হোমপেজ বিশেষ দিন ও দিবস ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস।

ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস।

ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস।

২রা কার্তিক মহাপুরুষ ফকির লালন সাঁইজির তিরোধান দিবস। ১২৯৭ বঙ্গাব্দ সালের পহেলা কার্তিক নশ্বর এ পৃথিবী থেকে দেহত্যগের মধ্য দিয়ে বিদায় নেন।

‘সব লোকে কয়, লালন কি জাত সংসারে/ লালন বলে জাতের কি রূপ, দেখলাম না তা-নজরে’। কেউ যদি তার স্বরূপকে চিনতে পারে, তবে জাত-কুলের বেড়াজাল তাকে আটকাতে পারে না। ফকির লালন সেই আধ্যাত্বপুরুষ যিনি এই বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে মানবতার গান গেয়েছেন। সুরের সঙ্গে বসত করে বলেছে অসাম্প্রদায়িকতার কথা।

ফকির লালন শাহের অনুসারীরা মূলত সহজিয়া। তারা যা পেতে চান তাও সহজ আনন্দ। তাদের সাধন প্রণালী বক্র নয় সহজ দেহ। তারা মনে করেন আত্মার মাঝে পরমাত্মার স্থিতি। যেহেতু আত্মার স্বরূপ বিশ্লেষণ সম্ভব নয় তাই দেহ যন্ত্র বিশ্লেষণ করে পরমাত্মার সন্ধান লাভ করা হয়। আর এভাবেই লালনের অহিংস রূপের প্রকাশ ঘটে।

২রা কার্তিক অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই মহাপুরুষের তিরোধান দিবস। ১২৯৭ বঙ্গাব্দ সালের পহেলা কার্তিক চাদরমুড়ি দিয়ে গান শুনতে শুনতে নশ্বর এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেন সাধু-ভক্তদের সাঁইজি। দেহত্যাগের সময় তিনি তার ভক্তদের বলে যান ‘আমি চললাম’। সাধক পুরুষ লালন চলে গেলেন। তার রেখে যাওয়া মত ও পথের বিশ্বাসী ভক্তরা আজো এখানে ভিড় জমায়। তারা একতারায় সাঁইজির সুর তুলে পরম ঈশ্বরকে সন্ধান করে।

প্রতি বছর ২রা কার্তিক সাঁইজির তিরোধান দিবসে কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ার কালীগঙ্গা নদীর তীরের লালন আখড়ার ছুটে আসেন লালনের ভক্ত-অনুরাগীরা। কুষ্টিয়ার ছেঁউরিয়ায় বসে সাধুর হাট। তিরোধান উৎসব করতে সহজিয়া বাউলরা এখানে এসে সাধুসঙ্গ করে। লালনের মাজার প্রাঙ্গণ মেলে সাধুর হাট। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয় কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালনের আখড়া বাড়ি। শুধুমাত্র প্রাণের টানে হাজার হাজার লালন ভক্ত ছুটে আসে লালনের আখড়ায়। একতারা বাজিয়ে গলাছেড়ে গায় লালনের গান। যার বাণী ও সুরে কেবলই ধ্বনিত হয়ে শুনা যায় অসাম্প্রদায়িকতার কথা।