ধর্ষনের জন্য মেয়েরাই কি দায়ী!
ধর্ষন এখন আমাদের সমাজের একটা সুপরিচিত নাম। আগে ধর্ষন কি, সেটা ছোট ছেলে মেয়েরা বুঝতই না। কিন্তু এখন ত বাচ্চা মেয়েরাও ধর্ষিত হচ্ছে, তাই সব বয়সের বাচ্চারাই এখন ধর্ষনের প্রকৃত অর্থ বুঝে। বাংলা বা হিন্দি মুভিতে দেখে যা বুঝতাম যে, মেয়েদের সাথে একটু জোর করে জোরা জোরা করলেই বুঝি তাকে ধর্ষন বলে। এই সামান্য বিষয় টাকে ধর্ষন যখন ভাবতাম, তখনও ধর্ষণকে ঘৃনা করতাম খুব। আর যখন ধর্ষনের প্রকৃত অর্থ বুঝলাম, তখন ত এটার প্রতি ঘৃনা আরো বেড়ে গেছে কয়েক গুন।
তবে যখন থেকে ধর্ষনের অর্থ বুঝতে শিখলাম, তখন থেকে এটাও শুনতে থাকলাম যে সবার মুখে, “ধর্ষনের জন্য মেয়েদের পোশাক ও অশালীন ভাবে বাইরে চলা ফেরাই দায়ী”। পুরুষের দোষ এইক্ষেত্রে খুব কমই শুনেছি। তাছাড়া মেয়েদের উগ্র ভাবে চলা ফেরা আমি নিজেও পছন্দ করি না। মেয়েরা থাকবে শান’ত সভ্য ভদ্র ও শালীন পোশাক পরিহিতা। যা ই হোক, সবাইকে এটাই বলতে শুনেছি যে, ধর্ষনের জন্য ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই দায়ী বেশি। এমনকি সোহাগী জাহান তনুর মত হিজাব পরিহিত মেয়েকে ধর্ষণের জন্যেও অনেককেই দেখেছি পোশাককে দায়ী করতে।
আচ্ছা এইবার আসল আলোচনায় আসি, ধর্ষনের জন্য কি শুধু মেয়েরাই দায়ী!
- যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে ৩ মাসের কন্যাকে কেন ধর্ষিত হতে হচ্ছে! ৩ মাসের দুধের বাচ্চার জন্যও কি পর্দা করা ফরজ!
- ৯০ বছরের বৃদ্ধা মহিলা কে কেন ধর্ষিত হতে হচ্ছে! তার উপরও কি পর্দা করা ফরয!
- ঘরে ঢুকে কেন নারীদের ধর্ষন করা হচ্ছে! ঘরের ভিতরে থাকার চেয়ে বড় পর্দা আছে কি!
- জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষন করে হচ্ছে কেন! বোরকা পড়লেই কি সে বুলেট প্রুভ জামার মত সন্ত্রাসীদের থাবা থেকে রক্ষা পেত!
- বা কর্তৃক মেয়ে ধর্ষিত হয়ে বাবার কন্যা সন্তান জন্ম দিচ্ছে কেন! বাবার সাথেও কি পর্দা করা ফরয! মেয়ের প্রতিও কি বাবার কাম ভাব থাকে!!!
- বাবার সামনে নৌকার মধ্যে জনসমাজে প্রকাশ্যে একটি মেয়ে কেন ধর্ষিত হচ্ছে!!! বাবার চেয়ে কি বড় অবিভাবক সন্তানের আছে!
উপরে খুব কমন বিষয় গুলো তুলে ধরলাম, যা আজ অহরহ ঘটছে। তবুও একদল মানুষ নারীদেরই দোষ দিচ্ছে। যা ই হোক, এরা এমনই থাকবে। তবে এইবার একটু ভিন্ন ঘটনা শুনাই, সেটা শুনার পরও যারা ধর্ষন ইভটিজিং এর জন্য মেয়েদের পোশাককে দায়ী করবে, তাদের বিষয়ে মন্তব্য করতে আমার রুচিতে বাধবে।
“কবর থেকে দেহ তুলে গণধর্ষণ!”
সংবাদ সংস্থা (আনন্দ বাজার পত্রিকা)
২৪ অক্টোবর, ২০১৫, ১৯:০৫:০১
এ দেশে কবরেও সুরক্ষিত নয় মেয়েরা। সেখানেও তাদের তাড়া করে বেড়ায় পুরুষদের বিকৃত যৌন লালসা।
আচ্ছা এখন বলেন ত, মৃত্যুর চেয়ে বড় পর্দা আর কি হতে পারে একজন নারীর জন্য। কবরের চেয়ে সুরক্ষিত ঘর আর কি হতে পারে মানুষের জন্য! এই মৃত্যু আর কবর দুইটা মহা পর্দাও ত মেয়েদের ধর্ষনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারল না। এর পরও কি আপনি বলবেন “ধর্ষনের জন্য মেয়েদের পোশাক দায়ী”? উত্তর টা আপনারাই দিন, আমি আর কিছুই বলব না।
তবে হ্যা, নারীরা অবশ্যই পর্দা করবে ও শালীন পোশাক পরিধান করবে। এটা প্রতিটি ধর্মের বানী। ইসলাম ধর্ম পর্দার অধিক গুরুত্ব দিয়েছে, হিন্দু ধর্ম ও খ্রীষ্টান ধর্মে নারীদের পর্দার আড়ালে থাকতে বলা হয়েছে ও শালীন পোশাক পরিধান করার কথা বলা হয়েছে। পর্দা একজন নারীর জন্য মাথার তাজ স্বরুপ। এটা নারীকে সম্মানিত করে তুলে। পর্দা করা মুসলিম নারীদের উপরই নয়, বরং সমস্ত নারীরই পর্দা করা আবশ্যক।
– DM Rahat