হোমপেজ ইলমে মারেফত ইস্রাফিলের সিঙ্গার রহস্য ভেদ (সূফীতত্ত্ব)

ইস্রাফিলের সিঙ্গার রহস্য ভেদ (সূফীতত্ত্ব)

ইস্রাফিলের সিঙ্গার রহস্য ভেদ (সূফীতত্ত্ব)

পোস্টটি সবার জন্য নহে। আত্মজ্ঞান লাভের উদ্দেশ্য যারা সূফিবাদ চর্চা করে পোস্টটি শুধু তাদের জন্য।

ইস্রাফিল বলতে শীর্ষ স্হানীয় ও সম্মানিত ফেরেশতাদের মধ্যে একজনকে বুঝায়। প্রচলিত অর্থে হস্তে সিঙ্গা ধারণকারী ফেরেশতাকে ইস্রাফিল বলা হয়। তাঁর সিঙ্গা ফুঁৎকারের সাথে সাথে দুনিয়া ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“সেদিন সিঙ্গার ফুঁৎকার দেয়া হবে, ফলে আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর সকলে মুর্ছিত হয়ে পড়বে, তবে তারা নয়, যাদেরকে আল্লাহ রক্ষা করতে ইচ্ছা করবেন, অতঃপর আবার সিঙ্গার ফুঁৎকার দেয়া হবে, তৎক্ষনাৎ তারা দন্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে।” (সূরা আঝ ঝুমার, আয়াত নং ৬৮)।

পবিত্র কুরআনে উক্ত আয়াতে সিঙ্গায় প্রথম ফুঁৎকারে কিয়ামতের প্রলয় সংঘটিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ফুঁৎকারে হাশরের মাঠে বিচারের জন্য মানুষের পুনরুত্থানের কথা বলা হয়েছে।

হযরত রাসূল পাক সঃ বলেন,

“তোমরা হাশর ময়দানে একত্রিত হবে এ অবস্থায় যে, সকলেই খালি পা, বস্ত্রবিহীন ও খাতনা বিহীন।” (বোখারী শরীফের সূত্রে মেশকাত শরিফ, পৃষ্ঠা নং ৪৮৩)।

পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বর্ণনার পাশাপাশি তাসাউফের সাধনার মাধ্যমে ইস্রাফিলের সিঙ্গার ফুঁক দেয়ার বিষয়ে আমি যা বুঝেছি, তা হলো মানুষের নিঃশ্বাস সংরক্ষণকারী সূক্ষ্ণ শক্তিও মানবদেহে ইস্রাফিলের ন্যায় কাজ করে থাকে। আর মানুষের মৃত্যুর সময়ের সর্বশেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করাকে মানবদেহে ইস্রাফিলের সিঙ্গার ফুঁৎকারের সাথে তুলনা করা যায়।

কেননা মানুষের শেষ নিঃশ্বাস নাসিকা থেকে ত্যাগ করার ফলে দেহের যাবতীয় কর্ম থেমে যায় এবং তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। আর এ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে দেহের প্রলয় সংঘটিত হয়। দেহের শ্বাস-প্রশ্বাস সংরক্ষণের কাজ যে সূক্ষ্ণ শক্তির মাধ্যমে হয়ে থাকে, ইহাও মানব দেহের জন্য ইস্রাফিল তুল্য।

ইস্রাফিলের প্রথম সিঙ্গার ফুঁতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে মানব দেহের প্রলয় অর্থাৎ মৃত্যু ঘটে। আবার দ্বিতীয় সিঙ্গার ফুঁ এর মাধ্যমে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশু জীবন লাভ করে। কারণ, মৃত ব্যাক্তি নাসিকা দিয়ে শ্বাস- প্রশ্বাসের মাধ্যমে পূনরায় জীবন লাভ করে বলেই ইস্রাফিলের দ্বিতীয় ফুঁৎকার বুঝানো হয়েছে। সুতরাং মানুষের জীবন মৃত্যুর সাথেও ইস্রাফিলের সিঙ্গায় ফুঁৎকারের চমৎকার সামঞ্জস্য রয়েছে।

গ্রন্থসূত্র: আল্লাহ কোন পথে।
নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।