হোমপেজ মাওলা আলী (আঃ) প্রসঙ্গ ১৮ই জিলহজ্জ একটি পবিত্র ঈদ-এর দিন

১৮ই জিলহজ্জ একটি পবিত্র ঈদ-এর দিন

১৮ই জিলহজ্জ একটি পবিত্র ঈদ-এর দিন

আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতী বর্ণনা করেন যে, আল্লাহপাক রাসূলে করিম (সাঃ) এর স্থলাভিষিক্ত ঘোষণা সম্পর্কে আয়াত নাজিল করিলে সাইয়্যেদুল মুরসালীন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ১৮ই জিলহজ্জ তারিখে গাদীরে খুম নামক স্থানে হযরত আলী (কঃ)-কে মুসলমানদের মাওলা (শাসক, অভিভাবক) নির্ধারণের ঘোষণা করার পরক্ষণেই ইসলামের পূর্ণতা সম্পর্কে নিম্নোক্ত আয়াত নাজিল হয়–

اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الاسلام دينا ۔

অর্থাৎ “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন হিসাবে ইসলামকে” পরিপূর্ণ করে দিলাম ও তোমাদের জন্য আমার সমস্ত নেয়ামত পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসাবে মনোনীত করিলাম।” (সূরা মায়েদা, পারা ৬, আয়াত: ৩)

প্রকৃতপক্ষে ১৮ই জেলহজ্জ একটি পবিত্র দিন এবং গাদীরের ঘটনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই তারিখেই হযরত মুসা (আঃ) হযরত ইউশা (আঃ)-কে এবং হযরত সোলায়মান (আঃ) হযরত আসেফ বিন বলখিয়াকে নিজ নিজ স্থালাভিষিক্ত মনোনীত করেন এবং হযরত রাসূলে মকবুল (সাঃ)-ও ঐ একই তারিখে হযরত আলী (কঃ)-কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত মনোনীত করেন। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য আম্বিয়াগণও ঐ একই তারিখে তাঁদের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেন। (জামে আব্বাসী, খন্ড- ২, পৃঃ ৫৮ দিল্লি হতে ১৩৩২ হিঃ মুদ্রিত)

এই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিনটিকে হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব ঈদের দিন হিসাবে গণ্য করেন। হযরত ওমরকে ঐ দিনের ফজিলত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলেন, সমস্ত প্রসংশা সেই রাব্বুল আলামিনের যিনি ১৮ই জেলহজ্জ আমাদের জন্য পবিত্র ঈদের দিন করিয়াছেন। (তফসিরে দুররে মানসুর, খন্ড-২, পৃঃ ২৫৮ মিসরে মুদ্রিত)

প্রসিদ্ধ কবি আবু তামাম গাদীরের বিস্তারিত বিবরণ তাহার কাসিদায় বর্ণনা করিয়াছেন যাহা ইসলামী ইতিহাস সহ অন্যান্য গ্রন্থাদিতে লিপিবদ্ধ আছে।

তাই আজও গাদীরের উপরোক্ত ঈদ উৎসবের ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশেও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান রাসূল ও রাসূলের আহলে বাইতের প্রেমিকগণ এই ঈদ উৎসবটি পালন করে আসছেন কখনো পারিবারিক ভাবে, কখনো সামাজিক ভাবে। তারা এই ১৮ই জিলহজ্জ তারিখটিকে বেলায়েত দিবস নামে, ঈদে গাদীর নামে, মাওলার অভিষেক নামে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করেন।

গ্রন্থসূত্র: (ঐতিহাসিক আল-গাদীর, পৃষ্ঠা: ১২৭-১২৮)