হোমপেজ ইলমে মারেফত বীর্যক্ষয়ই সকল দুর্গতির মূল কারণ

বীর্যক্ষয়ই সকল দুর্গতির মূল কারণ

1291

বীর্যক্ষয়ই সকল দুর্গতির মূল কারণ

বীর্যক্ষয় সকল দুঃখের ও দুর্গতির আকর। বীর্যক্ষয়ে দৈহিক, মানসিক ও আত্মিক সর্বপ্রকার অধঃপতন হয়। দুধ-সর, ছানা ননী খাও, ডন-কুস্তি, ডাম্বেল-মুদার কর, আর সঙ্গে সঙ্গে বীর্যক্ষয় কর, —কিছুতেই তােমার দেহ সুগঠিত হইবে না, স্বাস্থ্য অক্ষুন্ন থাকিবে না। সাংখ্য-পাতঞ্জল পড়, ভক্তিযােগ-জ্ঞানযােগের অনুশীলন কর কিম্বা বিশ্বপ্রেমের মলয়-হিল্লোলে উড়িয়া বেড়াও, আর গােপনে গােপনে বীর্যক্ষয় কর, —কিছুতেই তােমার কিছু হইবে না, যােগীও হইতে পারিবে না, জ্ঞানীও হইতে পারিবে না, ভক্তিও লাভ করিতে পারিবে না, বিশ্বকেও ভালবাসিতে সমর্থ হইবে না।

গীতাই কণ্ঠস্থ কর, আর অহােরাত্র হরিসঙ্কীৰ্ত্তনই কর, বীর্যক্ষয় যদি রুদ্ধ না কর, তােমার ধৰ্ম্মজীবনও প্রস্ফুটিত হইতে পারিবে না। পরন্তু দেহের সার পদার্থ শুক্ৰধাতুকে যদি ধরিয়া রাখিতে পার, ডাল-ভাত খাইয়াও তােমার দেহের কান্তি-পুষ্টি ফাটিয়া পড়িবে, শাস্ত্রচর্চা না করিয়াও একমাত্র নিয়ত উপাসনার ফলেই তােমার ব্রহ্মজ্ঞানের অভাব দূর হইবে। কারণ, যাহার ব্যয় নাই, আয় যদি তাহার সামান্যও হয়, তথাপি কালক্রমে সে কোটিপতি হইতে পারে।

বীর্যকে যদি ক্ষয়িত না কর, তাহা হইলে সাধারণ আহাৰ্য্য বস্তু যেটুকু রস-রক্তাদি উৎপন্ন করিবে, তাহাই দিনের পর দিন তােমাকে অধিকতর বলবান্ এবং সামর্থশালী করিয়া তুলিবে। বীর্যক্ষয়-পরায়ণের মস্তিষ্ক দুৰ্বল এবং সর্বাঙ্গের স্নায়ুমণ্ডলী অবসাদগ্রস্ত হইয়া পড়ে। ফলে, অনুভবের শক্তি ও চিন্তার ক্ষমতা হ্রাসপ্রাপ্ত হয়।

সুতরাং উপনিষৎ প্রভৃতি মহাজ্ঞানপূর্ণ শাস্ত্রনিবহের প্রাণারাম উপদেশ চিত্তে ধারণ করিয়া রাখা তাহার পক্ষে অসম্ভব হয়; সমগ্র জীবন নাম-কীৰ্ত্তন করিয়াও মহােৎসবের পাচকের ন্যায় সর্বশেষ অপক্ক চাউল-ডাইল কোমরে বাঁধিয়া লইয়া তাহাকে শুষ্কমুখে শূন্যোদরে ঘরে ফিরিয়া আসিতে হয়।

গ্রন্থসূত্রঃ সাধনা ও সংযম।