মাজার ভাঙলে কার ক্ষতি?

মাজার ভাঙলে কার ক্ষতি?

আমার দাদাপীরের মাজার আমরা ৩-৪ চার ভেঙ্গেছি। কয়েকবছর পর আবার ভাঙবো ইন শা আল্লাহ। অনেকেই এটি জানেন। প্রতিবার ভেঙেছি পূর্বের চেয়ে আরও মজবুদ ও সুন্দর করে গড়ে তুলার জন্য। প্রতিবারই মাজার ও দরবার আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সুন্দর করা হয়েছে। আরও সুন্দর করার জন্য আরও কয়েকবার ভাঙতে হবে। খুব শীঘ্রই আমি ভাঙবো, তারপর আমার সন্তান ভাঙবে। এভাবে মাজার আর দরবার ভাঙতে থাকবো। কিন্তু মাজার আর দরবার ধ্বংস হবে না কখনো। প্রতিবার আগের চেয়ে মজবুদ ও সুন্দর হবে।

সাম্প্রতিককালে একদল উদ্রপন্থিরা বিভিন্ন ওলীর মাজার ও দরবার ভেঙ্গেছে, ভাঙছে এবং আগামীতে আরও ভাঙবে। কিন্তু এতে কি মাজার আর দরবার হারিয়ে যাবে? কোনোদিনও না। বরং প্রতিবারই মাজারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। আশেক-ভক্তজন আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্ব দিবে।

মাজার বা দরবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয় যে, এখানে লুকসানের ভয় আছে বা লাভের আশা আছে। যেখানে লাভ-ক্ষতির বিষয় নাই, সেখানে জাহেলরা কিভাবে ভাবে যে, মাজার আর দরবার ধ্বংস করে ক্ষতি করতে তারা সক্ষম?

আল্লাহর ওলীর দেহ যেখানে থাকে, সেখানেই শুধু মাজার হয় না। তিনি কোথাও বিশ্রাম নিলেও সেখানে মাজার গড়তে পারে ভক্তেরা। মাকামে ইব্রাহীমে কি ইব্রাহীম আঃ এর দেহ আছে? নেই, আছে শুধু পদচিহ্ন। সারা পৃথিবীতে অসংখ্য জিয়ারতের স্থান আছে, যেখানে ওলীদের দেহ রাখা হয়নি। অনেক ওলী আছেন, যাদের মাজার সংখ্যা একাধিক। একই ওলীর মাজার দেশ ও বিদেশে। সব জায়গায় দেহ নেই। দেহের দরকারও নাই সবক্ষেত্রে। মাজার হলো এমন এক জায়গা, যেখানে জিয়ারত করা হয়। আর দরবার? দরবার মানে ইট, বালু, কাঠ আর টিনের ঘর নয়। ভক্তেরা যখন যেখানে বসে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আল্লাহ-রাসূলকে স্মরণ করেন, ঐ মূহূর্তে সেটাই দরবার। তো উগ্রবাদীরা মাজার আর দরবার ধ্বংস করবে কিভাবে? তারা ত জানেই না যে, মাজার আর দরবার সম্পর্কে কি?

বাংলাদেশে কি খাজা বাবার মাজার আছে? নেই। কিন্তু প্রতিবছর সারাদেশে খাজা বাবার নামে হাজার হাজার ডেক বসানো হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষকে তবারক খাওয়ানো হয়। এদেশের ধর্মান্ধরা খাজা বাবার নাম কিভাবে ধ্বংস করবে? যত ডেক বসানো হয়, সবই তাঁর আশেকের জন্য জিয়ারতের স্থান (মাজার)।

মাজার ভাঙলে ওলীদের কোনো ক্ষতি হয় না। বরং যারা ভাঙ্গে, তারা নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করে। কেউ রোগে-শোকে ভুগে মরে, কেউ অস্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করে, কেউ মানসিক যন্ত্রণায় দুনিয়াতেই জাহান্নামের স্বাদ পেয়ে যায়। যে ওলীর মাজার ভাঙ্গা হয়, তাঁর নাম-জশ আরও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু যারা মাজার ভাঙ্গে, কয়দিন পর পৃথিবী থেকে এদের নাম নিশানা মুছে যায়। যুগে যুগে যারা মাজার ভেঙ্গেছে, তাদের কথা কি কেউ মনে রেখেছে? যাদের মাজার ভাঙ্গা হয়েছে, তাদের মাজার আল্লাহ তা’তায়া আরও সুন্দর করে গড়ে দিয়েছেন। কারণ ওলী-আউলিয়া হলেন আল্লাহর বন্ধু।

আমি অনেককেই দেখছি যে- তারা ওলী-আউলিয়ার মাজার রক্ষায় দোয়া করছেন। অবাক হয়ে যাই এসব দেখে, জাহেলরা ত ওলীদের শান বুঝে না, তাই বলে কি তরিকতের লোকেরাও বুঝবে না! তাদের জন্য আমি বলবো-
আমি তো ওলীদের দয়ার পাত্র হতে চাই,
তাদের জন্য দোয়া করার সাহস আমার নাই।

লেখাঃ DM Rahat

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel