সকল ওলিরাও বায়াত হয়েছেন এবং প্রত্যেকেরই পীর-মুরশিদ ছিলেনঃ
আল্লাহর সকল অলীরাও বায়াত হয়েছেন, এবং তাদের প্রত্যেকেরই পীর-মুরশিদ ছিলেনঃ
বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (র:)
মার্তৃ গর্ভে থেকে ১৮ পারা কোআন শরীফে হাফেজ হয়ে দুনিয়াতে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন। জাহেরী এলেমও শিক্ষা করেছেন। তিনি হযরত শেখ আবু সাঈদ মাখজুমী (রহ:) নিকট বায়াত হয়েছেন।
এছাড়া হযরত খাজা গরীব নেওয়াজ মঈন উদ্দিন চিশতী (র:) – হযরত খাজা ওসমান হারুনী (র:) এর নিকট,
হযরত খাজা বখতিয়ার কাকী (র:) – হযরত খাজা
মঈনউদ্দিন চিশতী (র:) এর নিকট।
হযরত খাজা শেখ ফরীদ আউলিয়া (র:) – হযরত খাজা বখতিয়ার কাকী (র:) এর নিকট।
হযরত খাজা নিজাম উদ্দিন আউলিয়া (র:)- হযরত খাজা শেখ ফরীদ আউলিয়া (র:) এর নিকট।
এছাড়া, হযরত শাহ জালাল (রহ:) – হযরত খাজা
সৈয়দ আহমদ কবীর সাহেবের নিকট।
হযরত খাজা বায়েজীদ বুস্তামী (রহঃ) – হযরত খাজা আবু আলী সিন্দি (র:) সাহেবের নিকট।
হযরত খাজা মোজাদ্দেদ আল ফেসানী (র:) – হযরত খাজা বাকী বিল্লাহ (র:) নিকট।
হযরত খাজা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া (র:) – হযরত খাজা আমীর সৈয়দ কুনান বুখারীর (র:) নিকট।
হযরত ইমাম গাজ্জালী (র:) – হযরত শেখ আবু আলী ফারমাবাদী (র:) এর নিকট।
এমনকি জগৎ বিখ্যাত দার্শনিক মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (র:) – শামস তাবরীজ এর নিকট বায়াত গ্রহণ করেছেন।
পৃথিবীতে এমন কোন অলি আল্লাহ বা পীর নেই যিনি
বায়াত গ্রহণ ছাড়া কামেল অলি হয়েছেন।
এমনকি শেখ ফরিদ আউলিয়া (র:) একাধারে ৩৬ বৎসর এবাদত বন্দেগী করেও হযরত খাজা বখতিয়ার কাকী (রহ:) এর নিকট বায়াত গ্রহণ পূর্বক ২৪ বৎসর তার খেদমত করে কামেল অলি হয়েছেন।
যদি বায়াত গ্রহণ ছাড়া চলতো তবে তার মতো লোকের তো আর পীর ধরার দরকার ছিলনা। খোদা দর্শনের জন্য বায়াত গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।
এজন্য জগত শ্রেষ্ঠ মাওলানা রুমী (রহ:) বলেছেন:- “এক জামানা ছোহবতে বা আউলিয়া বেহেস্তের ছদসালে তায়াতে বেরিয়া।”
অর্থাৎ, “কিছু কাল কোন অলির সহিত বসা শত বৎসর বেরিয়া এবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।”
তিনি আরো বলেছেন যে, “খোদ ব’খোদ কামেল ন’শুদ মোল্লায়ে তা গোলামে শমছে তিবরিজী ন’শুদ”
অর্থ্যাৎ, “আমার মুর্শিদ কামেল শামছে তাবরিজীর
গোলামী না করা পর্যন্ত আমি মাওলানা রুমি কামেল হতে পারিনি।”
“সিয়ারুল আসরার” কিতাবে হযরত বড়পীর (রহ:) সাহেব লিখেছেন-“কলব জিন্দা করার জন্য পীর বা আহলুত তালকীন অন্বেষণ করা ফরয।”
হযরত মহিউদ্দিন ইবনুল আরাবি (র:) বলেছেন- “আল ফেকাউ লে ছালাহির জাহেরে আল তাসাউফ লে
এছলাছির বাতেনে”।
অর্থাৎ, “ফেকাহ শাস্ত্র মানুষের শরীয়তকে শুদ্ধ করে
আর তাসাউফ মানুষের অন্তরকে পরিস্কার করে।”
মাওলানা রুমী (রহ:) বলেছেন – “কোনবীয়ে ওয়াক্ত খেসাশত আয় মুরিদ তাকে নুরে নবী আমাপদীদ”
অর্থাৎ, “তোমার পীরকে জামানার নবী মনে কর।”
তিনি আরো বলেছেন:”খোদ-ব-খোদ কামেল না-শোদ মাওলানায়ে রুম-তা-গোলামে শামসের তাবরেজী না-শোদ”
অর্থাৎ, আমি কখনো নিজে কামেল হতে পারি নাই
যতক্ষণ না আমি শামশের তাবরেজীর গোলাম হয়েছি।
হযরত হাফেজ সিরাজী (রহ:) বলেছেন-
“বকোয়ে এশক সানেহ বে-দলীল রাহকদম কেমান বখশ নমুদাম ছদ এহতেশাম না-শোদ”
অর্থাৎ, “পথ প্রদর্শক পীর ছাড়া এশকের গলীতে পা রেখো না কারণ আমি শত চেষ্টা করেও কিছুই হইনি।”
হাফেজ (র:) বহুকাল নিজে নিজে বহু চেষ্টা করেও কিছুই হাছেল করতে পারেননি। অবশেষে পীরের ওছিলায় দুই বৎসর সাধনায় মারফতের অশেষ দান লাভ করেন। এলমে জাহের ও এলমে বাতেন উভয়ের মধ্যে এরুপ সমন্ধ যেমন একটি দেহ ও অপরটি রুহ।
রুহ ছাড়া যেমন দেহ বাচে না তেমনি দেহ ছাড়া রুহ
থাকে না।
মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রহ:) আরো বলেন:
“একভি আগর তরকহো তুজছে হাবীব! তো উঠে শাহেশর মে আমা বে নছীব”
অর্থাৎ, “শরীয়ত এ মারেফত এই দুইটি এলমের একটিও যদি ত্যাগ কর তবে কেয়ামতের দিন অন্ধ হয়ে উঠবে।”
তিনি আরো বলেনঃ- “গরতু খাহী হাম নশীনী বা খোদা
গো নশীনী আন্দর হুজুরে আউলিয়া”
অর্থ্যাৎ, “তুমি যদি আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভের ইচ্ছা পোষণ কর, তবে আউলিয়া কেরামের দরবারে বসে যাও।
সর্বপরি কথা হলো খোদাকে পাওয়ার ইচ্ছা থাকলে কোনো কামেল পীরের তালাশ করে নাও।