হোমপেজ ইলমে মারেফত জীবাত্মা এবং পরমাত্মা (ইলমে মারেফত)

জীবাত্মা এবং পরমাত্মা (ইলমে মারেফত)

706

জীবাত্মা এবং পরমাত্মা (ইলমে মারেফত)

মানুষের মধ্যে নফ্স তথা জীবাত্মা, এবং রূহ তথা পরমাত্মা, এই দু প্রকার আত্মা বিরাজমান। ষড়রিপু সংমিশ্রিত জীবাত্মা সর্বদা মানুষকে খারাপ পথে পরিচালিত হওয়ার শক্তি যোগায়, প্রক্ষান্তরে রূহ তথা পরমাত্মা প্রতি নিয়তই মানুষকে খারাপ কাজ থেকে বিতর থাকতে সতর্ক করে, এবং আল্লাহর দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য তাকে আহ্বান জানায়। জীবাত্মার কারণে ষড়রিপু দেহের মাঝে সক্রিয় হয়, অপর দিকে পরমাত্মার কারণে মানুষ আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট হয়, এবং একাগ্র চেষ্টার মাধ্যমে নিজের ভিতরে আল্লাহর চরিত্র বিকশিত করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে শাকীক (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে- “প্রত্যেক মানুষের ক্বালবে দুটি করে বক্ষ রয়েছে, তার একটিতে ফেরেশতাদের অবস্থান অপরটিতে শয়তানের। যখন ক্বালব আল্লাহর জিকিরে নিমগ্ন হয়, তখন শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়। আর সে যখন আল্লাহর জিকির থেকে বিরত হয়, তখন শয়তান তার ক্বালবের ভিতরে কুমন্ত্রণা দিতে থাকে।” (তাফসীরে মাযহারী ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা ১৬৮)।

প্রকৃত পক্ষে রিপু যখন কুপথে ধাবিত হয়, তখন নফ্স তথা জীবাত্মা শক্তিশালী হয়, তখন রূহ বা পরমাত্মা নিস্তেজ হয়ে পড়ে, এবং আল্লাহকে ভুলে পাপের পথে ধাবিত হয়। সুতরাং মানুষের জীবাত্মা ও পরমাত্মার সর্বদা পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত, শ্রেষ্ঠ জিহাদ বলতে রাসূলে খোদা (সাঃ) মানবাত্মাকে শক্তিশালী করে, জীবাত্মার উপরে প্রাধান্য বিস্তার করাকে বুঝিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে রাসূল সাঃ এরশাদ করেন- “যে ভাবে তোমরা শত্রুর সাথে যুদ্ধ করে থাকো, সে ভাবে নিজের প্রবৃত্তির অর্থাৎ ষড়রিপুর সাথে যুদ্ধ করো। (তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৬ষ্ঠ খণ্ড পৃষ্ঠা – ৪১৩)।

তবে এই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া অত্যন্ত দূরূহ বিষয়, একা একা চেষ্টা করলে এই জিহাদে বিজয়ী হওয়া সম্ভব নয়। কেননা এই জিহাদ ঢাল, তলোয়ারের সাহায্যে করা যায় না। আল্লাহর কর্তৃক প্রেরিত মহামানবের মাধ্যমে ফায়েজের সূক্ষ্ম শক্তিই এর একমাত্র অস্ত্র।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ নির্দেশ করেন- “হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তাঁর নৈকট্য লাভের জন্য উছিলা অন্বেষণ করো, এবং তাঁর পথে জিহাদ করো, যেন তোমরা সফলকাম হতে পারো।” (সূরা, মায়িদাহ, আয়াত- ৩৫)।

তথ্যসূত্র: মুক্তি কোন পথে?, পৃষ্ঠা – ৪৪-৪৫।

নিবেদক- অধম নালায়েক, এ আর জি এম আর এ রাসেল।