চুরাশি জনম কি? (জন্ম তত্ত্ব)

0

চুরাশি জনম কি? (জন্ম তত্ত্ব)

লালন সাঁইজীর অনেক বানিতে আমরা চুরাশি জনমের কথা শুনি, যা জানলাম, ধারণা পেলাম এই জনম চুরাশির বিষয়ে লালনের এক বানী-

“চিনলাম না সে গুরু কি ধন
করলাম না তার সেবা সাধন।
ঘুরতে বুঝি হলো রে মন আবার চুরাশি।।”

প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ কারণ কার্য নিয়ে দুনিয়ায় আসে। পৃথিবীতে আসার সময় একটা প্রক্রিয়া পার করে আসতে হয়। জীব জগতের ৮৪ চুরাশি লক্ষ যোনি পার করে চুরাশি লক্ষ বার জন্ম মৃত্যুর পর মানবকূলে আসে। চুরাশি লক্ষ বার এই প্রক্রিয়ায় ৩০ লক্ষ বার বৃক্ষযোনিতে, ৯ লক্ষবার জলচর মৎস্যযোনিতে, ১০ লক্ষবার কৃমিযোনিতে, ১১ লক্ষবার পক্ষীযোনিতে, ২০ লক্ষবার পশুযোনিতে ঘুরে ঘুরে সবশেষে গাভীযোনি হয়ে মানব যোনিতে এবং মানবকূলে এসে ৪ লক্ষবার জন্ম-মৃত্যু ঘটে।

লালন সাঁইজীর পুনঃজনম নিয়ে বলেন,
“দেখনারে মন পুনঃজনম কোথা হতে হয়,
মরে যদি ফিরে আসি স্বর্গ নরক কে বা পায়।।

পিতার বিজে পুত্রের সৃজন,
তাইতে পিতার পুনঃজনম।
পঞ্চভূতে দেহের গঠন, আঁলেক রূপে ফেরে সাঁই।।

ঝিয়ের গর্ভে মায়ের জনম,
এ বড় নিগূঢ় মর্ম।
শোণিত শুক্ল হলে গম্ভূ,
তবে সে ভেদ জানা যায়।।

শোণিত শুক্ল হলে বিচার,
জানতে পারবি কে জীব কে ঈশ্বর।
সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তুই
ঘুরে ম’লি মনের ধোঁকায়।। ”

মানুষ তার জন্ম উপাদান নিজ নিজ কর্ম দ্বারা ঘটিয়ে মানবকূলে আসে। লোভ, দ্বেষ ও মোহ এই তিনের সমন্বয় কর্ম কার্যের উপাদান স্বরূপ স্মৃতি কোষে জমা হয়। এই প্রক্রিয়ায় প্রতিবার জন্মে দুনিয়ার লোভে পরে, ধোঁকায় পরে, পাপ কর্মের ফলস্বরূপ বারং বার নরক জ্বালা ভোগ করে। কেবল একজন সম্যক গুরুর নিকট নিজেকে সমর্পণ করা ব্যাতিত কেউ এই চক্রের উপাদান শূণ্য হতে পারে না।

– লিংকন।

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel

Comments

Please enter your comment!
Please enter your name here