একের মধ্যে লীলা এবং নিত্য।
পুরুষ শক্তি এবং নারীশক্তি মিলনের ফলেই সৃষ্টিচক্র প্রকাশিত ও বিকশিত হয়ে ছুটে চলছে। পুরুষ শক্তি থিসিস, নারী শক্তি এন্টিথিসিস, সৃজনের প্রকাশ ও বিকাশের ধারা হলো সিনথেসিস। পুরুষশক্তি আলিফ, নারী শক্তি লাম, সৃষ্টির অভিনবর প্রকাশ ও বিকাশের ধারাটা হলো কেতাবরূপী মিম। এই মিম অনন্ত, অসীম। সুতরাং পুরুষ শক্তি এবং নারী শক্তি মূলে কিন্তু শক্তি তথা এনার্জি। এই শক্তি তথা এনার্জির লয়, ক্ষয় ও বিনাশ নেই। শক্তি এক রূপ হতে অন্যরূপে রূপান্তরিত হয়ে অবিরাম গতিতে ছুটে চলছে, ইহাই শক্তির নিত্যতার সূত্র। পুরুষশক্তি মানে ধ্রুবক, নারী শক্তি মানে চলক। একটি Constant অপরটি Variable. পুরুষশক্তি স্থির, অটল, আর নারীশক্তি গতিশীল।
আল্লাহর আহাদ সত্তা সিফাত তথা প্রকৃতি তথা নারীরূপী। কিন্ত মুহাম্মদ সত্তা জাত তথা অহেদ তথা পুরুষ তথা মূল। এই জন্য সিফাত জাতকে সিজদা করে। আবার পুরুষ এবং প্রকৃতির মিলনেই সৃষ্টির বিকাশ। পুরুষ মানে হলো প্রকৃতির আকর্ষণ হতে মুক্ত, তথা নারীত্বের বন্ধন হতে মুক্ত। আবার নারীত্বের মধ্যে হতেই স্বামীত্বের উদয় হয়। অস্থির, চঞ্চল প্রকৃতিকে বলা হয় নারী। পুরুষ লীলা করলে, প্রকৃতি নৃত্য করে, তাই পুরুষ লীলা, প্রকৃতি নিত্য। পুরুষ শান্ত, ধীর, স্থির, অটল, সত্য, সুন্দর ও শিব।
আবার লিঙ্গভেদে নর ও নারী রয়েছে। নর থেকেও পুরুষ হয় আবার নারী হতেও পুরুষ হয়। কারণ, নফস নারীগুণ সম্পন্ন, আর রূহ পুরুষ। সুতরাং একটি মানব দেহে নফস এবং রূহের প্রকাশ ও বিকাশ। মানব দেহের মধ্যে যে নফসটি রয়েছে, সেই নফসটি পবিত্র, নফসের মধ্যে যখন প্রকৃতির আকর্ষণ কামনা সংযুক্ত হলেই নফস চঞ্চল হয়ে উঠে। এই চঞ্চলতাই বৈচিত্র্যময় রূপে শৈলী দেখিয়ে চলছে।
আবার ব্যাকরণে পুরুষ তিন প্রকার যথাঃ উত্তম পুরুষ, মাধ্যম পুরুষ ও নাম পুরুষ। এই পুরুষই সর্বনাম। নাম আর নামি এক। আর সকল আমিই সর্বনাম। পুরুষ জন্ম দেয়ও না আবার জন্ম নেয়ও না। নারী নিত্য, পুরুষ লীলা। নারীভোগী, পুরুষ ত্যাগী। নারী ক্ষমতার পূজা করে, পুরুষ সত্য, অব্যয়। নারী ধর্মের বন্ধের বলয়ে আবদ্ধ। কিন্তু পুরুষ ধর্মের কর্তা। পুরুষের ঐশ্বর্যের প্রকাশ হলো রমনী। আদিদেব আদমের শক্তির তথা অনুরাগের প্রকাশ হলো রমনী। তাই রমনী আদমের অর্ধাংশ। (ইনসানের নয়)।
আদি দেব আদম আপন সত্তা হতে স্বীয় শক্তিবলে যে রহস্যময়ী পবিত্র সত্তাটি প্রকাশ করেন, সেই সত্তাই রমনীরূপ। আদিদেব লিলা করার জন্যই আধ্যাশক্তি স্বীয় যোগবলে প্রকাশ করেন। সুতরাং আদিশক্তিই মাতা, নূরে মুহাম্মাদি স্বরূপ। তাই আল্লাহ আশেক, মুহাম্মদ মাশুক। আল্লাহ নিজেই নিজের রহস্যকে সিজদা করে, আরাধনা করে, পূজা করে। কারণ, তার শরীকের বাহিরে যে একটি ঈশ্বর কর্ণাও নেই। সুতরাং আশেক আর মাশুক অভিন্ন। আর শয়তান যার কোনো অস্তিত্ব নেই, কিন্তু এই সৃষ্টির মধ্যে তার ভয়ংকর শক্তির তান্ডব রয়েছে।
নিবেদক- আর এফ রাসেল আহমেদ