুরের নিকট গিয়ে নালিশ দিবেন। পরের দিন রওনা হয়ে গেলেন আটরশির পথে। দরবার শরীফে পৌঁছায়ে হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী কেবলাজান ছাহেবের সাক্ষাৎ পাইলেন ও নালিশ দিলেন।
সবকিছু শোনার পর হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী পীর কেবলাজান হুজুর এক খাদেম সাহেবকে নির্দেশ দিলেন ‘বাবা চৌধুরী সাহেবকে ভিতর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে এক সানকি গরুর ভুনা মাংস খায়তে দেন’ এই কথা সুনে জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেব চিন্তায় পরে গেলেন।
কারণ হাঁফানী রোগের মহা শত্রু হলো গরুর মাংস। সেই গরুর ভুনা মাংস খেতে বলেছেন হযরত পীর কেবলাজান হুজুর। তিনি খাদেম সাহেবের হাতে পায়ে ধরে অনেক কান্না কাটি করতে লাগলেন ও বলতে লাগলেন ভাইজান আমাকে ছেরেদেন আমি বাড়ি চলে যায়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। খাদেম সাহেব বললেন হযরত পীর কেবলাজান হুজুরের হুকুম এটা আপনাকে খেতেই হবে। কোন উপায়ান্তর না দেখে জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেব সেই এক সানকি ভুনা গরুর মাংস খেলেন।
ঐ মাংস খাওয়ার পর জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেবের শরীর ঘামতে লাগলো ও কিছু সময় পর তার ঘুম লাগলো। সে আটচালা মসজিদের বারান্দায় ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুম ভাঙ্গে যাওয়ার পর তিনি অনুভব করলেন যে তার শরীরে আগের চেয়ে অনেক সুস্থ মনে হচ্ছে। তার শরীরে আগের চেয়ে অনেক শক্তি সঞ্চার হয়েছে। ঠিক যুবক বয়সের ছেলেদের মত। এই সমস্ত ঘটনা ঘটার পর তিনি আপন পীর হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কূঃছেঃআঃ) ছাহেবের নিকট থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে আসলেন।
পরবর্তীতে জনাব আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেবের মারা যাওয়ার আগ পযন্ত হাঁফানী রোগ তার শরীরে দেখা যায় নাই। এই ভাবে আপন পীরের ওছিলায় দয়াল নবী রাসূলে পাক (সাঃ) এর তোফায়েলে আল্লাহ্ পাকের দয়ায় তিনি কঠিন রোগ হইতে মুক্তি লাভ করলেন।
সূত্র: কারামতে বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী – কুঃছেঃআঃ