দায়িমি সালাত সম্পর্কে আলোচনা (কুরআন ভিত্তিক দলিল)
সালাত আরবি শব্দ, ফার্সিতে বলা হয় নামায। যার অর্থ সংযোগ। আত্মদর্শন উদ্দেশ্য শেরেক হইতে মুক্ত হওয়ার জন্য দায়েমি সালাত পালনের আহ্বান। সালাত বলতেই দায়েমি সালাত বুঝায়। আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে সংযোগ প্রচেষ্টার নামই সালাত।
দায়িমি সালাতের ব্যাপারে আল্লাহুতায়ালা কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন:-
“তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায় কারী। যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে।”_ [সূরা: আল-মাআরিজ, ২২-২৩]
.
পবিএ কোরআনে সার্বক্ষনিক যে নামায আদায়ের কথা বলা হয়েছে তাহা হইলো দায়িমি সালাত বা নামাজ! দায়িমি সালাতের সঙ্গে ওয়াক্তিয়া সালাতের কোনো সম্পৃক্ততা নাই।
.
এই নামায হযরত আদম হতে শুরু করে রাসূল সাঃ এবং তার আহলগন ও নায়েবে রাসূল অর্থাৎ আউলিয়াগন আদায় করে তাদের নব্যুয়ত ও বেলায়েত অর্জিত হয়েছে।
.
রাসূল সাঃ হেরাগুহায় ১৫বছর, ১মাস, ১৯দিন (ধ্যানমগ্ন) হয়ে যে সালাত আদায় করেছিলেন সেটাই দায়িমি সালাত।
.
সালাত অর্থ সংযোগ অর্থাৎ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে সংযোগ প্রচেষ্টার নামই সালাত। এই সংযোগ অর্থাৎ সালাত যে ব্যক্তি আদায় করে তাকে মুসল্লি বলে।
.
সালাত মূলত দায়েমী অর্থাৎ সার্বক্ষণিক বা অবিরাম বিষয়। মুক্তির লক্ষ্যে জীবনের প্রতিটি বিষয়ের উপর সালাত করতে হইবে। দায়েমী সালাতের প্রশিক্ষণকল্পেই ওয়াক্তিয়া সালাতের ব্যবস্থা দেওয়া হয়ে থাকে।
.
ইন্দ্রিয়পথে বিষয়রাশির আগমন যেহেতু অবিরাম সেইহেতু উহার উপর সালাত এবং জাকাত কর্মও অবিরামভাবে পালনীয় বিষয়। ইহাই দায়েমী সালাত। দায়েমী সালাত ব্যতীত বস্তুমোহের বন্ধন হতে মুক্তির কোন সম্ভাবনা নেই।
.
এইজন্য মুক্তিকামী সাধককে দায়েমী সালাতের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। এই আদর্শ হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) স্থাপন করিয়া গেছেন হেরা গুহার ধ্যানকর্ম দ্বারা।
.
দায়েমি সালাত অর্থাৎ অবিরাম সালাত ব্যতীত সকলেই বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী। কারণ তারা শিরিকের মধ্যে সংস্কার সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়ে থাকে। নিমজ্জিত ব্যক্তিগণকে অগ্নিতে অর্থাৎ জাহান্নামের জ্বালাযন্ত্রণায় দাখিল করা হয় এবং মুক্তিপথের সাহায্যকারী কোন মহাপুরুষ প্রাপ্ত হয় না।_[৭১: ২৪-২৫]
আনুষ্ঠানিক ওয়াক্তিয়া ও দায়েমি সালাতের সংজ্ঞাঃ
আনুষ্ঠানিক ওয়াক্তিয়া সালাত হইল গুণ-কীর্তন, আর দায়েমি সালাত হলো জ্ঞান-গুণ অর্জন। সালাতের মূলনীতিকে জীবনে রূপায়িত করার ব্যবস্থা হিসাবে আনুষ্ঠানিক পাঁচবেলার বাধ্যতামূলক এবং ভোররাত্রের একবেলা তাগিদমূলক সালাত পালনের ব্যবস্থা রসুলুল্লাহ (সা.) দান করে গেছেন, যেন মানুষ তাহার সারাদিনের কর্মগুলোকে আল্লাহ্র এবাদতে রূপান্তরিত করিয়া তুলতে পারে।
✍- নিশাত ওয়াহিদ