মিজান বলতে কি বুঝায় এবং কিভাবে নেকী বদীর ওজন হবে?

মিজান বলতে কি বুঝায় এবং কিভাবে নেকী বদীর ওজন হবে?

পোস্টটি সবার জন্য নহে। আত্মজ্ঞান লাভের উদ্দেশ্য যারা সূফিবাদ চর্চা করে পোস্টটি শুধু তাদের জন্য।

মিজান আরবী শব্দ, যার অর্থ দাড়ি-পাল্লা, অনুমান, নফসের বিচার-বুদ্ধি ইত্যাদি। কারো কারো মতে, মানুষ ও জ্বীনের পরিশুদ্ধ বিবেকই এক প্রকার মিজান। প্রচলিত অর্থে মিজান হচ্ছে নেকী-বদীর ওজনের পাল্লা।

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ বলেন,

“তখন (কিয়ামত দিবসে) যার পূণ্যের পাল্লা ভারী হবে সে তো লাভ করবে সুখময় সন্তোষজনক জীবন। কিন্তু যার পাল্লা হালকা হবে তার স্হান হবে হাবীয়া।” (সূরা আল কারিয়াহ, আয়াত নং ৬-৯)।

“সেদিন ওজন হবে যতার্থ, যাদের (পূণ্যের) পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে -তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, যেহেতু তারা আমার নিদর্শনকে প্রত্যাখ্যান করতো।” (সূরা আল আরাফ, আয়াত নং ৮ ও ৯)।

মিজান বলতে কি বুঝায় এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরিফের বর্ণনার পাশাপাশি তাসাউফের সাধনা করে ব্যক্তি জীবনেও আমি এর একটি অপূর্ব মিল খুঁজে পাই। মানুষ পরিশুদ্ধ বিবেক বা জ্ঞানের আলোকে ভাল-মন্দের বিচার করে থাকে। কোন আদালত যখন বিচারক আসামীর বিচার করেন, সেখানে কোন দাড়ি-পাল্লা ব্যবহার করা হয় না, বরং বিচারক সাক্ষী প্রমাণ গ্রহণ করে নিজের বিবেক বিবেচনা প্রয়োগের মাধ্যমেই বিচার কার্য সম্পাদন করে থাকেন।

প্রকৃতপক্ষে, মানুষের পরিশুদ্ধ বিবেকই তার জন্য এক প্রকার মিজান। মানুষ যখন রিপুতাড়িত হয়ে কোন পাপের কাজ করে, তখন তার পরিশুদ্ধ বিবেক তাকে দংশন করে। বস্তুতঃ প্রত্যেক মানুষের বিবেকই তার জন্য এক প্রকার মিজান তুল্য। প্রত্যেকে বিছানায় কবরতুল্য মশারির নীচে শুয়ে নিজেকে মৃতবৎ মনে করে যদি নিজের কাছে প্রশ্ন করে -সে মুক্তি পাবে কি পাবে না? তখন তার বিবেবকই সঠিকভাবে জবাব দিয়ে দেয়।

ষড়রিপুর প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে বিবেক যখন পূর্ণ পরিশুদ্ধি লাভ করে, তখন সে আল্লাহর নির্দেশে পরিচালিত হয়। আল্লাহর নির্দেশে পরিচালিত এরুপ পরিশুদ্ধ বিবেক দিয়েই একমাত্র সম্ভব ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হওয়া।

গ্রন্থসূত্র: আল্লাহ কোন পথে।
নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel