হোমপেজ ইলমে মারেফত আলমে আরওয়া এবং আলমে বরযখ সম্পর্কে আলোচনা।

আলমে আরওয়া এবং আলমে বরযখ সম্পর্কে আলোচনা।

আলমে আরওয়া এবং আলমে বরযখ সম্পর্কে আলোচনা।

আলম আরবী শব্দ যার অর্থ জগৎ। আরওয়াহ রুহের বহুবচন, যার অর্থ আত্মাসমূহ। আলমে আরওয়াহ অর্থ রুহের জগৎ। প্রচলিত অর্থে আলমে আরওয়াহ বলতে রুহের বাসস্থানকে বুঝায়। সমস্ত মানুষের রুহ সৃষ্টি করার পরে আল্লাহ তায়ালা সকল রুহকে প্রশ্ন করেছিলেন -আমি কি তোমাদের প্রভু নই? সকল রুহই সেদিন উত্তর দিয়েছিল – নিশ্চয়ই আপনি আমাদের প্রভু। আলমে আরওয়াহ থেকে রুহ পর্যায়ক্রমে দুনিয়ার বুকে আগমন করে থাকে।

আলমে আরওয়াহ বলতে আল্লাহময় বা সূক্ষ্মতিসূক্ষ্ম জগৎকে বুঝানো হয়েছে, যেখানে রুহসমূহ অবস্থান করে। সাধনার মাধ্যমে যখন মানুষের জীবআত্না পরিশুদ্ধতা লাভ করতে সক্ষম হয়, তখন জীবাত্মা স্বপ্ন বা কাশফের মাধ্যমে রুহের জগৎ বা আলমে আরওয়াহের খবরা-খবর জানতে পারে। এছাড়াও মানুষের জীবআত্না তাসাউফের সাধনার মাধ্যমে ষড়রিপু থেকে মুক্ত হওয়ার পর উহা আত্মিক পরিভ্রমণ করতে সমর্থ হয়ে আলমে আরওয়াহে প্রবেশ করে রহস্য জগতের অনেক তথ্য অবগত হয়ে থাকে।

বরযখ আরবী শব্দ, যার অর্থ সীমারেখা, অন্তরাল, অন্তবর্তীকালীন অবস্থা, চোখের অন্তরালে, পর্দা ইত্যাদি। প্রচলিত অর্থে বরযখ বলতে মানুষের মৃত্যুর পরে হাশরের পূর্ব পর্যন্ত আত্মার অবস্থানকালকে বুঝায়।

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“যখন তাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলে হে আমার প্রতিপালক! আমাকে পুনরায় (পৃথিবীতে) প্রেরণ করুন, যেন আমি নেক কাজ করতে পারি, যা আমি করিনি। কখনই নয়, এতো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে রয়েছে পর্দা পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।” (সূরা আল মুমিনুন, আয়াত নং ৯৯ ও ১০০)।

পবিত্র কুরআনের বর্ণনার পাশাপাশি তাসাউফের সাধনা করে আমি যা পেয়েছি, তা হলো -মানুষের মৃত্যুর পর বিচারের পূর্ব পর্যন্ত চোখের অন্তরালে আত্মা কোন অবস্থায়, কোথায় ও কিভাবে থাকে, এ সময়কালকে বরযখ বলে। মানব জীবনে আলমে বরযখ বলতে আত্মা তার বাহন বা স্হূলদেহ হারানোর পর কৃতকর্মের ফল হিসেবে প্রাপ্ত শান্তি লাভ অথবা শাস্তি গ্রহণের জন্য পুনরুত্থিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়কে বুঝিয়ে থাকেন।

পরিশেষে বলা যায় যে, মানব দেহে আগমনের পূর্বে রুহ যেখানে অবস্থান করেছিলো, উহাকে আলমে আরওয়াহ বলে। আর মানুষের মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত রুহ যেখানে অবস্থান করে, উহাকে আলমে বরযখ বলে।

সূত্র: আল্লাহ কোন পথে।
নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।