মাের্শেদে কামেল কিভাবে মানুষের অন্তরের খবর রাখেন?

    মাের্শেদে কামেল আল্লাহর গুণে পূর্ণ গুণান্বিত হইয়া “ওজুদ মাওহুব লাহু” দ্বারা প্রতি মানুষের অন্তবের খবর জানিতে পারেন ও দুনিয়ায় কাহার কোন জিনিষের প্রতি আকর্ষণ তাহা জানিয়া থাকেন। তারপর একে একে দুনিয়ার সকল আকর্ষণ গ্রন্থি হইতে তিনি তদীয় মুরীদ সন্তানকে বিমুক্ত করিয়া আল্লাহতায়ালার গন্তব্যের পথে লইয়া। আল্লাহতায়ালার জাতপাকের সহিত বিভিন্ন স্তরে ফানা লাভের উচ্চ মরতবা দান করেন।

    হযরত রূমী (রঃ) ছাহেব বলিতেছেন আল্লাহতায়ালার পথের জ্ঞান লাভ অর্থাৎ অন্তর চক্ষু লাভ করিতে হইলে খাটী পীর বা হেদায়েতের প্রকৃত যােগ্যতা সম্পন্ন সাধকের নিকটই গমন করিতে হইবে। কারণ তিনিই মানুষের অন্তরের রােগ নির্ণয় করিতে পারেন। মানুষের অন্তর সম্পর্কে জ্ঞাত সাধকই মানুষের অন্তর রােগ চিকিৎসা করিতে পারেন। মানুষের অন্তর সম্পর্কে জ্ঞাত উচ্চ স্তরের সাধক ছিলেন আমার দয়াল পীর কেবলাজান হুজুর, জামানার শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ, হযরত মাওলানা খাজাবাবা শাহসূফী এনায়েতপুরী (কুঃ) ছাহেব। তিনি যে অন্তরের খবর রাখিতেন তাহার একটি নকল তােমাদের বলিতেছি।

    আসাম হইতে আগত বেশ কয়েক জন জাকেরান এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফে একদিন বসিয়া নিজেদের মধ্যে আলাপ করিতেছিলেন। তাহাদের মধ্যে একজন বলিলেন, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরিয়া দরবার শরীফে আসা যাওয়া করিতেছি, কিন্তু হুজুর কেবলাজনের কোনাে কারামতি দেখিলাম না।” তাহারা এই রূপ আলােচনা করিবার কিছু সময়ের মধ্যেই হুজুর কেবলাজান হুজরা শরীফে উপস্থিত হইলেন। যাহারা ঐ রূপ আলােচনা। করিতেছিল, তাহাদের উদ্দেশ্যে পীর কেবলাজান হুজুর বলিলেন, “বাবা, তােমরা কি তােমাদের কালবের জেকের শুনিতে পাও?” তাহারা উত্তরে বলিল, জ্বী, পাই। ইহার পর পীর কেবলাজান হুজুর জিজ্ঞাসা করিলেন, “আগে কি কালবের জেকের অনুভব করিতে?” তাহারা না’ সূচক উত্তর দিলেন।

    ইহার পর হুজুর কেবলাজান বলিলেন, “যদি নিজের দেহের মধ্যে তােমাদের মৃত কালব জিন্দা হইয়া জেকের করিতে দেখ, তাহার চেয়ে বড় কি কারামতি আর দেখিতে চাও?” পীর কেবলাজানের এই কথা শুনিয়া উপস্থিত সমস্ত মুরীদান চিৎকার দিয়া জজবার হাল প্রাপ্ত হইলেন-ফয়েযে বেকারার হইয়া গেলেন। হযরত পীর কেবলাজানের এই উক্তি ইহাই প্রমাণ করে যে, তিনি। মানুষের অন্তরের খবর জানিতেন। আল্লাহু আলেমুম্ বেজাতিছ ছুদুর। আল্লাহপাক মানুষের ছিনার খবর রাখেন। যিনি তাহার পক্ষে হেদায়েতকারী, তাহাকেও তিনি সকল মানুষের ছিনার খবর জানান।

    আমার পীর কেবলাজান হুজুর ছিলেন জামানার জন্য ঐ দরজা প্রাপ্ত। হেদায়েতকারী, যাহার সম্পর্কে আশেকগণ বলেনঃ

    এ্যয়সা ওলী না হইয়াছে।
    কভু আর হবে না, জানিতে পারিবে শেষে।
    করলে সেই পদ ভজনা।”

    তাই তােমরা যদি আল্লাহতায়ালার সহিত ফানা লাভ করিবার কামনাবাসনা রাখ, তাহা হইলে হযরত খাজাবাবা এনায়েতপুরী (কুঃ) ছাহেবের মহব্বত দেলে পয়দা কর। তাহার কদমের ধুলি হইয়া যাও।

    সূত্র: শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরীর [নসিহত :১২তম খন্ডের ] “ফানা ও বাকা” হতে তুলে ধরা হয়েছে।

    আরো পড়ুনঃ
    Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

    Sufibad24.com | Telegram Channel