ভিন্ন-ভিন্ন জাতির ভিন্ন-ভিন্ন এবাদত, কিন্তু লক্ষ্য একটাই।
তোমরা তো মূর্তিপূজা করো, হাতে প্রদীপ নিয়ে দাঁড়িয়ে মন্ত্রপাঠ কর। সুরা ইব্রাহিমের চার নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক জাতির জন্য অবশ্যই রসুল পাঠানো হয়েছে। কেবল তাহাই নহে। বলা হয়েছে, সেই জাতির নিজস্ব ভাষায় নিজস্ব সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে রসুল পাঠানো হয়েছে। জাজিরাতুল আরবের জন্য মহানবি মোহাম্মদ রসুলুল্লাহ্, বেথেলহামের জন্য যিশুখ্রিস্ট তথা ইসা রুহুল্লাহ, মিশরের জন্য মুসা কালিমুল্লাহ, সুরিনামের জন্য হজরত লুত, ড্রাবিডিয়ানের জন্য হজরত দাউদ এবং সোলায়মান, আদজাতির জন্য হজরত হুদ এবং সামুদ জাতির জন্য সালেহ এইভাবে প্রত্যেক জাতির মধ্যে রসুল পাঠানো হয়েছে।
তাহলে অখণ্ড ভারতে (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান) কি রসুল পাঠানো হয় নাই? যদি বলো পাঠানো হয় নাই, তাহলে সুরা ইব্রাহিমের চার নম্বর আয়াত-এর উপর কেমন করে বিশ্বাস করা যায়? হিন্দুরা মূর্তিপূজা করে, কিন্তু মূর্তি উপলক্ষ লক্ষ্য ব্রহ্মা।
সুতরাং ব্রহ্মার পূজা করা হয় উপলক্ষ মূর্তির মাধ্যমে। মুসলমানদের কাবা চারটা দেয়াল দিয়ে বানানো। মুসলমান কখনও দেয়াল-পূজা করে না বরং দেয়ালের ভিতরে যে আল্লা-জাল্লা শানহু থাকেন তাঁরই এবাদত করেন। মুসলমানের প্রার্থনার মূল বিষয়টি হলো সোবহানা রাব্বুল আজিম ও সোবহানা রাব্বুল আলা তিনবার করে পড়ার মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া আর হিন্দুদের মূল বিষয়টি হলো মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে নারায়ণকে পাওয়া। এতেই বুঝা যায় যে, প্রত্যেক জাতির নিজেস্ব সংস্কৃতির উপর দাঁড়িয়ে রসুল পাঠানো হয়েছে। এই কথাগুলো গর্দভ মানতে পারে না। মানে তারাই যারা জ্ঞানী ও প্রেমিক। প্রেমবিহনে প্রার্থনাটি একটি শুকনো কাষ্ঠখণ্ডের মতো।
গ্রন্থ: মারেফতের গোপনেরও গোপন কথা (পৃষ্ঠা: ৭২), ডা. কালান্দার জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আল সুরেশ্বরী।