অন্ধের দেশে আয়না বিক্রি
আদম প্রথম মানুষ নয়, আদম হল প্রথম আল্লাহপ্রাপ্ত মানুষ। সর্বপ্রথম যে মানুষটি আল্লাহকে আবিষ্কার(সৃষ্টি নয়) করেন তিনিই আদম। আদমের আগে পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষের বিচরণ ছিল। এমনকি আদমের পিতা মাতা ভাই বোনও ছিল। আদমের পূর্বে যে মানুষগুলো ছিল তারা নফসওয়ালা মানুষ ছিল।তারা পরিপূর্ণ মানুষ ছিল না। আদম আ: হলেন পরিপূর্ণ মানব তথা Complete Man। বিবর্তনবাদের সর্বশেষ ধাপ হল আদম। এই এককোষী প্রাণ তথা নফস বিবর্তন প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় এসে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। সর্বপ্রথম যে নফসটির মধ্যে রূহ উদ্ভাসিত হয় বা ফুৎকারকৃত হয়েছে সেই নফসটিকে বলা হয় আদম। আদম কোনো নফসের নাম নয়। আদম একটি সার্বজনীন উপাধি। তাই আদম প্রথম গুরু, আদম প্রথম মুমিন, আদম প্রথম নবী, আদম প্রথম রসুল আদম প্রথম সভ্যমানুষ তথা জিনমুক্তসত্তা।
নফস আর রূহের পার্থক্য কোরানভিত্তিক ধর্ম গবেষকগণ না জানার কারণেই তারা মিথ্যা, গাজাখুরী অবৈজ্ঞানিক ও কাল্পনিক মিথ ও উপকথা আবিষ্কার করে জনতার সামনে তুলে ধরেছেন।
[আল্লাহর আব্দুহু, চেরাগে ইসলাম, চেরাগে জানশরীফ, মুফাসীরে জামান হযরত মাওলানা আল্লামা কালান্দার জাহাঙ্গীর বা-ঈমান আ: তিনি তার সুফিবাদ আত্মপরিচয়ের একমাত্র পথ বইয়ে এবং মারফতের গোপনেরও গোপন কথা নামক বইয়েতে ইনসান আর আদমের গুপ্তভেদের স্বরূপ কোরানভিত্তিক তুলে ধরেছেন, হাজার বছরের মিথ্যা রচনার অবসান গঠিয়েছেন।]
এই বিষয়ে কোরানিক দর্শনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে। যে মানুষ তথা নফসের মধ্যে প্রথম রূহ উদ্ভাসিত হয়েছে তথা ফুঁৎকার করা হয়েছে তিনিই আদম। যে সত্তায় আল্লাহর গুণগুলি ফুটে উঠেছে তিনিই আদম। আদমের মধ্যে রাব্বুল আলামীন জাতরূপে উদ্ভাসিত তাই অহংকারী নফস ব্যতীত ফেরেস্তাসহ সমগ্র সৃষ্টি আদমের আনুগত্য ও প্রভুত্ব মেনে নিয়ে আদমকে সিজদা করেছেন। সুতরাং আদম প্রথম মানুষ নয়, আদম সর্বপ্রথম আল্লাহপ্রাপ্ত মানুষ। তার পূর্বে সকল জংলী মানুষের প্রাণ তথা নফস ছিল কিন্তু রূহ ছিল না। রূহের অধীকারীকে আদম বলা হয়। আদম সিজদার মালিক। নফস ওয়ালাহ মানুষ সিজদার মালিক নহে।
সৃষ্টিতত্ত্ব:
- (১) “যাহারা অস্বীকার করিয়াছে (তাহারা) কি ভাবিয়া দেখে না যে, আকাশমন্ডলি এবং জমিন উভয়েই ছিল মিলিত অবস্থায়, সুতরাং আমরা (আল্লাহ) উভয়কে পৃথক করিয়া দিয়াছি এবং আমরা প্রত্যেক জীবন্ত জিনিস পানি হইতে বানাইয়াছি, তবুও কি তাহারা ইমান আনে না?” (২১:৩০)।
- (২) “এবং নিশ্চয়ই তিনি তোমাদেরকে (মানুষকে) সৃষ্টি করিয়াছেন পর্যায়ক্রমে।” (৭১:১৪)।
- (৩) “আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করিয়াছি সুন্দরতম গঠনে, অতঃপর আমি মানুষকে নামিয়ে দিয়েছি হীনতাগ্রস্ত হতে হীনতম পর্যায়ের।” (৯৫:৪-৫).
- (৪) “স্মরণ কর, যখন তোমার রব ফেরেস্তাগণকে বলিলেন, আমি গন্ধমযুক্ত কর্দমের শুষ্ক ঠনঠনা মৃত্তিকা হইতে মানুষ (আদম নহে) সৃষ্টি করিতেছি; যখন আমি ঐ মানুষটিকে সুঠাম করিব তথা বিশেষ পর্যায় নিয়ে আসবো এবং সেই বিশেষ মানুষটির মধ্যে আমার রূহ (নফস নহে) ফুৎকার করিব তখন তোমরা সেই বিশেষ মানুষটিকে সিজদা করিও।” (১৫:২৮-২৯)
আরো রয়েছে- ২২:০৫,৪০:৬৭ নং আয়াত।
– আর এফ রাসেল আহমেদ