বাস ও ড্রাইভার এর ঘটনা: কারামতে বিশ্বওলি ফরিদপুরী।

বাস ও ড্রাইভার এর ঘটনা: কারামতে বিশ্বওলি ফরিদপুরী।

হযরত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) ছাহেব ফরমানঃ “আমার মুরীদগন যদি পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে থাকে, আর আমি যদি পূর্ব প্রান্তেও থাকি, আর ঘুমের মধ্যে যদি তার সতর অনাবৃত হয়ে যায়, আল্লাহপাকের কসম! আমি আব্দুল কাদের তার সতর ঢেকে দিব। আমার আল্লাহর ইজ্জত ও মহত্বের কসম! আমার হাত আমার মুরিদগনরেন উপর ঐ রকম প্রসারিত, যেভাবে যমীনের উপর আসমানের ছায়া।”

আমার হযরত পীর কেবলাজানের মুরিদগন যেখানেই বিপদে পড়তো সেখানেই দয়াল দরদী বান্ধব রহমতের হাত মোবারক বাড়িয়ে দিতেন।

আজ সেরকম একটি সত্য ঘটনা তুলে ধরলামঃ

অনেক আগের কথা, আটরশি পাক দরবার শরীফ থেকে পুকরিয়া পর্যন্ত বাস সাভিস তখনও চালু হয়নি আর রাস্তা ও খুবই জরাজীর্ণ। দু-একটি রিক্সা ছাড়া ওই পথে তেমন কিছুই চলতো না। সেই সময় ঢাকার সাধারণ বীমার মরহুম মোজাম্মেল মামা একটা ২৫ সীটের একটা বাস রিজার্ভ করে ঢাকা থেকে দরবার শরীফে র উদ্দেশ্য রওয়ানা হলেন।

বাসটি যখন পুখুরিয়া রাস্তায় ঢুকলো তখন বাসে থাকা জাকের ভাইয়েরা বললেন এই রাস্তা দিয়ে বাস যাবে কি ভাবে?যাই হোক মহান মালিকের কদম ধরে যাএা শুরু করলেন। পুরাতন জাকের ভাইয়েরা হয়তো জানবেন যে কালিখোলা বাজার পার হয়ে যে একটা মোড় আসে ওখানে আগে একটা কাঠের ব্রিজ ছিল।
মোজাম্মেল মামা বাস নিয়ে ওই ব্রিজ এর সামনে আসলেন এবং বাস চালিয়ে নিয়ে যেতে বললেন কিন্তু বাসের ড্রাইভার বাস নিয়ে এই ব্রিজ দিয়ে পার হবার জন্য রাজী হলেন না।

ড্রাইভার বললেন এই ব্রিজ দিয়ে বাস নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। মোজাম্মেল মামা গাড়ির সব জাকের ভাইদেরকে বাস থেকে নেমে যেতে বললেন। বাস ড্রাইভার কে অনেক এ বুঝালেন যে আল্লাহর রহমতে ও আমাদের পীর কেবলাজান হুজুর এর দয়ায় কিছুই হবে না।

বাস ড্রাইভার কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। সকলে একরকম নিরাশ হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে রইলেন। কি করবেন সকলে ভাবতেছিলেন।

এই রকম কিছুটা সময় পার হয়ে গেলো এমতাবস্থায় হঠাৎ সকলে দেখলেন বাস ড্রাইভার বাস স্টার্ট দিলেন ও আস্তে আস্তে বাস ব্রিজ উপর দিয়ে চালিয়ে যেতে লাগলেন। সকলে অবাক হয়ে গেলেন একটু আগে যে ড্রাইভার এই ব্রিজ দিয়ে বাস নিতে নারাজ ছিলো সে কিনা এখন নিজ থেকেই বাস চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বাসের সাথে সাথে সকলেই হেঁটে হেঁটে ব্রিজ পার হয়। কোন ররকম বিপদ ছাড়াই খুব সুন্দর ভাবে বাসটি ব্রিজ পার হয়। বাসটি এপার এ আসলে সকলেই আবার বাসে উঠে বসলেন। কিনতু ড্রাইভার বাস ছাড়ছেন না আর কাকে যেনো খুজতেছিলেন!

সকলে বললো ড্রাইভার ভাই এবার তো ভয় নাই আর আমরা সকলেই বাসে উঠে পড়েছি এবার বাস ছাড়েন।
বাস ড্রাইভার বললেন হা তা জানি আমি কিন্তু আমি একজন এর জন্য অপেক্ষা করছি দেখেন তো সে বাসে উঠছে কিনা?মোজাম্মেল মামা বাসের ভিতরে থাকা সকলকে দেখে বললেন, না সবাই তো বাসে উঠেছে কেউ বাকি নাই।

বাস ড্রাইভার বললেন একজন বয়স্ক লোক বাসে উঠেছে কিনা দেখুন তো? সকলে অবাক হয়ে ড্রাইভার কে বললেন, কোন বয়স্ক লোক? এবাসে তো কোন বয়স্ক লোক আসে নাই ।

ড্রাইভার বলতে লাগলেন, আমি যখন বাস নিয়ে ব্রিজ এর উপর দিয়ে যেতে চাইছিলাম না তখন দেখলাম একজন সুন্দর নূরানি চেহারার বয়স্ক মানুষ এসে বললেন,”বাবা আমার জাকেররা অনেকক্ষণ যাবত কস্ট করতেছে, আপনি বাবা বাসটা ওপারে নিয়ে যান আল্লাহর রহমত এর কিছুই হবে না আমি আপনাকে সহযোগিতা করছি”।

একথা শুনে আর সেই সুন্দর মানুষটাকে দেখে খুব ভালো লাগলো, উনার কথা না শুনে পারলাম না তাই বাস স্টার্ট দিলাম আর উনি আমাকে একজন বাস হেলপার এর মতো একবার ডানে একবার বামে এ ভাবে বলছিলেন আর উনাকেই ফলো করে এই ব্রিজ পার হয়ে এলাম।

ড্রাইভার এর কথা শুনে সকলের বুঝতে বাকি রইলো না এই বয়স্ক নূরানি চেহারার মানুষটি কে ছিলেন। সকলে গাড়িতে চিৎকার করে তাকবীর দিলেন আর অঁঝোর এ কান্না করতে লাগলেন।

বাস নিয়ে দরবার শরীফ পৌঁছে মোজাম্মেল মামা হযরত পীর কেবলাজানের কদমপাকে ঘটনার বিস্তারিত জানালেন। সব শুনে কেবলাজান হুজুর বললেন, “আপনাদের দাদা হুজুর আপনাদের দয়া করেছেন।”

এমনি দরদী মুর্শেদ ছিলেন আমার হযরত পীর কেবলাজান।
“হে প্রানের মুর্শিদ
এক ঝলক দেখা দাও”

তথ্য সূত্র: কারামতে বিশ্বওলি খাজাবাবা ফরিদপুরী – কুঃছেঃআঃ (ফেসবুক পেজ)

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel