দাউদ (আঃ) ও তাঁর সন্তান সুলাইমান (আঃ) এর একটি ঘটনা।

দাউদ (আঃ) ও তাঁর সন্তান সুলাইমান (আঃ) এর একটি ঘটনা।

একদা হযরত দাউদ (আ.) দোয়া করার সময় আল্লাহ তায়ালাকে বলেন- হে আল্লাহ! আমি আমার বেহেশত সঙ্গীকে দেখতে চাই।

আল্লাহ হযরত দাউদ (আ.) কে উদ্দেশ্য করে বলেন- আগামীকাল সকালে ঘর থেকে বাহির হওয়ার পরে যার সাথে তোমার প্রথম দেখা হবে, সেই ব্যাক্তি হবে তোমার বেহেশত সঙ্গী।

পরের দিন হযরত দাউদ (আ.) তাঁর সন্তান সুলাইমান (আ.)’র সাথে ঘর থেকে বাহির হন। পথিমধ্যে তিনি একজন বৃদ্ধ ব্যাক্তিকে দেখেন যে খড়ি বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে পিঠে খড়ি বহণ করে পাহাড় থেকে নিচে নামছিল।

বৃদ্ধ লোকটির নাম ছিল “মাতা” সে শহরের দরজার কাছে দাড়িয়ে হাঁক দিয়ে বলছিল খড়ি নিবেন খড়ি।

একজন ব্যাক্তি তার খড়িগুলো কিনে নেয়। হযরত দাউদ (আ.) তার(বৃদ্ধের) কাছে যেয়ে তাকে সালাম দিয়ে বলেন- তুমি কি আজকে আমাকে তোমার মেহমান রূপে গ্রহণ করতে পারবে?

বৃদ্ধ লোকটি বলে- মেহমান হচ্ছে আল্লাহর বন্ধু স্বরূপ। আসুন। অতঃপর সেই বৃদ্ধ লোকটি খড়ি বিক্রয়ের অর্থ দ্বারা অল্প গম ক্রয় করে। সে ঘরে পৌছে গম থেকে আটা এবং তা থেকে তিনটি রুটি তৈরী করে মেহমানদের সামনে পরিবেশন করে।

যখন তারা রুটি খেতে শুরু করে তখন বৃদ্ধ ব্যাক্তিটি খাবার শুরুতে বিসমিল্লাহ এবং খাবারের শেষে আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করে। যখন তাদের সামান্য খাবার শেষ হয়ে যায়। তখন বৃদ্ধ লোকটি আকাশের দিকে দোয়ার জন্য হাত তুলে বলে-

“হে আল্লাহ! আমি যে গাছের খড়িগুলো বিক্রয় করলাম তা আপনি লাগিয়ে ছিলেন, আপনিই তা শুকিয়ে দিয়েছেন, উক্ত গাছটি কাটার শক্তি আপনিই আমাকে দিয়েছেন, সেই খড়িগুলো ক্রয় করার জন্য ক্রেতাকেও আপনি পাঠিয়েছেন, যেন সে খড়িগুলো ক্রয় করে। যে গমের আটা আমরা খেলাম তার বীজ থেকে আপনি গম উৎপাদন করেছেন, আপনি আমাকে আটা তৈরীর সরন্জাম এবং রুটি দান করেছেন। আমি এই সকল নেয়ামতের উপযুক্ত এমন কি কাজ করেছি?”

বৃদ্ধ লোকটি এই কথাগুলো বলে ক্রন্দন করছিল। হযরত দাউদ (আ.) তাঁর সন্তানের দিকে তাকিয়ে বুঝাতে চান যে, এই কারনে হাশরের ময়দানে এই বৃদ্ধ লোকটিকে নবীদের সাথে থাকবে।

সূত্র: দাসতান হায়ে শহীদ দাস্তে গায়ব, পৃষ্ঠা: ৩০-৩১।