চিন্তার স্বাধীনতা
চিন্তা শুধু মস্তিষ্কের খেলা নয়, এটি অস্তিত্বের ঘোষণা। একজন মানুষ যখন বলে, “আমি ভাবছি”, তখন সে কেবল ভাবনার বৃত্তে আবদ্ধ নয়, সে তখন নিজের অস্তিত্বকে বুঝে, ছুঁয়ে দেখে, নিজের সত্তার রন্ধ্রে প্রবেশ করে। চিন্তার স্বাধীনতা মানে অন্যের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসা। যেখানে কেউ বলে না কী ভাবতে হবে-সেখানে একজন মানুষ প্রথমবার নিজের মতো করে ভাবতে শেখে। এই ভাবনাই তাকে আলাদা করে দেয় ভিড় থেকে।
জন্ম, জাত, ধর্ম, শিক্ষা—সব কিছুই সমাজ দিয়েছে। কিন্তু চিন্তা যদি সমাজ দেয়, তাহলে আমি কই? যে আমি সমাজের মতো ভাবে, সে তো সমাজের কণ্ঠ মাত্র—নিজের স্বর নয়। তাই আমার চিন্তা আমার—এটা কেবল অধিকার নয়, আমার অস্তিত্বের পরিচয়। আমি যা ভাবি, তা-ই আমি। তাই যদি ভাবনা ধার করা হয়, তাহলে নিজের মধ্যে নিজেকে পাওয়া যাবে না।
আজ আমি সত্য মনে করি যা, আগামীকাল ভুলও মনে হতে পারে। কিন্তু ভুল চিন্তা করেও আমি যদি নিজে করি, তাও তা আমাকে নিজের দিকে নিয়ে যাবে। কারণ, চিন্তা করাটা নিজে করার সাহসটাই মানুষকে মানুষ করে। অন্যের বলা বুলি না মুখস্থ করে, নিজের অনুভব থেকে সত্য অনুসন্ধানই একমাত্র মুক্তির পথ।
-ফরহাদ ইবনে রেহান
বই: “আমি, আমার চিন্তা”
প্রবন্ধ: “আমি ভাবি, তাই আমি আছি”