হোমপেজ আমল ও ওজিফা চিশতিয়া তরিকার ফায়েজ লাভের পদ্ধতি

চিশতিয়া তরিকার ফায়েজ লাভের পদ্ধতি

682

চিশতিয়া তরিকার ফায়েজ লাভের পদ্ধতি

চিশতিয়া তরিকার দশ মোকাম এর মোরাকাবাঃ

১। কলবে-তওবার মোরাকাবার,
২। রুহতে-এনবাতের মোরাকাবা,
৩। ছেরে-জোহদের মোরাকাবা,
৪। খফিতে-অরার মোরাকাবা,
৫। আখফায়-শোকরের মোরাকাবা,
৬। নফছে-তাওয়াক্কুলের মোরাকাবা,
৭। আতশে-তছলিমের মোরাকাবা,
৮। বাদে-ছবরের মোরাকাবা,
৯। আবে-কানআতের মোরাকাবা,
১০। খাকে-রেদার মোরাকাবা।

কলবে তওবার মোরাকাবাঃ

নিয়তঃ আমি আমার কলবের দিকে মোতাওয়াজ্জেহ আছি।আমার কলব হযরত পির সাহেব কেবলার ওসিলা হয়ে আরশে মোয়াল্লার তরফ হতে মোতাওয়াজ্জেহ আছে। আরশে মোয়াল্লার তরফ হতে চিশতিয়া তরিকার নেসবত অনুসারে তওবার ফায়েজ আমার কলবে আসে।হযরত আদম (আঃ) এর যেইরুপ তওবা নছিব হয়েছিল আমার ও সেইরুপ তওবা নছিব হয়।

এই মোরাকাবায় নিম্নের আয়াতের মর্ম ও মতলবের দিকে খেয়াল করবেঃ-

“রাব্বানা জালামনা আনফুছানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তাঁর হামনা লানা কুনান্না মিনাল খাছেরিন”।

রুহতে এনাবতের মোরাকাবাঃ- উক্তরুপ নিয়ত করবে।

মোটকথা জোহদ, অরা, শোকর, তাওয়াক্কুল, তসলিম, সবর, কানাআত, রেদা ইত্যাদি বিষয়ে কাদেরিয়া তরিকার রীতি মোতাবেক করবে।

চিশতিয়া তরিকায় আয়াতের মোরাকাবাঃ আল্লাহ হাজেরি,আল্লাহ নাজেরি,আল্লাহ শাহেদি,আল্লাহ মায়ী।

নিয়তঃ আমি আমার কলবের তরফ মোতাওয়াজ্জেহ আছি।আমার কলব হযরত পির সাহেবের কলবের ওসিলা হয়ে আল্লাহ তা”য়ালার তরফ মোতাওয়াজ্জেহ আছে। আল্লাহ তা’য়ালার তরফ হতে চিশতিয়া তরিকার নেসবত অনুসারে আয়াতের মর্মের ফায়েজ আমার কলবে আসে। এই মোরাকাবায় আল্লাহ দেখতেছেন, আল্লাহ আমার বিষ্যয়ে দর্শন করতেছেন ও আল্লাহ আমার সঙ্গে আছেন, এইরুপ খেয়াল অন্তরে বসাইয়ে রাখবে। নিয়তে উক্ত মজমুন খেয়াল করবে।

হযরত পির সাহেব কেবলা বলেছেন যে, এই তরিকায় নিম্ন আয়াত সমূহের মোরাকাবা করলে বিশেষ ফায়েদা অর্জন হয়।

উচ্চারণঃ আল্লা ইন্নাহু বেকুল্লি শাইয়িম মুহিত।
অর্থঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’য়ালা যাবতীয় বস্তু বেষ্টনকারী।

পিরের কলবের সাথে সম্পর্ক স্থাপনঃ

চিশতিয়া তরিকার বুজুর্গগণ বলেছেন-নিজের পিরের গুণাবলির প্রতি খেয়াল করে মহব্বত ও স্নেহের সাথে তাঁর আকৃতির ধ্যান করে তাঁর সাথে নিজের অন্তর কে যুক্ত করতে হবে। এটা চিশতিয়া তরিকার একটা প্রধান স্তম্ভ। আমি বলি-এই দুনিয়ায়তে আল্লাহ পাকের প্রকাশের বহু জায়গা আছে। আবেদ অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন হউন বা তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন তাঁর সম্মুখ মর্যাদা মোতাবেক আল্লাহ তা’য়ালা উপাস্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই রহস্যের সমাধানের জন্যই শরিয়ত কেবলার দিকে মুখ করে নামাজ পড়ার জন্য ও আল্লাহ আরশে কায়েম হওয়ার কথা বলেছেন।

এই কারণে নবি মুস্তাফা সাল্লাল্লাহে আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন একজন কৃষ্ণ বর্ণের দাসি কে ইঙ্গিত করলেন। বলতো আল্লাহ কোথায় আছে? দাসি আকাশের দিকে ইঙ্গিত করল। আবার জিজ্ঞাসা করলেন?  বলতো আমি কে? দাস আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে ইঙ্গিত করে বলল আপনি আল্লাহর রাসুল। এ কথা শুনে নবি মুস্তাফা সাল্লাল্লাহে আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এই দাসি ঈমানদার বটে।

হে সালেক! আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো দিকে মুখ করা তুমার পক্ষে উচিত নয় এবং আল্লাহ ব্যতিত আর কারো সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা জায়েজ নয়। যদি তুমার মুখমন্ডল আরশের দিকে কর কিংবা তুমি আরশস্থিত নুরের ধ্যানে আকৃষ্ট হয়ে পড় তবুও তুমার কর্তব্য আল্লাহর দিকে মুখ রাখা।নবি মুস্তাফা সাল্লাল্লাহে আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপরোক্ত হাদিস দ্বারা ইশারা করেছেন।অতএব এটিও মোরাকাবা সদৃশ হবে।

অবশেষে গ্রহ্নকার বলেন- আলমে মেসালে আল্লাহ তা’য়ালার তাজাল্লি বিদ্যমান রয়েছে।প্রতি ব্যাক্তি নিজেই অনুভুতি শক্তি অনুযায়ি তা বুঝতে পারে।তাজাল্লি এবং আলমে মেসালের রহস্য আমার কিতাব “হুজাতুল্লাহিল বালেগার প্রথম খন্ডে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।

সংগ্রহ: ইলমে মারেফত (ফেইসবুক গ্রুপ)

আরো পড়ুন: চিশতিয়া তরিকার দরুদ শরীফ।